মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জেলে বসেই দল চালাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল, এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বীরভূম তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ। এতদিন এই একই অভিযোগ করছিল বিরোধী দলের নেতারাও। কিন্তু এবারে শাসকদলের নেতার গলাতেই অনুব্রতের বিরুদ্ধে সুর চড়তে দেখা গেল। রবিবার নানুরের উচকরণ গ্রাম পঞ্চায়েতের বন্দর বাসস্ট্যান্ডে দলের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে প্রকাশ্যেই দাবি করলেন, নেত্রীর কথা শোনা হচ্ছে না। জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলের পরামর্শেই দল চালাচ্ছেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী। ইতিমধ্যেই এই দাবিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
কাজল শেখের বিস্ফোরক দাবি
গতকাল বীরভূম তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ দাবি করেন, “বিকাশদার সঙ্গে কেষ্টদার ফোনে কথা হচ্ছে সেই কারণেই উনি বলছেন কেষ্টদার কথামত চলছেন। হয়ত বিকাশদার সঙ্গে কেষ্টদার জেল থেকে ফোনে কথাবার্তা হচ্ছে। বিকাশের ফোন পরীক্ষা করলেই বোঝা যাবে কথা হচ্ছে কী না। কালকে যারা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের জিজ্ঞেস করে নিন বিকাশদা এটা বলেছেন কী না। আমি সত্য কথা বলি, সত্য পথে চলি।”
আরও পড়ুন: বাংলাকে খণ্ডিত হতে দেব না! দুর্নীতি থেকে নজর সরাতে অপপ্রচার তৃণমূলের, দাবি সুকান্তর
প্রসঙ্গত, শনিবারই বোলপুরের তৃণমূল কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান কাজল শেখ। জানা গিয়েছিল যে, কোর কমিটির বৈঠক না হওয়ায় ও দলে সম্মান না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন। তবে রবিবার তিনি জানান, বিষয়টা তেমন নয়। ব্যক্তিগত কাজেই তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ওই বৈঠকেই বিকাশ রায়চৌধুরী দাবি করেছেন যে অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশেই দল চলছে। এর প্রমাণ পেতে তিনি বিকাশের ফোন পরীক্ষা করার কথাও বলেন। বৈঠক চলাকালীন তিনি পিছনের দিকে বসে ছিলেন। কেন সামনে দিকে বসেননি জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “সামনে বসা আমার লক্ষ্য নয়, আমার লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্ন সফল করা। চাইলে আমি অনেক আগে এমএলএ-এমপি হতে পারতাম। কিন্তু ও সব আমার লক্ষ্য নয়।”
উল্লেখ্য, গরু পাচারকাণ্ডে প্রায় পাঁচ মাস জেলবন্দি বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এই অবস্থায় বীরভূমে পার্টি কে চালাবেন, তা নিয়ে সংশয় থাকলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বীরভূম সফরে এসে জেলায় সাতজনের কোর কমিটিও করে দিয়েছিলেন। প্রথম থেকে অনুব্রত বিরোধী হিসেবে পরিচিত নানুরে তৃণমূল নেতা কাজল শেখকেও এই কমিটিতে জায়গা দেন মমতা। প্রত্যেক সপ্তাহে কোর কমিটির সদস্যদের দলনেত্রী বৈঠক করার নির্দেশ দিলেও এখনও একটিও মিটিং হয়নি। গতকাল সেই নিয়েই উষ্মা প্রকাশ করেন কাজল শেখ। আর সেই প্রসঙ্গেই ক্ষোভ উগরে তিনি এমন দাবি করেন।
+ There are no comments
Add yours