মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নবরাত্রির (Navatari) শেষ দিনে পূজিতা হন মাতা সিদ্ধিদাত্রী (Durga Puja 2024)। এই দেবী মা দুর্গার নবম রূপ বলে পরিগণিত হন। ভক্তদের বিশ্বাস মতে, মাতা সিদ্ধিদাত্রী দেবাদিদেব মহাদেবের শরীরের অংশ। তাই তিনি অর্ধনারীশ্বর (Durga Puja 2024) নামেও প্রসিদ্ধ। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মহাবিশ্ব যখন তৈরি হয়নি, চারদিকে যখন ঘন অন্ধকার ছিল, প্রাণের চিহ্ন যখন কোথাও ছিল না, তখন একটি দৈব আলোকরশ্মি নারীমূর্তির আকার ধারণ করতে থাকে। ইনিই দেবী মহামায়া, মহাশক্তি। এই আদি দেবীর থেকেই জন্ম হয়েছিল ত্রি শক্তির-ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। বিশ্ব বা জগত সংসার পরিচালনার জন্য এই আদিমাতা ত্রিদেবকে দায়িত্ব দেন। এর পরে মহাসাগরের তীরে বসে বহু বছর ধরে মহামায়ার তপস্যায় রত ছিলেন ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর। তপস্যায় প্রসন্না হয়ে দেবী তাঁদের সামনে 'সিদ্ধিদাত্রী' রূপে প্রকট হন।
অসুরবধের আনন্দে নবমী তিথিতে মেতে ওঠেন দেবতারা
অসুরবধের আনন্দে নবমী তিথিতে কাত্যায়ন ঋষির আশ্রমে দেবীর বন্দনায় মেতে উঠেছিলেন দেবতারা। এখানেই নবমী পুজোর মাহাত্ম্য বা গুরুত্ব বলে পণ্ডিতদের ধারণা রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্র মতে, এদিন তাই দেবীর সম্পূর্ণ পুজো সম্পন্ন হয়। এই তিথিতেই বলি, হোম, কুমারী পুজো এবং ষোড়শ উপাচারের বিধান আছে। দেবীকে প্রসন্ন করতে নৈবেদ্যতে তিল নিবেদন করার রীতি দেখা যায়। ভক্তদের বিশ্বাস, মাতা সিদ্ধিদাত্রীর কৃপায় জীবনের সমস্ত কুপ্রভাব বিনষ্ট হয় এবং সফলতা আসে জীবনে। মাতা সিদ্ধিদাত্রী ভগবান ব্রহ্মাকে বিশ্বস্রষ্টার স্রষ্টা, ভগবান বিষ্ণুকে সৃষ্টি ও জগত রক্ষার ভূমিকা এবং দেবাদিদেব মহাদেবকে প্রয়োজন হলে জগৎ ধ্বংস করার ভূমিকা প্রদান করেন। ভক্তদের (Durga Puja 2024) আরও বিশ্বাস, দেবী সিদ্ধিদাত্রী পরবর্তীতে সরস্বতী, লক্ষ্মী এবং মাতা পার্বতী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। সিদ্ধিদাত্রী মাতা সর্বদাই ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের সঙ্গে শক্তি হিসেবে আছেন, এটা বোঝাতেই তিনি এই ত্রিদেবের পত্নী রূপে অবস্থান করেন। পৌরাণিক আখ্যান অনুযায়ী, দেবী সিদ্ধিদাত্রী জগৎ পরিচালনা, পালন এবং সংহারের জন্য অলৌকিক ক্ষমতা প্রদান করেছিলেন এই ত্রিদেবকে। অতিপ্রাকৃত এই আটটি শক্তিকে মার্কণ্ডেয় পুরাণে অষ্টসিদ্ধি বলা হয়েছে যা দেবী সিদ্ধিদাত্রী দেন।
সিদ্ধি আট প্রকারের-
অণিমা: এই শক্তির দ্বারা দেহকে আকারে ছোট করা যায়।
মহিমা: এই শক্তির দ্বারা দেহকে অসীম প্রসারিত করা যায়।
গরিমা: এই শক্তির দ্বারা দেহকে অকল্পনীয় ভারী করা যায়।
লঘিমা: এই শক্তির দ্বারা দেহ ভারহীন হয়ে যায়।
প্রাপ্তি: এই শক্তির দ্বারা সর্বভূতে বিরাজ করা যায়।
প্রাকাম্য: এই শক্তির দ্বারা সমস্ত মনের কামনা পূর্ণ করা যায়।
ঈশিত্ব : এই শক্তির দ্বারা প্রভুত্ব স্থাপন করা যায়।
বশিত্ব: এই শক্তির দ্বারা সকলকে পরাধীন রাখা যায়।
ভক্তদের বিশ্বাস, মার্কণ্ডেয় (Durga Puja 2024) পুরাণ অনুসারে যে ৮ প্রকার সিদ্ধি মাতা সিদ্ধিদাত্রী ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরকে প্রদান করেছিলেন, মহানবমীর (Navatari) দিন মাতা সিদ্ধিদাত্রীর আরাধনা করলে ভক্তদের মধ্যে এই সকল শক্তির প্রবেশ ঘটে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours