মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ ঘরের ভিতর স্ত্রী সন্তানসহ একই পরিবারের চারজনের মৃতদেহ (Dead) উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। রবিবার সাতসকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের কুড়ুরিয়াডাঙা এলাকায়। স্বামী, স্ত্রীসহ দুই সন্তানের মৃত্যুর (Dead) ঘটনায় রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দুর্গাপুর থানার পুলিশ। ঘটনার সিবিআই (CBI) তদন্তের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পুলিশকে মৃতদেহ (Dead) উদ্ধার করতে বাধা দেন মৃতের অত্মীয়রা। তাঁদের বক্তব্য, মৃত্যুর আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁদের মৃত্যুর জন্য কারা দায়ী তা উল্লেখ করেছেন। সকলকে গ্রেপ্তার করতে হবে। তাঁদের দাবি, দুই সন্তান সহ স্বামী ও স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে। যদিও ঘটনার তদন্তে ঘটনাস্থলে ফরেনসিক টিম আসে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম অমিত মণ্ডল (৪২)। তিনি পেশায় জমি ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর স্ত্রী রূপা মণ্ডল (৩৪)। তাঁদের পুত্র মিমিত মণ্ডল(১০) ও শিশুকণ্যা নিকিতা মণ্ডল (২)। তাঁদের বাড়ি দুর্গাপুর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কুড়ুরিয়াডাঙায়। কী করে জানাজানি হল বিষয়টি? পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন পারিবারিক হোয়াট'স অ্যাপ গ্রুপে সুইসাইড নোট দেখে মৃত অমিত মণ্ডলের শ্বশুর বাড়ির লোকজন ছুটে আসেন। বাড়ির ভিতরে দেখা যায়, ঘরের ভেতর নীচে পড়ে রয়েছে ১০ বছরের মিমিত মণ্ডলের নিথর দেহ। বিছানায় শিশুকণ্যার সঙ্গে পড়ে রয়েছে মা রূপা মণ্ডলের দেহ। সিলিংয়ে হাতবাঁধা অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ (Dead) উদ্ধার হয় অমিতের। বিষয়টি জানাজানি হতেই আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আসানসোল দুর্গাপর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) কুমার গৌতম বলেন, ফরেনসিক টিম নমুনা সংগ্রহ করেছে। দুজনকে আটক করা হয়েছে। সমস্ত ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সুইসাইড নোটে কী লেখা রয়েছে? Dead
অমিতের বাবা নরেশ মণ্ডল একসময় প্রভাবশালী প্রোমোটার ছিলেন। শিল্পশহর লাগোয়া জমির কেনাবেচা করতেন তিনি। বছর ছয়েক আগে কিডনির অসুস্থতায় মৃত্যু হয় তাঁর। বাবা বেঁচে থাকতে তাঁর সঙ্গে জমি কেনাবেচায় হাতপাকান অমিত। ফলে, ফুলেফেঁপে ওঠে তাঁদের সম্পত্তি। ওই জমি ব্যবসা থেকে কয়েক'শো কোটি টাকার সম্পত্তি তৈরি করেন। কুড়ুরিয়াডাঙায় বিলাসবহুল তাঁদের বাড়ি রয়েছে। সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, তাঁদের মৃত্যুর (Dead) পিছনে হাত রয়েছে তাঁর বড় মামার ছোটো ছেলে সুশান্ত নায়েক ওরফে নান্টু। সে মাস্টার মাইন্ড। এছাড়াও মামার বাড়ির অনেকে জড়িত রয়েছে। সুশান্ত নায়েক অন্ডালের সিঁদুলি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করে। এছাড়া মা বুলা রানি মণ্ডলের নাম রয়েছে। মা বাপের বাড়ির সকলকে ভালোবাসে। আমার ছেলেমেয়েদের দেখতে পারে না। আমাকে পছন্দ করে না। ছোটো মামার মেয়ে মিলি নায়েক ঘোষের নামও উল্লেখ রয়েছে। তিনি পান্ডবেশ্বরে বৈদ্যনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। বড় মামার সেজো ছেলের বৌ শিলা নায়েক মণ্ডলের নাম রয়েছে। তিনি আমরাই প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ২০১২ সালে পরীক্ষা, ইন্টারভিউ না দিয়ে তাঁরা সকলে চাকরি পেয়েছেন। সুশান্ত নায়েক সিপিএম, কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস সমস্ত দলই করেছেন। ওরাই আমাদের পরিবারকে শেষ করে দিল। প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের যোগ রয়েছে তিনি উল্লেখ করেছেন। সুইসাইড নোটটি সিবিআই(CBI), ইডি (ED), রাজ্য পুলিশ এবং বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়কে তিনি ট্যাগ করেন।
কী বললেন মৃতের আত্মীয়? Dead
মৃতা রূপা মণ্ডলের মাসতুতো বোন সুদীপ্তা ঘোষ বলেন," গতকাল রাতে জামাইবাবু বলল মা এসেছে বাড়িতে। আবারও অশান্তি হবে।" তিনি আরও বলেন," সম্পত্তির বিবাদ। জামাইবাবুর মা বুলা রানি জামাইবাবু, দিদি ভাগ্নে, ভাগ্নিকে সহ্য করতে পারে না। সমস্ত সম্পত্তি জামাইবাবুর মামার ছেলেদের তিনি দিয়ে দিতে চান। তাই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে। আমাদের অনুমান পরিকল্পিত খুন। কারণ, বাড়ির সিসিটিভি উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতে স্ট্রিট লাইট বন্ধ রাখা ছিল। আমাদের দাবি, বুলা রানি, সুশান্ত, প্রশান্ত সহ জামাইবাবুর মামার বাড়ির সকলকে গ্রেপ্তার করতে হবে। ঘটনার সিবিআই (CBI) তদন্ত করা হোক।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours