মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গুজরাট দাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi)ক্লিনচিট দেওয়ার বিরোধিতায় করা মামলা ধোপে টিকল না। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) খারিজ করে দিল জাকিয়া জাফরির (Zakia Jafri) দায়ের করা মামলা। গুজরাট হিংসার ঘটনায় নরেন্দ্র মোদি নির্দোষই। গুজরাট হাইকোর্টের (Gujarat High Court) রায়ই বহাল রাখল শীর্ষ আদালত (Supreme Court Of India)। এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “সত্য সোনার মতো জ্বলজ্বল করে বেরিয়ে এসেছে। ভগবান শিব যেমন বিষ পান করে তা কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন। মোদিও ২০ বছর ধরে নীরবে সব যন্ত্রণা সহ্য করেছেন।"
সংবাদসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এদিন অমিত শাহ বলেন, ‘‘বিজেপির উপর থেকে কলঙ্ক মুছে গিয়েছে’’। শাহ বলেন, ‘‘যাঁরা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের মোদিজির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। গুজরাট হিংসা নিয়ে মোদির বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সবটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। মোদিকে টার্গেট করা হয়েছিল, উনি দীর্ঘ লড়াই করেছেন। সব বিষ হজম করে লড়াই করেছেন। মোদিজিকে অনেক বদনাম করা হয়েছে। আজ উনি জয়ী হয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: গুজরাট হিংসায় মোদির ক্লিনচিট বহাল সুপ্রিম কোর্টের, বিরোধীদের নিশানা বিজেপির
গুজরাট হিংসা প্রসঙ্গে শাহ আরও বলেন, ‘‘সরকার হিংসা রুখতে সচেষ্ট ছিল। মুখ্যমন্ত্রী (তৎকালীন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি) বার বার শান্তির আবেদন করেছিলেন। মোদি সর্বদা আইনের পক্ষে ছিলেন। মিথ্যা তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হয়েছিল। মিডিয়া ও এনজিও এ কাজ করেছে। সিটের উপর কোনও প্রভাব খাটানো হয়নি।’’ শাহের অভিমত, “আমি ঘনিষ্ঠভাবে মোদিজিকে এই যন্ত্রণা সহ্য করতে দেখেছি, সত্যের পক্ষে থাকা সত্ত্বেও অভিযোগের মুখোমুখি হতে এবং বিচার প্রক্রিয়া চালু থাকায় তিনি কথা বলেননি। একমাত্র দৃঢ় হৃদয়ের মানুষই এটা করতে পারে। আজ আমরা যে সাক্ষাৎকার দিচ্ছি, আমি গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এবং পরে দলীয় প্রধান হিসেবে ২০০৩ সালেই তা করতে পারতাম। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত মোদিজি এমন কিছুই বলেননি যাতে কোনও প্রভাব না পড়ে। তিনি নীরবে সব সহ্য করেছেন,”
এদিন ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় ইডি জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকেও কটাক্ষ করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, "মোদীজি সিটেক সামনে হাজির হওয়ার সময় নাটক করেননি। আমার সমর্থনে বেরিয়ে আসুন, বিধায়ক-এমপিদের ডাকুন, ধর্না করুন...যদি সিট মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে চায় তবে তিনি নিজে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। প্রতিবাদ কেন?''
আরও পড়ুন: ডামাডোলের বাজারেও ঢালাও অর্থ-প্রস্তাব মঞ্জুর, মহারাষ্ট্রে হচ্ছেটা কী?
সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাজ্যে ২০০২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অভিযুক্ত আরও ৬৩ জনকে দেওয়া SIT-এর ক্লিনচিটকে মান্যতা দিয়ে জানায়, গোধরা ট্রেন হত্যাকাণ্ড যে ‘পরিকল্পিত’ তা প্রমাণ করা মতো কোনও উপাদান নেই। এই ঘটনায় প্রশাসনের কিছু কর্তার ব্যর্থতা থাকলেও সরকার সেনা ডাকতে বা দাঙ্গা পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নিতে কোনও দেরী করেনি, বলে জানান অমিত। কংগ্রেসকে নিশানা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘শুধু মোদির আমলেই হিংসা হয়েছে। অন্য কারও আমলে হয়নি? শিখ হত্যায় জড়িতরাই আঙুল তুলছেন। দাঙ্গার সময় পদক্ষেপ করতে দেরি করেনি গুজরাট সরকার। কিন্তু দিল্লিতে বহু শিখকে হত্যা করা হল, এখনও কেন কাউকে গ্রেফতার করা হল না? গুজরাট হিংসা কোনও মডেল নয়। কংগ্রেসের শাসনের পাঁচ বছর আর বিজেপির শাসনের পাঁচ বছর তুলনা করে দেখুন।’’ বিজেপির আমলে দাঙ্গা কম হয়েছে বলেও দাবি করেন শাহ।
+ There are no comments
Add yours