মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন স্মৃতি সৌধগুলি নিয়ে বিতর্ক দিন দিন বাড়ছে। অনেকেরই দাবি ভারতের ইতিহাসে সব সত্যি কথা বলা নেই। তাজমহল (Taj Mahal) বিতর্ক তো ছিলই এবার কুতুব মিনারকে (Qutub Minar) নিয়েও নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হল। কুতুবুদ্দিন আইবক নন, সূর্যের দিক নির্ণয়ের জন্য রাজা বিক্রমাদিত্য বানিয়েছিলেন কুতুব মিনার। কোনও হিন্দুত্ববাদী সংগঠন নয়, এমন দাবি করলেন খোদ ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের (ASI) প্রাক্তন আধিকারিক ধর্মবীর শর্মা। তাঁর কথায়, "এটি আদেও কুতুবমিনার নয়, বরং সূর্যের স্তম্ভ। পঞ্চম শতাব্দীতে রাজা বিক্রমাদিত্য এটি নির্মাণ করেছিলেন। কুতুবুদ্দিন আইবক করেননি। আমার কাছে এই সংক্রান্ত অনেক প্রমাণ আছে।' প্রসঙ্গত, এই প্রাক্তন আধিকারিক বেশ কয়েকবার কুতুব মিনার নিয়ে কাজও করেছেন। ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দিল্লি শাখার আঞ্চলিক প্রধান ছিলেন ধর্মবীর শর্মা। ফলে তাঁর যুক্তিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হবে তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুনঃ জ্ঞানবাপী মসজিদের কুয়োয় মিলল ‘শিবলিঙ্গ’! এলাকা 'সিল' করল আদালত
এবিষয়ে ধর্মবীর শর্মা বলেন, "কুতুব মিনারের মাথাটি ২৫ ইঞ্চি হেলে রয়েছে। কারণ এটি সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। তাই, ২১ জুন অয়নকালের সময় সূর্যের অবস্থানে বিশেষ পরিবর্তন হয়। আধ ঘণ্টা সেখানে ছায়া পড়ে না। পুরো বিষয়টিই বিজ্ঞান ও প্রত্নতাত্ত্বের ওপর নির্ভরশীল।"
প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক আরও বলেন "তাই এখন যাকে কুতুব মিনার বলা হয় সেটি একটি স্বাধীন পরিকাঠামো। এর সঙ্গে মসজিদের কোনও সম্পর্ক নেই। রাতে ধ্রুবতারা যাতে দেখা যায় সেজন্যে কুতুব মিনারের দরজাও উত্তরমুখী।"
সম্প্রতি হিন্দু সংগঠন মহাকাল মানব সেবার বেশ কয়েকজন সদস্য কুতুব মিনারের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন৷ তাঁদের দাবি কুতুব মিনারের নাম পরিবর্তন করে 'বিষ্ণু স্তম্ভ' রাখতে হবে। তাঁদের যুক্তি, এটি হিন্দু রাজাদের হাতেই নির্মিত! ধর্মবীর শর্মার দাবিতে সেই যুক্তি আরও জোড়ালো হল।
এই বিতর্কের মাঝেই এক নয়া তথ্য সামনে এসেছে। পুরোনো হিন্দু মূর্তি পাওয়া গিয়েছে কুতুব মিনার চত্বরে। ধর্মবীর শর্মা মূর্তিটিকে সনাক্ত করেন এবং জানান মূর্তিটি নরসিংহ দেবের। কুয়াত-উল-ইসলাম মসজিতে পাওয়া গিয়েছে মূর্তিটি। এই মসজিতটি কুতুব মিনার চত্বরে অবস্থিত। তথ্যটি সামনে আসতেই প্রাক্তন প্রত্নতাত্ত্বিকের দাবিটি আরও জোড়ালো হয়।
দাবি করা হচ্ছে মূর্তিটি ১২০০ বছরের পুরোনো এবং প্রতিহারার রাজা অনঙ্গপালের সময়ের। ধর্মবীর শর্মা জানান, মূর্তিটি অষ্টম বা নবম শতাব্দীতে তৈরি। ওই সময়কালেই রাজত্ব করতেন অনঙ্গপাল। মূর্তিটির ছবি এই মুহূর্তে দায়িত্বে থাকা প্রত্নতাত্ত্বিকদের পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ তাজমহলের বন্ধ ঘরে আছে বহু হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি? আদালতে তালা খোলার আবেদন
সম্প্রতি বেনারসের জ্ঞানবাপী মসজিতে শিবলিঙ্গ পাওয়ার দাবি করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। তা নিয়ে উত্তাল গোটা দেশ। তাহমহলের বিষয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। নাম পরিবর্তনের দাবিও উঠেছে। এরই মাঝে বিতর্কে জড়িয়ে গেল কুতুব মিনারের নাম।
+ There are no comments
Add yours