মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বগটুই কাণ্ডে ধৃত প্রধান অভিযুক্ত লালন শেখের (Lalan Sheikh) সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু (CBI Custody)। রামপুরহাটে সিবিআই-র অস্থায়ী ক্যাম্পে মৃত্যু হয়েছে তার। কয়েকদিন আগেই তাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাকে ৬ দিনের জেল হেফাজতের পর আবার ৩ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর পর আজ তার মৃত্যু হল। কিন্তু কী কারণে মৃত্যু হল তার, তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে সিবিআই সূত্রের খবর, সিবিআই দাবি করেছে, আত্মঘাতী হয়েছে লালন শেখ, অন্যদিকে লালনের পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে, তাকে খুন করা হয়েছে। ফলে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে।
লালন শেখের রহস্যময় মৃত্যু
সোমবার বিকেলে সিবিআই সূত্রে জানা যায়, রামপুরহাটের পান্থশ্রী অতিথিনিবাসে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে মৃত্যু হয়েছে লালন শেখের। সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পের শৌচাগারে লাল রঙের গামছা গলায় জড়ানো অবস্থায় লালনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপুরহাটে সিবিআই অস্থায়ী ক্যাম্পে জেরা চলাকালীন মৃত্যু হয় লালনের। তখন বিকেল ৪টা বেজে ৫০ মিনিট হয়েছে। এর পর তার দেহ পাঠানো হয় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের সামনে পৌঁছে যায় লালনের (Lalan Sheikh) পরিবারের লোকজন।
আরও পড়ুন:"১৩ জানুয়ারির মধ্যে ধেড়ে ইঁদুর ধরা পড়বেই", হাজরার সভা থেকে 'হুঙ্কার' শুভেন্দুর
সিবিআই ও লালনের পরিবারের কী দাবি?
সিবিআই আধিকারিকরা পুলিশকে জানিয়েছেন, লালন (Lalan Sheikh) আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু অন্যদিকে আজ সন্ধ্যায় লালনের দিদি সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেন, সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ড ডিস্কের খোঁজে লালন শেখকে বগটুইয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল সিবিআই। তার পর তাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যায়। তাকে এত মারধর করা হয় যে, সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছিল না। নিজের বাড়িতে পৌঁছে এক প্রতিবেশীর কাছে জল চায় লালন শেখ। অভিযোগ তাকে জল খেতে দেয়নি সিবিআই। লালনের দিদি দাবি করেন, সিবিআই ওকে পিটিয়ে মেরেছে।
বগটুইয়ে কী ঘটেছিল?
২১ মার্চ রাত সাড়ে আটটা নাগাদ বোমা মেরে খুন করা হয় বগটুই (Bogtui Murder) গ্রামের বাসিন্দা তথা বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের ভাদু শেখকে। খুনের বদলা নিতে ওই রাতেই গ্রামের একাধিক বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে সাতজনের দেহ উদ্ধার করা হয়। দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর তাঁরাও মারা যান। এর পর ২১ জুন সিবিআই দুটি ঘটনার চার্জশিট জমা দেয়। আর চার্জশিটে নাম ছিল মূল অভিযুক্ত লালন শেখের।
প্রথমে সে নিখোঁজ থাকলেও ৩ ডিসেম্বর রাতের দিকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করা হয় তাকে। ৪ ডিসেম্বর রামপুরহাট আদালতে হাজির করানো হয় ও সেখানে বিচারক তাকে ৬ দিন হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। হেফাজতে লালনকে বীরভূমের রামপুরহাটের অস্থায়ী ক্যাম্পে রেখেছিল সিবিআই। ১০ ডিসেম্বর আবার আদালতে পেশ করার পরে তাকে আরও তিনদিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে পাঠানো হয়েছিল। এর পর আজ , সোমবার বিকেলে জেরা চলাকালীন লালনের (Lalan Sheikh) মৃত্যু হয়। ফলে সিবিআই হেফাজতে লালনের রহস্যময় মৃত্যু নিয়ে রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
+ There are no comments
Add yours