মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: এবার বন্দে ভারতের পর আসছে নয়া 'অমৃত ভারত এক্সপ্রেস' (Amrit Bharat Express)। এই ট্রেনের বর্ণ হবে গেরুয়া। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, অত্যাধুনিক এই ট্রেন বেশ আশাব্যঞ্জক এবং ফলপ্রসূ হবে। শনিবার, প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে এই ট্রেনের উদ্বোধন হবে। উল্লেখ্য অমৃত ভারত একপ্রেসের পরীক্ষামূলক যাত্রা ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে।
শনিবার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
এই ট্রেনের এর আগে নামকরণ করা হয়েছিল বন্দে সাধারণ। যা আদতে নন-এসি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। পরে নাম বদল করে 'অমৃত ভারত এক্সপ্রেস' (Amrit Bharat Express) রাখা হয়। ট্রেনের রঙ ধূসর ও গেরুয়ার সংমিশ্রণ। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যা থেকে উদ্বোধন করতে পারেন অমৃত ভারত এক্সপ্রেস। প্রথম ট্রেন যাবে অযোধ্যা থেকে বিহারের দ্বারভাঙা পর্যন্ত। দ্বিতীয় ট্রেনটি সম্ভবত চলবে মালদা থেকে বেঙ্গালুরু পর্যন্ত। যদিও, একনও রেলের তরফে সরকারি স্তরে কোনও ঘোষণা হয়নি।
সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিমি
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো এই ট্রেনেও পুশ-পুল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ, ট্রেনের দুদিকের ইঞ্জিন সমানতালে কাজ করবে। সামনের ইঞ্জিন পুল করবে, শেষেরটি পুশ। ট্রেনের উভয় প্রান্তেই ডাব্লিউএপি-৫ ইঞ্জিন যুক্ত থাকছে। এই ট্রেনের গতি ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র কয়েক মিনিট। ঘণ্টায় সর্বাধিক ১৩০ কিলোমিটার বেগে চলবে এই ট্রেন। অমৃত ভারত ট্রেনে (Amrit Bharat Express) মোট ২২টি কোচ থাকবে। ৮টি সাধারণ (জেনেরাল) কোচ, ১২টি দ্বিতীয় শ্রেণির থ্রি টিয়ার স্লিপার কোচ ছাড়া দু'টি কামরা হবে লাগেজ ভ্যান। এতে একসঙ্গে প্রায় ১৮০০ যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন।
যাত্রী স্বাচ্ছন্দ ও নিরাপত্তায় জোর
সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ট্রেনের লোকো পাইলটদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে সিটগুলিকে আরামদায়ক করা হয়েছে। এছাড়াও জেনারেল কামরার উপরে সিটে গদির ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক সিটের সঙ্গে থাকবে উন্নতমানের মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট। পাশাপাশি, রাখা হয়েছে এলইডি লাইট, বেসিন, পাখা, মেট্রোর মতো ঘোষণার সুবিধাও। ট্রেনে যাতে জলের অপচয় কম রাখা হয় তার জন্য সেন্সর ওয়াটার ট্যাপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীদের সুরক্ষার দিকেও দেওয়া হয়েছে বিশেষ নজর। এই ট্রেনে ব্যবহার করা হয়েছে ‘কবচ’ প্রযুক্তি। ট্রেনে দুর্ঘটনার আশঙ্কা অবশ্যই কম থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া, প্রতিটি কোচে থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা।
২ ঘণ্টা কম সময় লাগবে
এই ট্রেনের ট্রায়াল ও অন্যান্য সুবিধাগুলিকে প্রত্যক্ষভাবে দেখেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, যেসব রুটে এই ট্রেনগুলি চলবে সেখানে যাত্রাপথে গন্তব্যে পৌঁছাতে ২ ঘণ্টা সময় কম লাগবে। প্রবীণ বা বয়স্ক নাগরিক কিংবা বিশেষ সক্ষমরা যাতে উঠতে পারেন তার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। দরজা থাকবে বেশ চওড়া, জানালা থাকবে বেশ বড়বড়। দ্রুতগতি সম্পন্ন এবং নতুন প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ। দিল্লি থেকে কলকাতায় অমৃত ভারত এক্সপ্রেস (Amrit Bharat Express) ট্রেনে আসত ২ ঘণ্টা সময় কম লাগবে। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী নিজের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “এই ট্রেন হল অমৃত কালের অমৃত ভারত ট্রেন।”
কেমন হবে ভাড়া?
অনেকে বলছেন, এই ট্রেন বন্দে ভারতের ছোট ভাই। তবে এর ভাড়া বন্দে ভারতের মতো হবে না। তুলনায় অনেক কম হবে ভাড়া। রেল জানিয়েছে, সাধারণ মেল অথবা এক্সপ্রেস ট্রেনের স্লিপার এবং দ্বিতীয় শ্রেণির তুলনায় মাত্র ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ বেশি ভাড়া হবে এই ট্রেনে। অন্যান্য মেল অথবা এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিতে এক থেকে ৫০ কিলোমিটারের জন্য দ্বিতীয় শ্রেণির যাত্রার ন্যূনতম টিকিটের দাম ৩০ টাকা (রিজার্ভেশন এবং অন্যান্য চার্জ ছাড়া)। সেখানে অমৃত ভারত এক্সপ্রেসে (Amrit Bharat Express) এক থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত যাওয়ার জন্য ন্যূনতম খরচ ৩৫ টাকা। রিজার্ভেশন ফি এবং অন্যান্য চার্জ ছাড়াই যাত্রীদের দিতে হবে এই অর্থ। রেলের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ছাড়ের টিকিট এবং বিনামূল্যে পাসের জন্য টিকিট এই ট্রেনগুলিতে গ্রহণযোগ্য হবে না।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours