Birendra Krishna Bhadra: “আশ্বিনের শারদপ্রাতে..”, মহালয়ার প্রাক্কালে জেনে নিন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের জীবনকথা

Mahalaya 2024: ২০২৪ সালে ৯৩ বছর পূর্তি হবে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র! মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্তোত্র পাঠ ছাড়া যেন দুর্গাপুজো সম্পূর্ণই হয় না
bhirendrakrishna_Bhadra
bhirendrakrishna_Bhadra

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  তাঁর কণ্ঠস্বরই বার্তা নিয়ে আসে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের (Mahalaya 2024)। রেডিওতে এবারও ভোরবেলায় বেজে উঠবে "আশ্বিনের শারদপ্রাতে.... "। বোঝা যায়, কৈলাস থেকে মায়ের আসার সময় হয়ে গিয়েছে। মূলত এই কণ্ঠস্বরই পুজোর আমেজ, গন্ধ, আনন্দ সব বয়ে আনে। তিনি বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের (Birendra Krishna Bhadra) স্তোত্র পাঠ ছাড়া যেন দুর্গাপুজো সম্পূর্ণই হয় না।

বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের জন্ম ও বংশ পরিচয়

১৯০৫ সালের ৪ অগাস্ট উত্তর কলকাতায় আহিরীটোলায় জন্মগ্রহণ করেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র (Birendra Krishna Bhadra)। তাঁর পিতার নাম রায়বাহাদুর কালীকৃষ্ণ ভদ্র ও মা সরলাবালা দেবী। জানা যায়, ঠাকুমা যোগমায়া দেবীর কেনা ৭, রামধন মিত্র লেনে উঠে আসেন তাঁর পরিবারবর্গ। তাঁর পিতা কালীকৃষ্ণ ভদ্র ছিলেন বহুভাষাবিদ। তিনি ১৪টি ভাষা জানতেন বলেও শোনা যায়। বাংলা সাহিত্য জগতে তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক পরিচিত ব্যক্তিত্ব। ১৯২৭ সালে তিনি "রায়বাহাদুর" খেতাব পান। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র ১৯২৬ সালে ইন্টারমিডিয়েট ও ১৯২৮ সালে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক হন।

কর্মজীবনে প্রবেশ

বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র (Birendra Krishna Bhadra) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি বেতার সম্প্রচারক, নাট্যকার, অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক। দীর্ঘদিন অল ইন্ডিয়া রেডিওয় বেতার সম্প্রচারকের কাজ করেছেন। কলকাতার আকাশবাণীর অত্যন্ত সুপরিচিত মুখ তিনি। রেডিও ছিল তাঁর প্রাণ। তিনি একাধিক নাটক রচনা ও প্রযোজনাও করেন। এমনকী নিজে পরিচালনা ও অভিনয় করেছেন। ১৯৫৫ সালে 'নিষিদ্ধ ফল' নামে একটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যও রচনা করেছিলেন তিনি।

‘মহিষাসুরমর্দিনী’

তাঁর সর্বাধিক পরিচিত বেতার সম্প্রচার হল ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। এই অনুষ্ঠানটির গ্রন্থনা করেছিলেন বাণীকুমার ভট্টাচার্য এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক। এই অনুষ্ঠানে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ভাষ্য ও শ্লোকপাঠ প্রত্যেক বাঙালির মন ছুঁয়ে যায়। সেই ১৯৩১ সাল থেকে আজও প্রতি বছর 'মহালয়া'-র (Mahalaya 2024) দিন ভোর চারটের সময় কলকাতার আকাশবাণী থেকে এই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারিত হয়ে আসছে। অর্থাৎ ২০২৪ সালে ৯৩ বছর পূর্তি হবে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’-এর।

১৯৭৬ সালে উত্তমকুমারের কণ্ঠে শোনা যায় মহিষাসুরমর্দিনী

এত প্রতিভার পরেও তাঁর জীবনে খারাপ সময় আসেনি, এটা বলাটা বোধহয় ভুল হবে। সালটা ১৯৭৬। হঠাৎই, আকাশবাণী কর্তৃপক্ষের ইচ্ছায় চিরাচরিত ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের (Birendra Krishna Bhadra) পরিবর্তে বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা উত্তমকুমারকে দিয়ে অন্য একটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করানোর কথা ঠিক হল। জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে উত্তমকুমারের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। সমালোচনার ঝড়, বিক্ষোভে পুনরায় সে বছর ষষ্ঠীর দিনই আবার বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই চিরাচরিত ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ সম্প্রচার করা হয়। তারপর থেকে আকাশবাণী কখনও তাঁর কণ্ঠস্বর বদল করার কথা ভাবেনি। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles