মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মামাবাড়িতে কাটানো সেই আনন্দের গল্প আর বন্ধুদের বলা হল না ছোট্ট স্নেহার। সোমবার সকালে বাবা-মায়ের হাত ধরে আনন্দে গদগদ হয়ে বাড়ি ফিরছিল স্নেহা। অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে (Train Accident) সে চেপেছিল সে। তারপর সব শেষ। মালদার ছ'বছরের স্নেহা মণ্ডলের নিথর দেহ এখন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের মর্গে শুয়ে রয়েছে।
স্নেহার বাবা-মা ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে (Train Accident)
সোমবার রাঙাপানি এলাকায় মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার (Train Accident) অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার যাত্রী ছিল স্নেহা। বাবা- মা'র সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল সে। কয়েকদিন আগে শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় মামাবাড়ি এসেছিল। সোমবার বাড়ি ফিরছিল। ট্রেন দুর্ঘটনায় স্নেহার বাবা মণিলাল মণ্ডল ও ছবি মণ্ডলও জখম হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্নেহা সঙ্কটজনক অবস্থায় পিকু ওয়ার্ডে ভেন্টিলেশনে ছিল। পাশাপাশি সোমবার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর মোট ৩৭ জন ভর্তি হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তার মধ্যে একজনের মৃত্যু হয় ট্রমা কেয়ার ইউনিটে। আর আশঙ্কাজনক ছিল ছ'বছরের ওই স্নেহা। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম ছিল তার। সোমবার থেকে তার শারীরিক পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে চলছিল শিশু রোগ বিশেষজ্ঞদের একটি দল। তবে, শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি তাকে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক সন্দীপ সেন বলেন, "পায়ে আঘাত থাকার পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কালকে থেকেই মেডিক্যাল টিম অস্ত্রোপচার করে বাচ্চাটির রক্তক্ষরণ বন্ধের চেষ্টা করে। পিকুতে ভর্তি ছিল। আজ সকালে তাকে হারিয়েছি আমরা।"
আরও পড়ুন: "সুরক্ষা কবচ কোনও মাদুলি নয়", রেল দুর্ঘটনায় মন্তব্য নিয়ে মমতাকে তুলোধনা সুকান্তর
মেয়েকে হারিয়ে মুষড়ে পড়েছেন বাবা
এদিন সকালে মৃত্যুর খবর শোনার পর চোখের জল মুছে চলেছেন বাবা মণিলাল মণ্ডল। সামনে কেউ গেলে বলছেন, আমরা এখন কাকে নিয়ে বাঁচব? কারও কাছে এর উত্তর নেই। তিনি বলেন, শিলিগুড়ির মাটিগাড়া আমার শ্বশুরবাড়ি। ক'টাদিন সেখানে স্নেহা কত আনন্দই না করেছে। সোমবার বাড়ি ফিরছিলাম। আর ওকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারব না।
হাসপাতালে পরিজনদের ভিড়়
এদিকে এদিন সকালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জখম যাত্রীর পরিজনরা একে একে আসতে শুরু করেন। কেউ প্রিয়জনকে জখম অবস্থায় বেডে শুয়ে থাকতে দেখে ডুকরে কেঁদে উঠছেন। কেউ বা মরদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য মর্গের সামনে অপেক্ষা করছেন। তাদের চোখে জল নেই। নির্বাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছেন। সকলেরই প্রশ্ন, কীভাবে এই সর্বনাশ হল?
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours