মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি বাংলায়। একের পর পর শাসক দলের নেতা মন্ত্রীরা ধরা পড়েছে তদন্তকারী সংস্থার হাতে। সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষ। গ্রেফতার করার পর তাঁকে জেরা করতেই উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এবার এই যুব নেতাকে জেরা করে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেল ইডি, যা শুনে তদন্তকারীদের চক্ষু চড়কগাছ। চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে নিয়োগ কর্তাদের যোগাযোগ রাখতে রীতিমত এজেন্ট নিয়োগ করেছিলেন কুন্তল। তাঁরাই টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টি দেখভাল করত। এছাড়াও জানা গিয়েছে, এবার আরও একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের হদিশ পাওয়া গিয়েছে মধুপুরে। অভিযোগ, এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হতে গেলে খরচ করতে হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য ইডির।
বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি কুন্তলের
ইডি সূত্রে খবর, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রে এতদিন মিডিলম্যান, এবং সুপারিশকারী, মূলত ২টি শ্রেণির মাধ্যমেই ব্যাপকহারে দুর্নীতি হত বলে তথ্য প্রমাণ ছিল ইডির হাতে। এজেন্টদের ব্যাপারে তেমন কোনও প্রমাণ ছিল না ইডির কাছে। তবে এবার কুন্তলের বয়ানে এজেন্টদের বিষয়টিও জলের মত পরিষ্কার হয়ে গেল তদন্তকারী সংস্থার কাছে। সূত্রের খবর, জেরায় কুন্তল জানিয়েছেন, চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় একার পক্ষে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হচ্ছিল না তাঁর। ফলে বিভিন্ন পদে চাকরির জন্য আলাদা আলাদা এজেন্ট নিয়োগ করেছিলেন তিনি। চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন তাঁরাই। টাকা পয়সা লেনদেনের বিষয়টিও দেখত তাঁরা।
এখানেই শেষ নয়, কুন্তলের আরও দাবি, কোন প্রার্থী কবে কোথায় হাজিরা দেবে, কার কাছে নথিপত্র জমা করবে, কোন নথি সংগ্রহ করবে, এই সমস্ত বিষয়টি দেখতেন এই এজেন্টরাই। তাঁরাই নিয়ত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এরপর এজেন্টদের থেকে টাকা বুঝে নিতেন কুন্তল নিজে। আর এসব কথা জানার পরেই এখন কুন্তল ও তাপস মণ্ডলের কাছ থেকে এজেন্টদের তালিকা তৈরি শুরু করেছেন ইডির গোয়েন্দারা। প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: সনাতন ধর্মই ভারতের রাষ্ট্রীয় ধর্ম, সাফ জানালেন যোগী আদিত্যনাথ
শিক্ষক প্রশিক্ষণের নামে টাকা তোলার অভিযোগ কুন্তলের বিরুদ্ধে
এর আগে হুগলি ধনিয়াখালির ভান্ডারহাটিতে কুন্তলের একটি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের খোঁজ মেলে বলে অভিযোগ ওঠে। ধনিয়াখালির পর এবার মধুপুর এলাকা। মধুপুরও ধনিয়াখালি থানার অন্তর্গত। অভিযোগ, ২০১৬ সালের আগে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিতেন বহু ছাত্র ছাত্রী। যদিও ২০১৬ সালের পর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংস্কারের কাজ হবে বলে তা বন্ধ রাখা হয়। অভিযোগ, এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হতে গেলে খরচ করতে হত লক্ষ লক্ষ টাকা। এতদিন কুন্তল ঘোষের নামে চাকরি বিক্রির অভিযোগ ছিল। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল প্রশিক্ষণ দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ। এইসব বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই সব অভিযোগই খতিয়ে দেখছে ইডির আধিকারিকরা।
+ There are no comments
Add yours