মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সংস্কারের কাজ করতে গিয়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ব্রিজ। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকে। ব্রিজ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল এক শ্রমিকের। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সেখ শাহ আলম। বাড়ি তমলুক (Tamluk) পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এই ঘটনায় আরও এক শ্রমিক গুরুতর জখম হয়েছেন। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনার খবর পেয়ে কয়েকশো মানুষ এলাকায় ভিড় করেন।
ঠিক কী ঘটেছিল?
তমলুক (Tamluk) পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের গঙ্গার ঘাট এলাকায় বহু পুরনো ব্রিজ রয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে তা বেহাল হয়ে পড়েছিল। পথশ্রী প্রকল্পে সেই ব্রিজ ভেঙে নতুন ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা নেয় তমলুক (Tamluk) পুরসভা। এক সপ্তাহ আগে পুরানো ব্রিজ ভাঙার কাজ শুরু হয়। আজ চলছিল পুরনো ব্রিজ ভাঙার কাজ। এদিন সকাল থেকে ব্রিজ সংস্কারের কাজ চলছিল। সে সময়েই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে পুরো ব্রিজ। ব্রিজের তলায় চাপা পড়ে যান দুই শ্রমিক। দুর্ঘটনা ঘটার পরই এক শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। কিন্তু ব্রিজের ভাঙা অংশের তলায় আটকে যান আর এক শ্রমিক। একদিকে শরীরে উপর ভাঙা ব্রিজ, সঙ্গে তলায় নোংরা জল। দমকল, পুলিশ, তমলুক পুরসভা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সহ স্থানীয় মানুষের আপ্রাণ চেষ্টায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর ব্রিজের নীচে থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয় আটকে পড়া ওই শ্রমিককে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই শ্রমিকের।
কী বললেন পুরসভার চেয়ারম্যান?
পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, "দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকের পাশে আমরা রয়েছি। সরকারি ও পুরসভাগতভাবে ওই পরিবারকে যা যা সাহায্য করার দরকার তা করা হবে। আর যে এজেন্সি এই ব্রিজ সংস্কারের কাজ করছিল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
কী বললেন জেলাশাসক?
ঘটনার পর জেলাশাসক হাসপাতালে যান। মৃত শ্রমিকের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, "৪০ বছরের পুরানো ব্রিজ। পুরসভার পক্ষ থেকে সংস্কারের জন্য একটি এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারপরই এই দুর্ঘটনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
কী বললেন বিজেপি নেতৃত্ব?
বিজেপির তমলুক (Tamluk) মণ্ডলের সভাপতি সুকান্ত চৌধুরী বলেন, " আমরাও উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা করা সম্ভব হল না। এই সরকারের আমলে তৃণমূলের সব নেতারাই ঠিকাদার। অভিজ্ঞ শ্রমিক, ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ারকে কাজে না লাগিয়ে অনভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদার ও শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর ফলেই এই দুর্ঘটনা ঘটলো। অকালে একটা প্রাণ চলে গেল। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই।" বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য অনুপ চক্রবর্তী বলেন, "এই সরকারের সবটাই হতশ্রী অবস্থা। প্রকল্পের নামে সব শ্রী লাগিয়ে দিয়েছে। সবই রাজনৈতিকভাবে লুটপাট করে খাওয়ার রাস্তা। সব জায়গায় দাদাগিরি করছে আর মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করছে। সমাজের পক্ষে চরম ক্ষতিকর এই সরকার।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours