মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ৯১ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ইতিহাসবিদ পরমেশ্বরণ থাঙ্কাপ্পান নায়ার (Parameswaran Thankappan Nair)। রেখে গেলেন স্ত্রী ও পুত্র-কন্যাকে। ছোট্ট একটা চাকরি নিয়ে কেরল থেকে এসেছিলেন কলকাতায়। পরে ফিরে যান কেরলেই। মঙ্গলবার বিকেলে সেখানেই প্রয়াত হন তিনি। গত ছ’মাস ধরে অসুস্থ ছিলেন নায়ার। তাঁর ছেলে মনোজ ফোনে বলেন, “বাড়িতেই মারা গিয়েছেন বাবা। গত ছ’মাস ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি।”
‘নগ্ন পায়ের ইতিহাসবিদ’ (Parameswaran Thankappan Nair)
কলকাতায় ভীষণ জনপ্রিয় ছিলেন এই মানুষটি (Parameswaran Thankappan Nair)। কারও কাছে তিনি নায়ার দা, কেউ আবার তাঁকে ডাকতেন নায়ারবাবু বলে, কেউ আবার পিটি বলে সম্বোধন করতেন। তবে কলকাতায় তিনি পরিচিত ছিলেন ‘নগ্ন পায়ের ইতিহাসবিদ’ হিসেবে। তাঁর এই ‘খেতাবে’র কারণও ছিল। কাজ শেষে চরকিপাক খেতেন কলকাতার অলিতে-গলিতে। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ডকুমেন্টরি স্টোরি বানাতেন। কখনও তাঁর স্টোরির বিষয় হত নগর কলকাতার সামাজিক জীবন, কখনও আবার পুলিশ, প্রতিষ্ঠান, সম্প্রদায় মায় রাস্তাও।
কী বলছেন সুরঞ্জন দাস?
কখনওই পেশাদার ইতিহাসবিদ ছিলেন না পরমেশ্বরণ। “তবে কলকাতার ওপর হাতে গোণা যে কয়েকজন ইতিহাসবিদ কাজ করেছেন, তিনি ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন”, বলছেন ইতিহাসবিদ সুরঞ্জন দাস। তিনি বলেন, “নায়ার নিছক ইতিহাসবিদ ছিলেন না। তিনি কলকাতার আত্মা ও স্পিরিটকে তুলে ধরেছিলেন। যেটা খুব কম ইতিহাসবিদই করেছেন।” কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুরঞ্জন জানান, তাঁর (নায়ারের) কয়েকটি বই কলকাতা সংক্রান্ত তথ্যে ঠাসা। অথেন্টিকও।
আর পড়ুন: হরিয়ানা কংগ্রেসে ‘রাম’ধাক্কা, বিজেপিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বংশীলালের পুত্রবধূ, নাতনি
১৯৫৫ সালে ভাগ্যান্বেষণে কলকাতায় আসেন নায়ার। ডালহৌসি স্কোয়ারের একটি অফিসে স্টেনোটাইপিস্টের কাজ করতেন। মনোজ জানান, নায়ার অ্যানথ্রোপলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় কাজ করেছেন। করেছেন ফ্রিল্যান্সিং এবং সম্পাদনার কাজও। তাঁর অন্যতম বিখ্যাত বই হল ‘আ হিস্ট্রি অফ ক্যালকাটাজ স্ট্রিটজ’। তাঁর আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের বিষয় হল কলকাতায় দক্ষিণ ভারতীয়রা, কলকাতা পুলিশের উৎস ইত্যাদি।
মনোজ বলেন, “২০১৮ সালে কেরলে ফিরে আসেন বাবা। তবে কলকাতায় কী ঘটছে, সে ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজখবর রাখতেন। তিনি নিয়মিত পড়াশোনা করতেন। কলকাতা সংক্রান্ত খবর দেখলেই খবরের কাগজের ক্লিপিংস কেটে রাখতেন।” তিনি বলেন, “বাবা কখনওই মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটার ব্যবহার করতেন না (Parameswaran Thankappan Nair)।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours