মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রেশন দুর্নীতিতে (Ration Scam) সরাসরি যুক্ত রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ইডির দাবি, নিজেই কাটমানি নিতেন মন্ত্রী। বন দফতরে বসে কৃষকদের সঙ্গে ধান কেনার চুক্তি করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। এমনকী চালকল মালিকদের থেকে নিয়মিত ‘কাটমানি’ নিতেন তিনি। প্রতি কুইন্টালে ২০ টাকা করে ‘কাটমানি নেওয়া হত’ বলে ইডির দাবি।
ধান কেনার চুক্তিপত্র
ইডি সূত্রে খবর, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বনমন্ত্রীর পদে আসার পরও সমানভাবেই দুর্নীতি (Ration Scam) চালিয়ে যেতেন। বন দফতরে বসে কৃষকদের সঙ্গে ধান কেনার চুক্তি করেছিলেন তিনি। বন দফতরের তল্লাশি চালিয়ে কৃষকদের থেকে সরাসরি ধান কেনার প্রায় ১০০টি চুক্তিপত্র মিলেছে, বলে দাবি ইডির। ধান কেনাবেচায় মন্ত্রী নিজেই কমিশন নিতেন। সমস্ত রাইস মিল মালিকদের এই কমিশন দিতে হত। প্রতি কুইন্টালে ২০ টাকা কমিশন নিতেন জ্যোতিপ্রিয়। কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমে মন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যেত কমিশন। আদালতের রিপোর্টে বিস্ফোরক দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
নিয়মিত ‘কাটমানি’ সংগ্রহ
খাদ্যমন্ত্রীর পদে বসে থেকে চালকল মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত ‘কাটমানি’ নিতেন জ্যোতিপ্রিয়। রেশন বণ্টন (Ration Scam) মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারির পরেই জানা গিয়েছিল এই খবর। আদালতের শুনানিতেও এই দাবিই বহাল রাখল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। খাদ্যমন্ত্রী হিসাবে পদাধিকার বলে ওই দফতরেরই অধীনস্থ ‘পশ্চিমবঙ্গ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ সংস্থা’র চেয়ারম্যান ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। ওই সংস্থার মাধ্যমেই চলত কাটমানি দেওয়া-নেওয়া। কুইন্টাল পিছু খাদ্যশস্যে এই ‘কাটমানি’ জ্যোতিপ্রিয় এবং তাঁর সঙ্গীরা নিয়মিত নগদে নিয়ে থাকতেন বলেও আদালতে দাবি করেছে ইডি।
আরও পড়ুন: সহায়ক মূল্যে চাষিদের পরিবর্তে ব্যবসায়ীদের থেকে ধান কেনা হচ্ছে! চাঞ্চল্য
মূল চাঁই বাকিবুর
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার বহু চাল এবং আটাকলে রেশন দুর্নীতির (Ration Scam) সিন্ডিকেট চলেছে বলে প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল ইডির। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির তদন্তকারীরা তখনই দাবি করেছিলেন, এই সিন্ডিকেটের অন্যতম চাঁই ছিলেন ধৃত ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। এ বার সেই সম্পর্কিত একাধিক তথ্য জমা করল ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ২০২১ সালের পয়লা ডিসেম্বর থেকে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর— এই ২২ মাসের সময়কালে বাকিবুরের ‘মেসার্স এনপিজি রাইস মিল প্রাইভেট লিমিটেড’ একাই তার ডিস্ট্রিবিউটর বা সরবরাহকারীদের কাছে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে ১ লক্ষ ৪২ হাজার ৫০০ কুইন্টালেরও বেশি আটা (১,৪২,৫০০.৯৯৯৫ কুইন্টাল) কম সরবরাহ করেছে। যা মোট নির্ধারিত পরিমাণের ২৫.৫৫ শতাংশ। অর্থাৎ, যত আটা সরবরাহ করার কথা, তার চার ভাগের এক ভাগ আটা সরবরাহই করা হয়নি। অথচ, সেই বাবদ টাকা কিন্তু সরকার দিয়েছে। ইডির তদন্তে উঠে এসেছে যে, বাকিবুর চাল এবং আটার দুর্নীতির মাধ্যমে নগদে ৯০০ কোটিরও বেশি অর্থ কামিয়েছেন। যে দুর্নীতিলব্ধ অর্থের একটি অংশ তিনি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন খাদ্য এবং সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours