Lung Cancer: বিশ্ব ফুসফুস ক্যান্সার সচেতনতা সপ্তাহে কী নতুন পরামর্শ দিলেন চিকিৎসকরা? 

ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে কে?
Lung_Cancer
Lung_Cancer

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

ফুসফুসের বাড়তি যত্ন জরুরি। শ্বাস নেওয়ার সময়েও নজর রাখতে হবে, কতখানি শুদ্ধ বাতাস ফুসফুস পেল! আর তা না হলে হয়তো ক্যান্সার বিজয়ীর তকমা পেতে হবে! কিন্তু বিজয়ী কি সকলে হতে পারবেন? বিশ্ব ফুসফুস ক্যান্সার (Lung Cancer) সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষে এই প্রশ্ন সকলের সামনে রাখল বিশেষজ্ঞ মহল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মতোই অগাস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে এই রোগ নিয়ে সচেতনতা কর্মসূচি করা হয়। চিকিৎসক মহল জানাচ্ছ, সচেতনতার ঘাটতি এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মূল চ্যালেঞ্জ!

ভারতে ফুসফুসের ক্যান্সারের (Lung Cancer) প্রকোপ কতখানি? 

ভারতে বাড়ছে ফুসফুসে ক্যান্সার (Lung Cancer) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর ৭০ হাজারের বেশি মানুষ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। ভারতে প্রথম যে চারটি ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে, তার মধ্যে একটি ফুসফুসের ক্যান্সার। তিরিশ থেকে ষাট বছরের মধ্যে এই ক্যান্সারের প্রকোপ বেশি। পুরুষদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার বেশি দেখা যাচ্ছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে মোট মৃত্যুর ৯ শতাংশের কারণ ফুসফুসের ক্যান্সার।

কোন উপসর্গ জানান দেয় এই রোগের (Lung Cancer)? 

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে আক্রান্তের রোগ (Lung Cancer) নির্ণয়ে অনেক দেরি হয়ে যায়। উপসর্গ জানান দিলেও, শরীরকে অবহেলা এবং সচেতনতার অভাব এই রোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে রোগী সময়মতো চিকিৎসা করানোর সুযোগ পেলে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। কিন্তু ভারতে ফুসফুসের ক্যান্সারের চিকিৎসা এতটাই দেরিতে শুরু হয় যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ৫ থেকে ৭ শতাংশ থাকে। 
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বারবার জ্বর হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা করা উচিত নয়। খুসখুসে কাশি ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম উপসর্গ। অনেকেই কাশি অবহেলা করেন। এমনকী কাশি হলে শুধু আবহাওয়ার পরিবর্তন বলে অবহেলা করেন। ফলে, পরবর্তীতে বিপদ বাড়ে। তাছাড়া অনেক সময়ই কাশি থেকে রক্তপাত হয়, যা ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম উপসর্গ বলে জানাচ্ছে চিকিৎসকদের একাংশ।

ফুসফুসের ক্যান্সারের (Lung Cancer) ঝুঁকি বাড়ানোর নেপথ্যে কে? 

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে তামাক! সিগারেট কিংবা বিড়ির মতো তামাকজাত দ্রব্যের অভ্যাস বিপজ্জনক। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপানের জেরে একাধিক ঝুঁকি বাড়ে। যেমন, মুখ ও গলার ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগের ঝুঁকি কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে ধূমপান। তবে, এই সব ক্ষেত্রে যিনি ধূমপান করছেন, তাঁর ঝুঁকি বাড়ছে। কিন্তু ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও গুরুতর। শুধু যিনি ধূমপান করছেন, তাঁর ফুসফুসের ক্যান্সারের (Lung Cancer) ঝুঁকি বাড়ছে না, ধূমপান যাঁদের সামনে করা হচ্ছে, তাঁদের ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। কারণ, ধূমপান প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয়কেই সমান প্রভাব ফেলছে। এমনকী গর্ভবতী মহিলার সামনে ধূমপান করলে, গর্ভস্থ শিশুর ফুসফুসের রোগের ঝুঁকিও ৬০ শতাংশ বেড়ে যায় বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভারতে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্তদের একটা বড় অংশ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। অর্থাৎ তাঁরা নিজেরা তামাকজাত দ্রব্য সরাসরি সেবন করেন না। কিন্তু তাঁদের পরিবারের কেউ ধূমপান করেন। আর সেই ধোঁয়ার জেরে ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়েছে। 
তবে, তামাক ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ানোর নেপথ্যে প্রধান কাণ্ডারি হলেও বায়ুদূষণকেও বাদ দিতে চাইছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, যে হারে দূষণ বাড়ছে, তা মানুষের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করছে। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইডের মতো উপাদান বাড়লে শুদ্ধ বাতাসের ঘাটতি হয়। যা ফুসফুসের জন্য একেবারেই ভালো নয়। তাই বায়ু দূষণ বাড়লে ফুসফুসের সমস্যা বাড়তে পারে।

ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে কী পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল? 

চিকিৎসকদের পরামর্শ, ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ধূমপান সম্পূর্ণ বর্জন করতে হবে। কোনও ভাবেই তামাকজাত দ্রব্য সেবন করা চলবে না। এতে নিজের পাশপাশি পরিবারের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এই সচেতনতা জরুরি। প্রয়োজনে নানান কাউন্সেলিংয়ের সাহায্য নিয়ে এই অভ্যাস বর্জন করতে হবে। তার পাশপাশি নিয়মিত যোগাভ্যাসের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ, এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। এছাড়াও দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়ে।

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles