শ্রীযুক্ত কেশবচন্দ্র সেনের সহিত ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের নৌকাবিহার, আনন্দ ও কথোপকথন
দশম পরিচ্ছেদ
সুরেন্দ্রের বাড়ি নরেন্দ্র প্রভৃতি সঙ্গে
নন্দলাল কলুটোলায় নামিলেন। ঠাকুর (Ramakrishna) গাড়ি সিমুলিয়া স্ট্রীটে শ্রীযুক্ত সুরেশ মিত্রের বাড়িতে আসিয়া লাগিল। ঠাকুর তাঁহাকে সুরেন্দ্র বলিতেন। সুরেন্দ্র ঠাকুরের পরম ভক্ত।
কিন্তু সুরেন্দ্র বাড়িতে নাই। তাঁহাদের নূতন বাগানে গিয়াছেন। বাড়ির লোকেরা বসিতে নিচের ঘর খুলিয়া দিলেন। গাড়িভাড়া দিতে হবে। কে দিবে? সুরেন্দ্র থাকিলে সেই দিত। ঠাকুর একজন ভক্তকে বলিলেন, ভাড়াটা মেয়েদের কাছে থেকে চেয়ে নে না। ওরা কি জানে না, ওদের ভাতাররা যায় আসে। (সকলের হাস্য)
নরেন্দ্র পাড়াতেই থাকেন। ঠাকুর (Ramakrishna) নরেন্দ্রকে ডাকিতে পাঠাইলেন। এদিকে বাড়ির লোকেরা দোতলার ঘরে ঠাকুরকে বসাইলেন (Kathamrita)। ঘরের মেঝেতে চাদর পাতা, দু-চারটে তাকিয়া তার উপর; কক্ষ-প্রাচীরে সুরেন্দ্রের বিশেষ যত্নে প্রস্তুত ছবি (oil painting) যাহাতে কেশবকে ঠাকুর দেখাইতেছেন হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সকল ধর্মের সমন্বয়। আর বৈষ্ণব, শাক্ত, শৈব ইত্যাদি সম্প্রদায়ের সমন্বয়।
ঠাকুর (Ramakrishna) বসিয়া সহাস্যে গল্প করিতেছেন, এমন সময় নরেন্দ্র আসিয়া পৌঁছিলেন, তখন ঠাকুরের আনন্দ যেন দ্বিগুণ হইল। তিনি বলিলেন, আজ কেশব সেনের সঙ্গে কেমন জাহাজ করে বেড়াতে গিছিলাম। বিজয়া ছিল, এরা সব ছিল। মাস্টারকে নির্দেশ করিয়া বলিলেন, একে জিজ্ঞাসা কর, কেমন বিজয় আর কেশবকে বললুম, মায়ে-ঝিয়ে মঙ্গলবার, আর জটিলে-কুটিলে না থাকলে লীলা পোষ্টাই হয় না—এই সব কথা। (মাস্টারের প্রতি) কেমন গা?
মাস্টার—আজ্ঞা হাঁ।
রাত্রি হইল, তবু সুরেন্দ্র ফিরিলেন না। ঠাকুর দক্ষিণেশ্বরে (Kathamrita) যাইবেন, আর দেরি করা যায় না, রাত সাড়ে দশটা। রাস্তায় চাঁদের আলো।
গাড়ি আসিল। ঠাকুর উঠিলেন। নরেন্দ্র ও মাষ্টার প্রণাম করিয়া কালিকাতাস্থিত স্ব স্ব বাটিতে প্রত্যাগমন করিলেন।
আরও পড়ুন: “কেশবকে ঠাকুর দেখাইতেছেন হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সকল ধর্মের সমন্বয়”
আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours