Egra: এগরায় পুকুর থেকে উদ্ধার ১৫ বস্তা বাজি ও বিস্ফোরক! কে ফেলে দিয়ে গেল? 

এত বিস্ফোরক মজুত করা হচ্ছে কি পঞ্চায়েত ভোটের জন্য?
Egra_(1)
Egra_(1)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সারা রাজ্য কি বারুদ আর বোমার স্তূপে পরিণত হল? এগরার খাদিকুলের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর যে হারে বিভিন্ন জায়গায় বোমা ও বাজির মশলা উদ্ধার হচ্ছে, তাতে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন মহল থেকে এই প্রশ্নটা ভেসে আসছে। আরও প্রশ্ন উঠছে, এতদিন পুলিশ কি ঘুমিয়ে ছিল? এগরার (Egra) ঘটনায় তো পুলিশের বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে, তারা মোটা টাকার বিনিময়ে জেনেবুঝেও এই ধরনের কাজে কোনও বাধা দেয়নি। পুলিশ ঘটনার পর গ্রামে গেলে তাদের ঘিরে ধরে গ্রামবাসীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছিল। আরও মজার বিষয় হল, পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের তোলা অভিযোগ যে মিথ্যা নয়, তা এগরা থানার আই সি-কে সরিয়ে দেওয়ার মতো পদক্ষেপেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। 

পুকুর থেকে উদ্ধার বাজি-বারুদ

এগরার বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর কেটে গেছে এক সপ্তাহ। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ সহ ১২ জনের। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরলেও এখনও এলাকার পুকুর থেকে উদ্ধার হচ্ছে বস্তার পর বস্তা নিষিদ্ধ বাজি এবং বাজি তৈরির সামগ্রী। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ২নং ব্লকের (Egra) দেশবন্ধু অঞ্চলে সাহাড়দা গ্রামে রবিবার রাতে একটি পুকুর থেকে ৮ বস্তা বারুদ ও নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। তারপর সোমবার সকালেও ফের পুকুর থেকেই আরও ৭ বস্তা বাজি-বারুদ উদ্ধার হয়েছে। ১৫ বস্তা বারুদ ও বাজি জমা দেওয়া হয়েছে থানায়। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছে পুলিশ। পুরো এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

কী বলছেন গ্রামের মানুষ? কী বলছেন উপপ্রধান?

এখানকারই বাসিন্দা অশোক কুমার মাইতি বললেন, কচুরিপানার ভিতর থেকে বারুদ, বোমা এবং বাজি বানানোর নানা সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষ ঘিরে রেখে প্রথমে পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম। তারা এসে এগুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। কীভাবে এল এসব? অশোকবাবুর মতে, কাছেই রুকনিপুরে আতশবাজির কারখানা আছে। এগরার ঘটনার পরই সেখানকার লোকজন এখানে এসে এসব ফেলে দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের শান্ত গ্রামকে তারা অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়েই এসব করছে। এতে তৃণমূলের মদত আছে বলেই তিনি মনে করেন। ওই গ্রামে এর আগেও বাজি বিস্ফোরণে অনেকে মারা গিয়েছিল। অন্যদিকে, দেশবন্ধু গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আলোক মহাপাত্র বলেন, এটা চক্রান্ত ছাড়া কিছু নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করারই চেষ্টা। না হলে কেউ মাঠে-ঘাটে এভাবে ওসব ফেলে রেখে যায়? তিনি সরাসরিই বলে দেন, এটা বিজেপি করেছে। না হলে বিজেপির লোকজন ওখানে সকাল সকাল পৌঁছে যায় কী করে?

পঞ্চায়েত ভোটেরই অশনি সঙ্কেত?

তৃণমূলের উপপ্রধান যাই বলুন, অভিজ্ঞ মহল বলছে, এ যেন পঞ্চায়েত ভোটেরই অশনি সঙ্কেত। রাজ্যে যে সব জায়গা ঝামেলা-গণ্ডগোলে সবসময়ই খবরের শিরোনামে থাকে, সেই ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, মালদা ভোটের আগেই খবরের শিরোনামে। বিরোধীরা বলছে, এখন যে সব বোমা ফাটছে (Egra), বোমার মশলা উদ্ধার হচ্ছে, সে সবই আসলে মজুত করে রাখা 'সম্পদ'। ভোটে এসবের সদ্ব্যবহারের কথা থাকলেও পঞ্চায়েত ভোট পিছিয়ে যাওয়াটাই কাল হয়েছে। বিরোধীদের টাইট দেওয়ার জন্য তিল তিল করে জমানো এই সম্পদ নিয়ে বেকায়দায় পড়ে গিয়েছে অনেকেই। এদের 'যত্ন-আত্তি' করে রাখতে গিয়েই ঘটে যাচ্ছে একের পর এক বিপত্তি। কোথাও ছাদে বোমার গায়ে রোদের তাপ লাগাতে গিয়ে তাতে বিস্ফোরণ ঘটছে, কোথাও তৈরির সময়ই প্রচণ্ড গরমের তাপে তাতে বিস্ফোরণ ঘটছে। আবার এগরার (Egra) ঘটনায় দেখা গেল, বিপদ আঁচ করে কেউ বা কারা বস্তা বস্তা বাজি, মশলা, বিস্ফোরক পুকুরে ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছে। যে সব জায়গায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, সেখানে তো গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূল। এখন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায় সিভিক পুলিশ। তাহলে এদের কেউই জানতে পারল না? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য। এমন প্রশ্নও উঠছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles