Jaynagar: জয়নগরে জুনিয়র-সিনিয়র জাক্তার থেকে আইনজীবীর প্রতিনিধিরা, সিবিআই চাইছে পরিবার

South 24 Parganas: পুলিশের ওপর আস্থা নেই, মেয়ের খুনের তদন্ত নিয়ে কী বলল নির্যাতিতার পরিবার?
Jaynagar_(5)
Jaynagar_(5)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক:  চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) জয়নগরের (Jaynagar) কুলতলি এলাকা। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।  তার দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছেন। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় গোটা এলাকা। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশ ফাঁড়িতে। আরজি করের মতো এই ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যবাসী। এই ঘটনায় বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে গোটা গ্রাম। আরজি করের প্রতিবাদী চিকিৎসকরা থেকে শুরু করে আইনজীবীরা পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। সিবিআই তদন্ত চাইল জয়নগরের নিহত বালিকার পরিবারও।

সিবিআই তদন্ত চাইছে নিহত বালিকার পরিবার (Jaynagar)

মেয়ের ধর্ষণ ও মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাইল জয়নগরের (Jaynagar) নিহত বালিকার পরিবার। এইন প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করতে পারে পরিবার। মেয়ের নির্মম পরিণতির সঙ্গে আরজি কর কাণ্ডের তুলনা টেনে এনে বালিকার পরিবার জানিয়েছে, রাজ্য পুলিশের ওপর তাঁদের কোনও আস্থা নেই। প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলছে। এই কারণে, সিবিআই চাই। রবিবার, নাবালিকার ময়না তদন্তও কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থায় করতে চেয়ে হাইকোর্টে তারা আবেদন জানায়। আদালত কল্যাণী এইমসের চিকিৎসকদের দিয়ে ময়না তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। সোমবার কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে সেই প্রক্রিয়া চলছে। এবার পরিবারের তরফে ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা দায়ের করা হতে পারে বলেও উঠে আসছে। রবিবারের শুনানিতেও তারা সেই ইঙ্গিত দিয়েছে। সেই মতো প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন পরিবারের আইনজীবী।

আরও পড়ুন: ধর্মতলায় আমরণ অনশন জুনিয়র ডাক্তারদের, এবার যোগ দিলেন আরজি করের অনিকেত

নির্যাতিতার বাড়িতে চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদল

জয়নগরে (Jaynagar) নির্যাতিতার বাড়িতে যায় জুনিয়র চিকিৎসদের প্রতিনিধিদল। সেই দলে ছিলেন আরজি কাণ্ডে আন্দোলন করা জুনিয়র ডাক্তাররা। পাঁচ জন ডাক্তারের মধ্যে ছিলেন কিঞ্জল নন্দ, দেবাশিস হালদার প্রমুখ। আরজি কর ইস্যুতেই তাঁরা রাস্তায় নেমে ন্যায় বিচারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিন মৃত নাবালিকার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে পাশে থাকার বার্তাও দেন। জুনিয়র ডাক্তারদের পাশাপাশি সিনিয়র ডাক্তাররাও নির্যাতিতা পরিবারের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। রবিবার দুপুরে নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন আরজি কর হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকদের একটি দল। পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর কিছুক্ষণের জন্য কৃপাখালী এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভেও শামিল হন তাঁরা। আর সেখান থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।

 নির্যাতিতার বাড়িতে আইনজীবীর প্রতিনিধিদল

নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীরা। রবিবার দুপুরে নির্যাতিতার পরিবারের (Jaynagar) সঙ্গে দেখা করতে যান কলকাতার হাইকোর্ট এবং বারুইপুর আদালতের আইনজীবীরা। পরিবারের সদস্যদের সব রকম আইনি সাহায্যের আশ্বাস দেন তাঁরা। সেই সঙ্গে, আরও বেশ কিছু বিষয়ে নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা কথা বলেন তাঁরা। এই নারকীয় ঘটনার প্রধান অভিযুক্তের যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া যায়, সেই প্রসঙ্গেও আলোচনা করেন আইনজীবীরা। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর রাজ্যের আইনজীবী অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য গৌতম চট্টোপাধ্যায়  বলেন, "এই ঘটনা খুবই নিন্দনীয়। ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও কথা বলার ভাষা নেই আমাদের। দশ বছরের ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তর যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় আইনিভাবে আমরা সব রকম ব্যবস্থা করব। পরিবারের সঙ্গে আমরা দেখা করে কথা বলেছি। আইনি সমস্ত রকম সাহায্য আমরা করব। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে এই ঘটনায়। পরিবারের অভিযোগ পাওয়ার পর তারা তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিলে এই দিনটি দেখতে হত না পরিবারের সদস্যদের। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। রাজ্যের নারীদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ পুলিশ প্রশাসন। জয়নগর কাণ্ডে নির্যাতিতার পরিবার যাতে সুবিচার পায় আমরা আইনজীবীদের পক্ষ থেকে সব রকম সাহায্য করব।" উল্লেখ্য, শনিবার বারুইপুর আদালতে জয়নগরের প্রধান অভিযুক্তকে পেশ করা হলে, আদালতের কোনও আইনজীবী তার পক্ষে সওয়াল করেননি।

থমথমে এলাকা

এদিকে সোমবারও থমথমে রয়েছে কুলতলি (Jaynagar) থানার কৃপাখালীর হালদারপাড়া গ্রাম। রয়েছে চাপা উত্তেজনা। পরিস্থিতি সামলাতে রয়েছে প্রচুর পুলিশ। এলাকার মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। যদিও মহিষমারি হাট এলাকা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলেছেন, লোকজন আসছে। এই মহীশমারি হাটের পাশেই মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। সেখানেও মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশের ভূমিকা ভালো নয়। সমস্ত ঘটনার তদন্ত হওয়া দরকার। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles