মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ফের উত্তপ্ত বাংলাদেশ। বাংলাদেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত গণভবন এখন আন্দোলনকারীদের দখলে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আর এরই মধ্যে খবর, বোন রেহানাকে নিয়ে ঢাকার বাসভবন তথা ‘গণভবন’ ছেড়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। সূত্রের খবর, দেশ ছাড়ার আগে হাসিনা একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সুযোগ তিনি পাননি। সোমবার সকালে হাসিনা ও রেহানা তাঁদের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনে চলে যান। সেখান থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে উড়ে যান দুই বোন।
গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে সরকার বিরোধী আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি ছিল— হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের পদত্যাগ। রবিবার বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি ক্রমে জটিল হচ্ছিল। আর এরই মধ্যে সোমবার বোনকে নিয়ে দেশ ছাড়লেন হাসিনা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েই দেশ ছেড়েছেন তিনি। পরে, সেনাপ্রধান সেই খবরে সিলমোহর দেন। বাংলাদেশের সেনাপ্রধান আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। আপনারা শান্তি-শৃঙ্খলার পথে ফিরে আসুন।’’
গণভবন এখন আন্দোলনকারীদের দখলে
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের (Bangladesh) রাস্তার দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকে পড়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের মূর্তি ভাঙছেন তাঁরা। ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবনে আগুন জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, গণভবনে লুট চালাচ্ছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। কারও হাতে দামি জিনিসপত্র, কারও হাতে মুরগি। কেউ বা ছুটছেন চেয়ার হাতে। যদিও, সেই ভিডিওর সত্যতায় যাচাই করেনি মাধ্যম। সব মিলিয়ে তুমুল অশান্ত গোটা বাংলাদেশ। পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে আবার ধানমন্ডিতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের মোবাইল পরিষেবা। পুলিশের পরিবর্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে সেনাবাহিনী। রাস্তায় নেমে পড়েছে সাঁজোয়া গাড়ি।
জাতির উদ্দেশে ভাষণ সেনাপ্রধানের
হাসিনা ঢাকা ছাড়ার আগেই বাংলাদেশের (Bangladesh) সেনাবাহিনীর তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার আগে বাংলাদেশের বিশিষ্টজন এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন ওয়াকার উজ জামান। প্রতিটি হত্যার বিচার হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশের জনতাকে বলেছেন, হিংসা পরিহার করে সংযত হওয়ার এবং শান্তি বজায় রাখার।
আরও পড়ুন: ‘জামাতের হাতে রাশ, নেপথ্যে পাকিস্তান’! হিংসা নিয়ে দিল্লিকে কী জানাল ঢাকা?
সেনার অধীনে তদারকি সরকার গঠিত হতে পারে (Bangladesh)
এদিন ভাষণে বাংলাদেশের জনতার উদ্দেশে সেনাপ্রধানের আর্জি, ''আপনারা শান্তি বজায় রাখুন। ভাঙচুর করবেন না। আমি নির্দেশ দিয়েছি পুলিশ বা সেনাবাহিনী গুলি চালাবে না। আমরা এর আগে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিশিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করব। আপনারা সেনাবাহিনীর উপর আস্থা রাখুন। সশস্ত্র বাহিনীর উপর আস্থা রাখুন, আমরা সমস্ত দায় দায়িত্ব নিচ্ছি। আপনাদের আমি কথা দিচ্ছি। আপনারা এখনই আশাহত হবেন না। আপনাদের যত দাবি আছে, তা আমরা পূরণ করব এবং দেশের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনব।''
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours