মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: যাঁর লেখায় বাঙালি বাংলা ভাষায় প্রথম পাঠ নেয়, যিনি শাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দিয়েছিলেন বিধবা বিবাহ, সেই পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর নামাঙ্কিত ধুতি ও উত্তরীয় তৈরি করছে শান্তিপুরের তন্তুবায় সরকারি সংস্থা সিপকো। পেরিয়ে গেল ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৪ তম জন্মবার্ষিকী। বিদ্যাসাগর এবং শান্তিপুর ওতঃপ্রোতভাবে জড়িত। তার কারণ, এই শান্তিপুরের (Nadia) মাটিতে দাঁড়িয়েই নানা কর্মকাণ্ড করেছেন তিনি। শাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে প্রথম বিধবা বিবাহ দিয়েছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
লক্ষ্মীমণির বিধবা কন্যা কালীমতি (Nadia)
তিনি যখন শান্তিপুরে আসেন, সেটা ১৮৫৫ সালের ২২ শে অগাস্ট। এখানে কয়েকটি বিদ্যালয় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন। শহর ছাড়িয়ে শান্তিপুর বেলগড়িয়া গ্রামেও মেয়েদের মডেল স্কুল স্থাপন করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাঁর চেষ্টাতেই বিধবা বিবাহের প্রচলন হয় গোঁড়া হিন্দু সমাজের সঙ্গে লড়াই করে। কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটে ১৮৫৬ সালের ৭ ই ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদে কর্মরত জজপন্ডিত শ্রীশ চন্দ্র বিদ্যারত্নের সঙ্গে কালীমতি নামে যে বিধবা রমণীর পুনরায় বিবাহ হয়, তিনি শান্তিপুরের (Nadia) বাসিন্দা লক্ষ্মীমণির বিধবা কন্যা। এই বিবাহে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মশাই উপস্থিত ছিলেন। তাঁর প্রতি সম্মান জানাতে শান্তিপুরের তন্তুবায় সমাজ ধুতির পাড়ে লিখলেন "বেঁচে থাক বিদ্যাসাগর চিরজীবী হয়ে"।
ধুতির পাড়ে উঠে এল সেই ছবি (Nadia)
আজ থেকে ১৬৭ বছর আগেকার সেই মুহূর্ত যেন মৃতপ্রায় শান্তিপুরের (Nadia) তাঁতশিল্পের পুনরুজ্জীবনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। হাতে বোনা ধুতির পাড়ে আবার উঠে এল সেই ছবি। শান্তিপুর শহরের একজন প্রবীণ তাঁতশিল্পীর হাতে এই মহার্ঘ্য ভাবনার ফসল ফলছে। শান্তিপুর হ্যান্ডলুম ইনোভেশন প্রডিউসার কোম্পানি লিমিটেডের অন্যতম সদস্য তথা ডিজাইন প্ল্যানার সৌরভ শীর জানান, বিধবা বিবাহ প্রবর্তন কালে শান্তিপুরের তন্তুবায় শিল্পীরা বিদ্যাসাগরকে যে উপহার দিয়েছিলেন, সেই ধুতি আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছিলাম। সেই মোতাবেক গত ছয় মাস ধরে এই ধুতি এবং উত্তরীয় তৈরির পরিকল্পনা করা হয় এবং পরবর্তীতে তা খাদির সুতোর ওপর বাস্তবে রূপ পায়, যেখানে লেখা রয়েছে "বেঁচে থাক বিদ্যাসাগর দীর্ঘজীবী হয়ে"। সংস্থা সূত্রে খবর এই ধুতিগুলি সম্পূর্ণ ভেষজ উপায়ে তৈরি করা হচ্ছে, ভেষজ রং ব্যবহার করা হয়েছে, ধোলাই করা হয়েছে রিটা ফল দিয়ে। জানা যায়, এই ধুতি এবং উত্তরীয় পরবর্তীকালে বিশ্ববাংলার মতো ব্র্যান্ডিংয়ের মোড়কে নিয়ে আসা হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours