Shalini Chouhan: ছাত্রী সেজে কলেজ- র‍্যাগিং- এর পর্দাফাঁস মহিলা পুলিশ অফিসারের

শালিনীর বাবাও পুলিশে চাকরি করতেন। ২০১০ সালে তিনি মারা যান।
Shalini_Chouhan
Shalini_Chouhan

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ছদ্মবেশে বাজিমাত। ডাক্তারি পড়ুয়া সেজে র‍্যাগিং রহস্যের সমাধান। এমনই ঘটনা ঘটেছে ইন্দোরের এমজিএম মেডিক্যাল কলেজে। তিন মাস ছাত্রী সেজে মেডিক্যাল কলেজের যত্রতত্র ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। নাম শালিনী চৌহান (Shalini Chouhan)। বয়স ২৪ বছর। তাঁর ছাত্রীসুলভ চেহারায় কারোর বিন্দুমাত্রও সন্দেহ হয়নি। মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিন থেকে ক্লাসরুম, তাঁর যাতায়াত ছিল সর্বত্র। পরনে জিন্‌স, টপ। চালচলনেও আধুনিক ছোঁয়া। যেচেই কথা বলতেন কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গে আড্ডা জমে উঠত মুহূর্তেই। কাঁধে থাকত ঝোলা ব্যাগ। তাতে থাকত ঠাসা বই।

কেউ ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি এই তরুণী (Shalini Chouhan) আদতে ওই কলেজের কেউ নন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের সঙ্গে তাঁর দূর-দূরান্তেও কোনও যোগাযোগ নেই। সংযোগিতাগঞ্জ থানায় কর্মরত শালিনীকে সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি মামলার রহস্য সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন তাঁর সিনিয়ররা। বাণিজ্যের ছাত্রী শালিনী। সদ্য পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। চাকরি পাওয়ার পরেই তাঁর কাঁধে এই গুরু দায়িত্ব এসে পড়ে। এমজিএম কলেজে র‌্যাগিংয়ের ঘটনার তদন্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন থানার অফিসার ইন চার্জ তেহজ়িব কাজ়ি এবং সত্যজিৎ চৌহান। তাঁদের মনে হয় এই কাজের জন্যে শালিনীই উপযুক্ত পছন্দ। তাঁর চেহারা, বয়স সবটাই ছাত্রী হিসেবে মানিয়ে যায়। কারোর সন্দেহও হবে না। তাঁরাই শালিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন,  সবসময় পাশে থেকেছেন। কোন কোন ছাত্রের উপর নজর রাখতে হবে, শালিনীকে তা বুঝিয়েও দিয়েছেন।

এমজিএম মেডিক্যাল কলেজে গত জুলাই মাসে এমবিবিএস-এর প্রথম বর্ষের একদল ছাত্র র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ দায়ের করেন। প্রমাণের অভাবে কারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত, পুলিশ তা শনাক্ত করতে পারছিল না। এরপরেই নেওয়া হয় এই অভিনব পন্থা। সংযোগিতাগঞ্জ থানার অফিসার ইন চার্জ বলেন, "মামলাটি বন্ধ করে দিতে হয় প্রমাণের অভাবে। আমাদের কাছে কোনও সূত্র, কোনও তথ্য ছিল না। তাই আমরা একটু অন্য ভাবে এই রহস্যের সমাধান করতে উদ্যোগী (Shalini Chouhan) হয়েছিলাম।"

কী করে হল রহস্যের সমাধান? 

শালিনী (Shalini Chouhan) ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে গল্প জমিয়ে তদন্ত চালিয়ে যেতেন। সুকৌশলে জেনে নিতেন প্রয়োজনীয়। তিনি যে গোয়েন্দা হতে পারেন, কারোর মনে সেকথা একবারও আসেনি। শালিনী জানিয়েছেন, এই কাজে তাঁকে প্রায়ই নানা মিথ্যা কথা বলতে হয়েছে। উপস্থিত বুদ্ধির জোরে নিজের পরিচয় লুকোতে সফল হয়েছেন শালিনী। কাজটা যে মোটেই সহজ ছিল না তাও জানিয়েছেন তিনি।

শালিনীর বাবাও পুলিশে চাকরি করতেন। ২০১০ সালে তিনি মারা যান। তার এক বছরের মধ্যে মাকেও হারান শালিনী (Shalini Chouhan)। তারপর থেকেই পুলিশে চাকরি করার স্বপ্ন দেখতেন। শালিনীর সঙ্গে ছদ্মবেশে ছিলেন আরও কিছু পুলিশ। 

আরও পড়ুন: চিনকে যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনা, বললেন রাজনাথ

কলেজের মোট ১১ জন ছাত্রকে চিহ্নিত করেছেন শালিনী (Shalini Chouhan)। তিনি বলেন, ‘‘আমি বসে বসে শুধু এই ১১জনকে দেখতাম। ওঁদের আচরণ ঔদ্ধত্যপূর্ণ। নিজেদের মধ্যে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে তাঁরা র‌্যাগিং করতেন।’’

এই উচ্চবর্ষের পড়ুয়ারা জুনিয়রদের দিয়ে নানা রকম আপত্তিকর কাজ করিয়ে নিতেন বলে অভিযোগ ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ছদ্মবেশে অপরাধীদের শনাক্ত করতে না নামলে এই মামলার কোনও সুরাহা করা যেত না।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles