মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সকাল থেকে রাত বৃহস্পতিবার ক্রিকেট আবেগে ভাসল দেশ। দিল্লি থেকে মুম্বই চলল বিশ্বজয়ের (T20 World Cup 2024) বন্দনা। রাজধানীর রাজপথে চলল ভাঙরা। মেরিন-ড্রাইভে জনসমুদ্রে ভাসলেন রোহিত, কোহলি, হার্দিক, বুমরারা। সকাল ৬.০৭ মিনিটে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে রোহিত শর্মাদের বিশেষ বিমান। সেখান থেকে হোটেলে যেতেই সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টা। একটু বিশ্রাম নিয়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে যায় ভারতীয় দল (Team India)। মোদি-সাক্ষাতের পর মুম্বই চলে যায় তারা। সেখানে হুডখোলা বাসে রোড শো এবং ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশেষ অনুষ্ঠান। গোটা একটা দিন কার্যত ঘোরের মধ্যে কাটে ক্রিকেটারদের। দেশবাসীর অফুরান ভালবাসায় ভরে গেল তাঁদের মন।
বিশেষ বিমানে রোহিত-কোহলিকে সম্মান
দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষ করেই বিমান সংস্থা ভিস্তারার বিমানে দিল্লি থেকে মুম্বই রওনা দেন রোহিতেরা। সেই বিমানের ‘কল সাইন’ রাখা হয় ‘ভিটিআই ১৮৪৫’। বিমানের ‘ফ্লাইট নম্বর’ ছিল ‘ইউকে১৮৪৫’। কোহলি ১৮ নম্বর জার্সি পরে খেলেন। রোহিতের জার্সি নম্বর ৪৫। দুই ক্রিকেটারকেই সম্মান জানানো হয়।
Overjoyed to fly the T20 World Champions aboard the new feeling! Congratulations to the Indian Cricket Team for the glorious win, we couldn’t be more proud. #T20WorldCup pic.twitter.com/AU2L9NpvZv
— Vistara (@airvistara) July 4, 2024
মেরিন-ড্রাইভে সারি সারি মাথা
ভারতীয় (Team India) ক্রিকেটারদের বিমান নামার অনেক আগে থেকে রাস্তার দখল নিয়েছিলেন ক্রিকেট ভক্তরা। ভারত অধিনায়কের আহ্বানে সাড়া দিয়ে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। জনসমুদ্র পেরিয়ে হুডখোলা বাসে ওঠেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। রাস্তা জুড়ে ছিল প্রচুর মানুষ। তাঁদের সরিয়ে রাস্তা ফাঁকা করার চেষ্টা করতে থাকে পুলিশ। জনসমুদ্রের মধ্যে দিয়ে রোহিতদের হুডখোলা বাসের এগোতে সমস্যা হচ্ছিল। ধীর গতিতে বাস এগোচ্ছিল। বাসের মাথায় ট্রফি নিয়ে উল্লাস করছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। রোহিতদের দেখতে রাস্তার ধারে গাছের উপরেও লোক উঠে পড়েছিলেন।
AN UNFORGETTABLE DAY 💙
— BCCI (@BCCI) July 4, 2024
𝐂𝐇𝐀𝐌𝐏𝐈𝐎𝐍𝐒 🏆#TeamIndia | #T20WorldCup | #Champions pic.twitter.com/FeT7VNV5lB
উদ্বেলিত ওয়াংখেড়ে
ফিরে এসেছিল ২০১১-এর সেই রাত। এখানেই বিশ্বকাপ (T20 World Cup 2024) জিতেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। এবার রোহিত-ব্রিগেড। থিকথিক করছিল ভিড়। বন্দেমাতরমের সুরের মূর্চ্ছনায় আরবসাগরের পাড় তখন উদ্বেলিত। মাঠের মাঝে একটি মঞ্চ করা হয়েছিল। তার সামনে চেয়ারে বসে ক্রিকেটারেরা। ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের আধিকারিকেরা। ট্রফি রেখে জাতীয় সঙ্গীত গান তাঁরা। তাতে গলা মেলান দর্শকেরা। এর পর একে একে রোহিত, রাহুল দ্রাবিড়, বিরাট কোহলি এবং যশপ্রীত বুমরাকে ডেকে নেন সঞ্চালক। প্রত্যেকে বিশ্বজয়ের মুহূর্তের কথা তুলে ধরেন। শেষে ট্রফি নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করে গোটা দল। র্যাকেটে করে বল ছুড়ে দেওয়া হয় দর্শকদের দিকে। এদিনই বিশ্বজয়ের পুরস্কার স্বরূপ ১২৫ কোটি টাকার চেক ভারতীয় দলের হাতে তুলে দেয় বিসিসিআই। এই টাকা দলের ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।
This song. Wankhede. Goosebumps! 💙🇮🇳#MumbaiMeriJaan #MumbaiIndians pic.twitter.com/7NNTgS1WIT
— Mumbai Indians (@mipaltan) July 4, 2024
ট্রফি দেশবাসীর
বিশ্বকাপ ট্রফি (T20 World Cup 2024) দেশবাসীকে উৎসর্গ করেলেন রোহিত। তিনি বলেন, “আমরা যেমন ১১ বছর অপেক্ষা করেছি তেমন দেশবাসীও করেছে। ওরা আমাদের হাতে ট্রফি দেখতে চেয়েছিল। সেই প্রত্যাশা পূর্ণ হয়েছে। এই জয় শুধু আমাদের নয়, দেশবাসীর জয়।” মুম্বই যে কখনও তাঁকে খালি হাতে পাঠায়নি সে কথাও জানিয়েছেন রোহিত। ট্রফি জিতে তাই মুম্বইয়ে ফিরে উচ্ছ্বসিত তিনি। প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন হার্দিক, সূর্যকুমার, বুমরা, কোহলি-সহ পুরো দলকে। বৃহস্পতিবার সকালে দেশে ফিরে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। সেই অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়ে রোহিত বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। ওঁর খেলায় খুব আগ্রহ। ওঁর সঙ্গে কথা বলে খুব ভাল লাগল।”
When the nation jumped with joy and celebrated with their heroes 🇮🇳❤️#TeamIndia Captain @ImRo45 shares his feeling of being part of the majestic victory parade 🥳#T20WorldCup | #Champions pic.twitter.com/wVmU9nhT9f
— BCCI (@BCCI) July 5, 2024
কেন কাঁদলেন কোহলি
এবার বিশ্বকাপ (T20 World Cup 2024) জিতে চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি কোহলি। গত শনিবারের কথা বলতে গিয়ে কোহলি বলেন, ‘‘২০১১ সালে এই মাঠে যখন বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, খুব আনন্দ হয়েছিল। তখন আমার বয়স ২১ কী ২২। তখন দলের সিনিয়রদের চোখে জল দেখেছিলাম। তাঁদের কান্নার গুরুত্ব বুঝতে পারিনি। মনে আছে সচিন তেন্ডুলকরকে কাঁধে নিয়ে ঘুরেছিলাম আমরা। তাও মনে হয়েছিল, আমরা তো সহজেই বিশ্বকাপ জিতলাম। এ বার উপলব্ধি করলাম একটা বিশ্বকাপ জেতা কত কঠিন। নিজে কেঁদে বুঝলাম ২০১১ সালে সিনিয়রেরা কেন কেঁদে ছিল। আমি আর রোহিত শর্মা ১৫ বছর ধরে এক সঙ্গে খেলছি। আমরা দু’জনেই এক বার করে বিশ্বকাপ জিতেছি। দেশকে আরও একটা বিশ্বকাপ দেওয়ার জন্য বছরের পর বছর চেষ্টা করেছি। পারিনি। এ বার জেতার পর দু’জনেই কাঁদছিলাম। কাঁদতে কাঁদতেই আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরলাম। সেই মুহূর্তটা আমার ক্রিকেটজীবনের অন্যতম সেরা।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours