মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গরু পাচার কাণ্ডে ধৃত অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। ইডি হেফাজতে রয়েছেন কেষ্টর হিসেবরক্ষক মণীশ কোঠারি। অন্যদিকে কেষ্ট কন্যা সুকন্যাকে তলব করা হলেও এড়িয়ে যান তিনি। তবে তাঁকে আবার ২০ মার্চ তলব করেছে ইডি, সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে অবশেষে মণীশ কোঠারি কেষ্ট-সুকন্যার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। আবার জানা গিয়েছে, এদিন দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে হাজিরা দিলেন অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির পরিচারক তথা রাঁধুনি বিজয় রজক। শুক্রবার বেলার দিকে লাভপুর কলেজের অস্থায়ী কর্মী বিজয়কে ইডি দফতরে ঢুকতে দেখা যায়।
অনুব্রতের বিরুদ্ধে সরব মণীশ কোঠারি
ইডির জেরার মুখে চাপে পড়েন মণীশ কোঠারি। প্রথমে তিনি মুখ না খুললেও পরে তিনি সরব হন কেষ্টর (Anubrata Mondal) বিরুদ্ধে। তিনি জানিয়েছেন, গরু পাচারের কালো টাকাতেই অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের নামে ১৬ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করা হয়। মণীশ কোঠারি তদন্তকারীদের আরও জানিয়েছেন, অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশেই বিভিন্ন জায়গায় টাকা আমানত করেছেন তিনি। কোথায়, কার অ্যাকাউন্টে টাকা রাখা হবে, সেই নির্দেশ দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলই।
ইডি সূত্রের খবর, মণীশ ইডি আধিকারিকদের জানিয়েছেন, পেশাদার চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে তিনি অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশ পালন করেছেন মাত্র এবং তাঁর কোনও কালো টাকা নেই। নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবি করেছেন মণীশ কোঠারি। সুকন্যার নামে ১৬ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট কীভাবে? এই ফিক্সড ডিপোজিটের উৎস কী? তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছিল এতদিন। এরপর মণীশের বয়ান থেকেই জানা গেল, কালো টাকাতেই এই ফিক্সড ডিপোজিট।
সুকন্যার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ ইডির
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, সুকন্যাকে এর আগে দিল্লিতে তলব করা হলেও হাজিরা দেননি তিনি। এবারে কিছুদিনের সময় দিয়ে ফের ২০ মার্চ তলব করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু ২০ মার্চও তাঁর দিল্লিতে ইডি দফতরে হাজিরার সম্ভাবনা কম বলেই জানাচ্ছে ঘনিষ্ঠ মহল। অসুস্থতার কথা বলে সেইদিনও তিনি যদি হাজিরা এড়িয়ে যান তাহলে বাবা ও মেয়েকে মুখোমুখি বসিয়ে ইডির জেরা করতে পারার সম্ভাবনা কমে যাবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, পরের দিনই অর্থাৎ ২১ মার্চ অনুব্রতর ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এরপর তাঁকে ফের আদালতে পেশ করা হবে। তারপর যদি জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত, তাহলে কেষ্ট মণ্ডল যেতে পারেন তিহাড়ে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, বাবার (Anubrata Mondal) মুখোমুখি বসিয়ে যাতে সুকন্যাকে জেরা করতে না পারে ইডি, তাই তাঁর এমন কৌশল? তবে, সুকন্যার বিরুদ্ধে এবারে নোটিশ জারি করল ইডি। আগামী সোমবারের মধ্যে দিল্লিতে ইডি অফিসে হাজিরা না দিলে সুকন্যা মণ্ডলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে বার্তা দিয়েছেন তদন্তকারীরা। সুকন্যার আইনজীবী মারফত তাঁর কাছে এই মর্মে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে বলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর।
হাজিরা দিলেন কেষ্টর বাড়ির পরিচারক
ইডি সূত্রে খবর, শুধু সুকন্যা নন, গরু পাচার মামলার তদন্তে অনুব্রতের (Anubrata Mondal) মুখোমুখি বসিয়ে তাঁর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি-সহ মোট ১২ জন সন্দেহভাজন এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। ইডি সূত্রেরই দাবি, ওই ১২ জনের তালিকাতেই ছিলেন কেষ্টর বাড়ির পরিচারক বিজয়। বোলপুর হাটতলা এলাকার বাসিন্দা বিজয় অনুব্রতের অত্যন্ত বিশ্বস্ত বলে পরিচিত। ইডি সূত্রের দাবি, অনুব্রতের বাড়ির পরিচারকদের অ্যাকাউন্টে নানা সময় বহু টাকার লেনদেন হয়েছে। সেই সূত্রে বিজয়ের একাধিক অ্যাকাউন্টের হদিশও মিলেছে। সেই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তাঁকে তলব করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে আজ তিনি ইডি দফতের হাজিরা দেন। এনাকেও জেরা করার পর কী কী তথ্য প্রকাশ্যে আসে, এটাই এখন দেখার।
+ There are no comments
Add yours