Kaliaganj: মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুকাণ্ডে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ, এলেন না অভিযুক্ত পুলিশকর্মীরা

বিনা প্ররোচনায় পুলিশ সেদিন আমার স্বামীকে গুলি চালিয়ে খুন করেছে, বললেন স্ত্রী গৌরী বর্মন
Kaliaganj
Kaliaganj

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কালিয়াগঞ্জের (Kaliagan) রাধিকাপুরে পুলিশের গুলিতে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হল মঙ্গলবার। এই ঘটনার সাথে জড়িত সকল আধিকারিক, প্রত্যক্ষদর্শী ও জনসাধারণকে এদিন সাক্ষ্য দিতে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। পুলিশের ওই গুলি চালানো ন্যায়সঙ্গত ছিল কি? তা নিরুপণ করার জন্যই সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে কালিয়াগঞ্জ বিডিও অফিসের সভাকক্ষে মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতির উপস্থিতিতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শুরু হয়। বিকেল ৩ টে পর্যন্ত গুলিতে মৃত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাবা, স্ত্রী, দাদা সহ এলাকার প্রায় ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। তবে এদিন ওই ঘটনার সাথে জড়িত কোনও পুলিশকর্মী সাক্ষ্য দিতে আসেননি। মৃতের পরিবারের সদস্য ও এলাকার বাসিন্দারা প্রত্যেকেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

কী ঘটেছিল কালিয়াগঞ্জে (Kaliagan)?

গত ২১ শে এপ্রিল কালিয়াগঞ্জের (Kaliagan) সাহেবঘাটায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ ওঠে। ২৫ এপ্রিল  বিজেপির পক্ষ থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় সাংসদের নেতৃত্বে পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। রাতে পুলিশ তল্লাশি অভিযান চালায়। সেই সময় মৃত্যুঞ্জয় বর্মন (৩৩) নামে এক যুবক পুলিশের গুলিতে মারা যান বলে অভিযোগ ওঠে।

জেলা প্রশাসনের বিশেষ দায়িত্ব

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চ আদালত ও মানবাধিকার কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী কোথাও পুলিশের গুলিতে কেউ মারা গেলে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করতে হয়। সেই নিয়ম মেনেই পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট (Kaliagan)পর্যায়ের তদন্ত করার আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতিকে এই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মহকুমা শাসকের বিজ্ঞপ্তিতে কী বলা হয়েছিল?

২২ মে এই মর্মে মহকুমা শাসক একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। ৬ জুন কালিয়াগঞ্জ (Kaliagan) বিডিও অফিসে রাধিকাপুরের চাঁদগা গ্রামে রাতে তল্লাশি অভিযানে অংশগ্রহণকারী সকল পুলিশকর্মীকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়। এর পাশাপাশি মৃতের পরিবারের সদস্য, এলাকার বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শীদেরও আসার জন্য বলা হয়। আর তাই এদিন সকাল ১১ টা থেকে এই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। তার আগেই মৃত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মন, স্ত্রী গৌরী বর্মন, দাদা বিষ্ণু বর্মন সহ এলাকার প্রায় ৫০ জন বাসিন্দা বিডিও অফিসে চলে আসেন। প্রত্যেককে আলাদা করে মহকুমা শাসক জিজ্ঞাসাবাদ করেন ও তাঁদের বয়ান ভিডিও রেকর্ড করা হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৭ জনের বয়ান ভিডিও রেকর্ড করা হয়। পাশাপাশি আরও কয়েকজন তাঁদের বয়ান কাগজে লিখে জমা দেন। কোনও পুলিশকর্মী এদিন সাক্ষ্য দিতে না আসায় তাঁদের জন্য আগামী সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

পরিবারের বক্তব্য

নিহত মৃত্যুঞ্জয় (Kaliagan) বর্মনের স্ত্রী গৌরী বর্মন জানিয়েছেন, "মহকুমা শাসক সাক্ষ্যগ্রহণ করার শুরুতেই সেদিনের ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা শোনেন। বিনা প্ররোচনায় পুলিশ সেদিন আমার স্বামীকে কীভাবে গুলি চালিয়ে খুন করেছে, তা জানাই। ওই অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি আমি সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছি।" এলাকার এক বাসিন্দা সত্যচরণ বর্মন বলেন, "সেদিন আমি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির বাইরে আসি। পুলিশ আমাকে ভয় দেখিয়ে সরে যেতে বলে। মৃত্যুঞ্জয় ঘর থেকে বেরিয়ে পুলিশকে তাঁর বাবাকে ধরে নিয়ে যাবার কারণ জিজ্ঞেস করে। তখনই এক অফিসার গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়। আর তারপরেই তাঁকে গুলি চালানো হয়।"

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles