Nadia: কৃষ্ণনগরে তরুণীকে ধর্ষণ করে খুন! সিবিআই তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে নির্যাতিতার মা

CBI: কৃষ্ণনগরে তরুণীর অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে...
Nadia_(5)
Nadia_(5)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরজি করকাণ্ডের আবহে নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণনগরে পুজো মণ্ডপের কাছে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে। তাই, রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না কৃষ্ণনগরের 'নির্যাতিতা' তরুণীর মা। তিনি চান সিবিআই মেয়ের মৃত্যুর তদন্ত করুক। আর্জি জানাতে বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। 

ঠিক কী ঘটেছিল? (Nadia)

বুধবার সকালে কৃষ্ণনগরে (Nadia) এক তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়েরাই দেহটি রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরিবারের অভিযোগ, দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। আঙুল ওঠে তরুণীর প্রেমিকের দিকে। প্রাথমিক তদন্তে নেমে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মেয়েটির সঙ্গে বেশ কয়েক মাস ধরে সম্পর্ক ছিল অভিযুক্ত যুবকের। ওই যুবক ভিনরাজ্যে একটি হোটেলে কর্মরত ছিলেন। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের বিয়ে হবে বলেও স্থির হয়। ওই যুবকের বাড়িতে মাঝে মধ্যেই যেতেন ওই তরুণী। তার পরেও এমন ঘটনা কেন, সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। প্রায় ২৪ ঘণ্টা কাটলেও কৃষ্ণনগরে তরুণীর দগ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনায় অনেক ধোঁয়াশাই কাটছে না।

আরও পড়ুন: হাসিনার পরিবারের সঙ্গে যুক্ত আটটি জাতীয় দিবস বাতিল হচ্ছে বাংলাদেশে

ময়না তদন্তের রিপোর্ট কী বলছে?

পরিবারের দাবি মেনে বৃহস্পতিবার কল্যাণীর (Nadia) জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে 'নির্যাতিতার' দেহের ময়নাতদন্ত হয়। যদিও, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এটাও মনে করছেন, অ্যাসিডে নয়, তরুণীকে জীবন্ত পুড়িয়ে খুন করা হতে পারে। কিছু নমুনা পরীক্ষার জন্য় বাইরে পাঠানো হচ্ছে। 

পুলিশে আস্থা নেই, সিবিআই তদন্তের দাবি

তার আগে মৃতার মা বলেন, ‘‘বুধবার সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত যে ঘটনাপ্রবাহ দেখেছি, তার পরে আর পুলিশের ওপরে আস্থা রাখতে পারছি না। পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু এটা এক জনের কাজ হতে পারে না। বাকিদের ব্যাপারে পুলিশের কোন উৎসাহ নেই কেন?’’ তাঁর অভিযোগ, ’’পুলিশ একাধিক কাগজে সই করার জন্য চাপ দিয়েছে। এমনকী কাগজ না পড়িয়েই সই করানোর চেষ্টা করে। তাই, পুলিশের ওপর আমাদের আস্থা নেই। নিরপেক্ষ তদন্ত এবং যথোপযুক্ত সাজার জন্য মেয়ের খুনের তদন্ত করুক সিবিআই (CBI)। আইনজীবীর মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানাব। প্রয়োজনে বাড়ি বিক্রি করে এই লড়াই চালাব।’’

পুলিশ প্রশাসনের কী বক্তব্য?

কৃষ্ণনগরের (Nadia) তরুণীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় এদিন দুপুরে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান এডিজি সিআইডি সোমা দাস এবং সুপ্রতিম সরকার এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ)। পাশাপাশি সঙ্গে ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার কে অমরনাথ এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিত কুমার সহ জেলার অন্যান্য আধিকারিকরা। কৃষ্ণনগরকাণ্ডে সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) গঠন করেছে রাজ্য পুলিশ। ওই ঘটনার তদন্তে সিআইডি (রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগ)-র সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার জানালেন এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। তিনি বলেন, কৃষ্ণগর জেলা পুলিশ সর্বস্তরে মৃত যুবতীর পরিবারের সঙ্গে রয়েছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে। অভিযুক্ত রাহুল বোসকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছি এবং অনেক জিজ্ঞাসাবাদ বাকি রয়েছে। সেই কারণে আমরা অভিযুক্তকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হবে। পাশাপাশি, যুবতীর পরিবারের যে দাবি ছিল সেই অনুযায়ী ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার কাজ চলছে।

হত্যার নেপথ্যে কী কারণ?

ইতিমধ্যেই পুলিশ তদন্ত নেমে বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক লোকেশন ট্র্যাক করে খুনের কিনারা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সূত্রের খবর, ঘটনার একদিন আগে একটি বাইকের শোরুমে যায় অভিযুক্ত ও নির্যাতিতা। নির্যাতিতা বাইক কেনার কিছু টাকা বাড়ি থেকে জোগাড় করে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কথা রাখতে না পারা নিয়ে তীব্র গোলমাল হয় বলে দু'জনের মধ্যে।

অন্য একটি সূত্রের খবর, ওই তরুণী তাঁর প্রেমিকের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। তরুণীর প্রেমিক হোটেলে কাজ পেয়ে বেঙ্গালুরুতে চলে যান। বাড়িতে না জানিয়ে দিন পনেরোর জন্য তরুণী প্রেমিকের কাছেও চলে গিয়েছিলেন। সে সময়ে তাঁর পরিবারের তরফে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।

সম্পর্কে টানাপোড়েন নাকি টাকা পয়সা নিয়ে বিবাদের জেরে খুন, সবদিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles