মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সম্প্রতি রাজ্যের রেশন দোকানের ডিলারদের বিরুদ্ধে রেশনে কারচুপি করার অভিযোগ উঠছে। অনেক রেশন ডিলার, গ্রাহকদের রেশন সামগ্রিক বদলে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে, মূল সামগ্রী বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রেশনের বদলে নগদ টাকা, ভাবাই যায় না! অবাস্তব লাগলেও বাস্তবে এমনই ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সদর শহর বারাসতে (North 24 Parganas)। এই কারচুপিকে চোরাকারবার বলে তীব্র আক্রমণ করেছে বিজেপি। স্বয়ং তৃণমূলের খাদ্যমন্ত্রীর জেলায় যদি এই ঘটনা ঘটে, বাকি রাজ্যজুড়ে কী চলছে! বলে আঙুল তুলেছে বিজেপি। উল্লেখ্য করোনা কালেও তৃণমূলের নেতারা রেশনের চাল চুরি করেছেন বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিল।
রেশন দোকানের মালিক কে (North 24 Parganas)?
বারাসত (North 24 Parganas) পৌরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন পুকুর এলাকায় ন্যায্যমূল্যের রেশন দোকান রয়েছে সুজয় কুমার রায়ের। দোকানে ঢোকার মুখে সাইনবোর্ডে তা জ্বলজ্বল করছে। এই সাইনবোর্ডের পাশে আরও একটি সাইনবোর্ড লক্ষ্য করা গিয়েছে। যেটি আবার অনিমা রানি দাস নামে এক রেশন ডিলারের। অভিযোগ, বকলমে সেটিও ওই রেশন দোকানকে চালাচ্ছেন সুজয় কুমার। যা সম্পূর্ণ বেআইনি বলেই অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। নগদ টাকা দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও সরব হয়েছেন এলাকার গ্রাহকরা। রেশনে কারচুপি ঠেকাতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের খাদ্য দফতর প্রতিটি রেশন দোকানে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হয়েছে। অর্থাৎ, বায়োমেট্রিক ছাড়া কোনও গ্রাহকই এখন থেকে আর রেশন সামগ্রী নিতে পারবেন না। এছাড়াও 'দুয়ারে রেশন'-ও চালু হয়েছে কিন্তু, তারপরও অভিযোগ রেশন ডিলারদের একাংশের বিরুদ্ধে। যা স্পষ্টত দেখা গেল বারাসতে এই রেশন দোকানে।
কীভাবে চলছে এই কারবার
যে রেশন সামগ্রী গ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা, সেই সামগ্রী দোকানে মজুত করে রাখা হচ্ছে। আর তার বদলে সামান্য নগদ টাকা দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের। এমনই অভিযোগ উঠেছে রেশন ডিলার (North 24 Parganas) সুজয় কুমার রায়ের বিরুদ্ধে। আর যিনি, রেশন দোকানে বসে এই বেআইনি কারবার চালাচ্ছেন, তিনি আর কেউ নন, রেশন ডিলারের স্ত্রী সুজাতা রায়। তবে প্রথম নয়, দিনের পর দিন এই অনৈতিক কাজকর্ম অনেকদিন ধরে এলাকায় করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকার মানুষ।
কিভাবে এই কারবার চালাচ্ছেন রেশন ডিলারের স্ত্রী! জানা গিয়েছে, প্রথমে তিনি গ্রাহকের রেশন কার্ড জমা নিচ্ছেন। এরপর ক্যালকুলেটরে হিসাব করে নেওয়া হচ্ছে ওই গ্রাহকের রেশন সামগ্রীর পরিমাণ এবং বিক্রির মূল্য। সেই পরিমাপ মতো নগদ টাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকের হাতে। সবটাই চলছিল প্রকাশ্যে! ক্যামেরায় সেই ছবি ধরা পড়তেই সুর নরম করতে শুরু করে দেন রেশন ডিলারের স্ত্রী। পরে সংবাদমাধ্যমের চাপে বেআইনি কারবারের কথা স্বীকার করে নেন তিনি। এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই কিছুক্ষণের মধ্যে রেশন দোকান বন্ধ করে সেখান থেকে পালিয়ে যান সকলে।
খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ (North 24 Parganas) বলেন, "ঘটনাটি আমার কানে এসেছে। তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরেও বলব, সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। রেশনের বদলে কেন টাকা নিতে যাবেন! তার মানে তো অন্যায় কাজে তাঁরাও উৎসাহ জোগাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী যে উদ্দেশ্যে বিনামূল্যে রেশন ব্যবস্থা চালু করেছেন সেই উদ্দেশ্যই তো সফল হবে না। এটা আমাদের সকলের মাথায় রাখতে হবে।
বিজেপির বক্তব্য
অন্যদিকে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেছে গেরুয়া শিবির। এই বিষয়ে স্থানীয় (North 24 Parganas) বিজেপির যুব মোর্চার জেলা নেতা দেবাশিষ সরকার বলেন, “সরষের মধ্যেই যদি ভূত থাকে তাহলে সেই ভূত তাড়াবেন কীভাবে? তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সমস্ত স্তরেই দুর্নীতির বাসা বেঁধেছে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের , Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours