মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো সূচনা হয়েছিল। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja 2024) শুরু হওয়ার পিছনেও রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ভূমিকা ছিল অন্যতম। এই সময়কাল ধরেই কালনার (Kalna) ধাত্রীগ্রামে দীর্ঘ ৩০০ বছর ধরে পূজিত হয়ে আসছেন জগদ্ধাত্রী। এবারও এই পুজোকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের উন্মাদনা চোখে পড়ার মতো।
স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু হয়েছিল পুজো (Jagadhatri Puja 2024)
জনশ্রুতি রয়েছে, ধাত্রীমাতা জগদ্ধাত্রীর (Jagadhatri Puja 2024) নামেই এই জায়গার নামকরণ করা হয় ধাত্রীগ্রাম। কালনার এই জগদ্ধাত্রীর কতখানি মাহাত্ম্য, তা এর থেকেই অনুমেয়। স্থানীয় ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনশো বছর আগে নদিয়া জেলায় ব্রহ্মশাসন মহল্লা নামে এক জনপদ ছিল। সেখানকার চন্দ্রপতি গোষ্ঠীর এক পণ্ডিত সপরিবার ধাত্রীগ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন এক সময়ে। ধাত্রীগ্রামে শিক্ষার প্রসারে তিনি বেশ বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। কয়েকটি সংস্কৃত শিক্ষার গুরুকুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নিজের হাতে। সেখানে সংস্কৃত শিক্ষার পাঠ দেওয়া হতো। নবদ্বীপ থেকে সেই সময়ে পণ্ডিতরা এই টোলে এসে শিক্ষা দান করতেন। শোনা যায়, সেই সময়েই তৎকালীন চন্দ্রপতি গোষ্ঠীর এক গৃহবধূ স্বপ্নাদেশ পান এবং বাড়ির কাছে পুকুরে দেবী জগদ্ধাত্রীর সাক্ষাৎ মেলে। এর পরেই সেই স্থানে হোগলাপাতার ছাউনি দিয়ে গড়া হয় মণ্ডপ। সেখানেই প্রথম দেবীর পুজো শুরু হয়। জগদ্ধাত্রীর এক অন্য রূপে পুজো শুরু হয় এখানে। দেবী ছিলেন নরসিংহ বাহনে। স্থানীয় মানুষ এই জগদ্ধাত্রীকে ধাত্রীদেবী হিসেবে পুজো করতে শুরু করেন তখন থেকেই।
নবমীর দিন মায়ের কাছে কী কী ভোগ নিবেদন করা হয়?
বর্তমানে এলাকার বাসিন্দাদের মতে, এই দেবী খুবই জাগ্রত। অনেকে ধাত্রীগ্রাম (Jagadhatri Puja 2024) নামকরণের নেপথ্যে দেবীর মাহাত্ম্যকেই কারণ হিসেবে দেখেন। প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন রীতি মেনে এখনও এই পুজো করা হয়। নবমীর দিন এখানে মাছের নানা পদ ভোগ হিসেবে মায়ের কাছে অর্পণ করা হয়। পরে, মালশা করে সেই ভোগপ্রসাদ ভক্তদের বিতরণ করা হয়, যা নিতে ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। এই পুজোয় ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় বাসমতি চালের খিচুড়ি, তেরো রকমের ভাজা, তরকারি, পায়েস-সহ মাছের নানা পদ। পুজোর কয়েক দিন ধরে গ্রামজুড়ে থাকে উৎসবের মেজাজ। অনেকে মন্দিরের পাশের পুকুর থেকে স্নান করে নিজেদের মনস্কামনা পূরণের জন্য দন্ডিও কেটে থাকেন। আশপাশের প্রায় ২০ থেকে ২৫টি গ্রামের মানুষ অংশগ্রহণ করেন এই পুজোয়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল সংগ্রহ করা হয় দরিদ্র সেবার উদ্দেশ্যে। গ্রামজুড়ে এখন উৎসবের আমেজ।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours