মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ২০১২ সালে টাইমস গ্রুপ পশ্চিমবঙ্গে চালু করে ‘এই সময়’ দৈনিক সংবাদপত্র (Ei Samay)। যার প্রাত্যহিক সার্কুলেশন ছিল প্রায় ১.৭ লাখ কপি। সম্প্রতি টাইমস গ্রুপের এই সংবাদপত্রকে কিনে নিয়েছে একটি কোম্পানি, যার বয়স মাত্র এক মাস। এই কোম্পানির মাথা হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি আইনজীবী সঞ্জয় বসু।
সঞ্জয় বসুর বিবৃতি
‘এইসময়’ পত্রিকাকে (Ei Samay) কিনে নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই লিঙ্কডিনে বিবৃতি আসে সঞ্জয় বসুর। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, হিমাদ্রি স্পেশালিটি কেমিক্যাল লিমিটেডের অনুরাগ চৌধুরীর সঙ্গে এই দৈনিকটি তাঁরা কিনে নিয়েছেন। আশ্চর্যজনকভাবে ওই বিবৃতিতে সঞ্জয় বসু দাবি করেন, "আজ আমরা খুব অল্প লোক একত্রিত হয়েছি এবং ‘এইসময়’ সংবাদপত্রটি অধিগ্রহণ করেছি।" এই অল্প কয়েকজন লোক বলতে তিনি কাদেরকে বুঝিয়েছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। কারণ যে কোম্পানি ‘এইসময়’ সংবাদপত্রকে অধিগ্রহণ করেছে তার বয়স এক মাসও নয়। এর পাশাপাশি ‘এই সময়’ এর কোন অ্যাসেট নেই।
রাতারাতি ১৮ কোটি বিনিয়োগ
পরবর্তীকালে দেখা যায় এক সপ্তাহ পরেই এই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা হয়েছে ১৮ কোটি টাকা। দেখা যাচ্ছে ওই ১৮ কোটি টাকার মধ্যে সঞ্জয় বসু বিনিয়োগ করেছেন ৯.৯২ কোটি টাকা। রকেট মার্কেটিং নামে একটি সংস্থা বিনিয়োগ করেছে ৫.৪১ কোটি টাকা এবং গৌতম আগরওয়াল নামে একজন বিনিয়োগ করেছেন ২.৭ কোটি টাকা।
কে এই সঞ্জয় বসু
সঞ্জয় বসু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। দুজনের আইনি পরামর্শদাতা হিসেবে তিনি কাজ করেন। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে সঞ্জয় বসু খবরের শিরোনামে আসেন, কারণ ইডি তখন পঞ্জি কেলেঙ্কারিতে তল্লাশি চালায় তাঁর বাড়িতে। সেই সময় ইডি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয় যে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে টাকা তোলার জন্য এই তল্লাশি করা হয়েছিল। ইডি তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানায় যে 'পিনকন গ্রুপ' নামের একটি চিট ফান্ড এইভাবে ১৫৬ কোটি টাকা তুলেছে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে এবং 'টাওয়ার ইনফোটেক লিমিটেড' নামের অপর একটি কোম্পানি ৬৩৮ কোটি টাকা তুলেছে একইভাবে। সেই সময় সঞ্জয় বসুর হয়ে ব্যাট ধরেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ইডির এই তল্লাশি অভিযানকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেন।
অনেক দিন ধরেই বিক্রির চেষ্টা করছিল টাইমস গ্রুপ
প্রসঙ্গত জানা গিয়েছে, টাইমস গ্রুপ ‘এইসময়’ সংবাদপত্রটিকে বিক্রি করার জন্য অনেক দিন ধরেই পরিকল্পনা করছিল। এমনটাই জানিয়েছেন পত্রিকার এক পুরনো কর্মচারী। আগেই ‘এইসময়’ সংবাদপত্রকে (Ei Samay) অপর একটি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল টাইমস গ্রুপ। কিন্তু সেই সংস্থা এটিকে কিনতে চাইনি। সূত্রের খবর, লকডাউনের পর থেকেই কাগজটি ক্রমশ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল এবং বর্তমানে অর্ধেক কর্মী নিয়ে কাজ চালান হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours