মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি ব্লকের অঞ্চল সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ওরফে ঝাড়েশ্বর সাঁতরার খুনের ঘটনায় সদ্য বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা ফটিক পাহাড়িকে গ্রেফতার করল সিআইডি। ফটিক ছাড়াও আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Gram Panchayat Election) পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠনের আগে দলীয় নেতা খুনে দলেরই এক নেতা গ্রেফতার হওয়ায় চরম বিড়ম্ভনার পড়েছে শাসক দল।
ঠিক কী অভিযোগ ছিল?
দলীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দাবিদার ছিল এই ফটিক। গত ১০ অগাস্ট কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন হওয়ার কথা ছিল। সভাপতি, সহ সভাপতি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বোর্ড গঠন হয়নি। পরে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Gram Panchayat Election) কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন নিয়ে মামলাও হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। মামলা করেছেন সমিতির ১৫ জন তৃণমূল সদস্য। এখানে সমিতির ২৭ জন সদস্যের মধ্যে তৃণমূলেরই ২৩ জন। এঁদের মধ্যে ‘আড়াআড়ি’ বিভাজন রয়েছে। তৃণমূলের একপক্ষ চেয়েছিল, সমিতির সভাপতি হোন ফটিক পাহাড়ি। আরেকপক্ষ চেয়েছিল, সভাপতি হোক উত্তম শীট। জেলা নেতৃত্বের ‘হুইপ’ ছিল উত্তমকে সভাপতি করার। দলেরই একাংশ সেই ‘হুইপ’ মানেননি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বোর্ড গঠন স্থগিত রাখা হয়। ঘটনাচক্রে, এর পরপরই ফটিককে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সুবিচার চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূলের ১৫ জন জয়ী প্রার্থী। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ফটিকও। ফলে, দলীয় নেতৃত্ব ফটিকের ভুমিকায় ক্ষুব্ধ। জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে খুন হয়েছিলেন মৃত্যুঞ্জয় সাঁতরা। কেশিয়াড়ির ডাডরা গ্রামের এই বাসিন্দা দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে নছিপুরে গিয়েছিলেন। রাতে বাইকে করে ফিরছিলেন তিনি। ভসরাঘাটে ঢোকার সময়ে তাঁর উপর চড়াও হয়েছিল সশস্ত্র দুষ্কৃতী দল বলে অভিযোগ। তাঁকে লক্ষ্য করে তির ছোঁড়া হয়েছিল। পায়ে তির লাগায় বাইক থেকে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর মাথায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এমনকী চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ। খুনের পর রাস্তার ধারে দেহ ফেলে রেখে দেয় দুষ্কৃতীরা। এই খুনের ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করে সিআইডি। নাম জড়ায় ফটিকের। বেশ কিছুদিন ধরেই মোবাইল বন্ধ রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল ফটিক। শুক্রবার গভীর রাতে দিঘা থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি তদন্তকারী দল।
কী বললেন তৃণমূল নেতৃত্ব?
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, দলীয় নেতা খুনের তদন্ত করছে সিআইডি। প্রমাণ হাতে পেয়ে যে জড়িত রয়েছে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পঞ্চায়েত (Gram Panchayat Election) সমিতিতে আমরাই বোর্ড গঠন করব।
কী বললেন বিজেপি নেতৃত্ব?
বিজেপি জেলা নেতা অরূপ দাস বলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জন্যই এই গ্রেফতার। আসলে পঞ্চায়েত (Gram Panchayat Election) সমিতির বোর্ড গঠনে দলের নির্দেশ তিনি মানেননি বলেই ৬ বছর আগের খুনের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হল।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours