মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় লাগাতার রাজ্যজুড়ে আন্দোলনের চাপে শাসক দল তৃণমূল অনেকটাই ব্যাকফুটে। মমতা সরকার (Mamata government) নারী নির্যাতনের ঘটনায় ব্যাপক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। রাজ্যে তৃণমূল বিরোধী জনমতের জন্য ‘দুয়ারে উদ্যম’ (Duare Shilpo) পিছিয়ে দিল তৃণমূল সরকার। সূত্রের খবর, এই কর্মসূচি অগাস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে হওয়ার কথা ছিল। এখন সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দুর্গাপুজোর পর আগামী নভেম্বরের শেষে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন প্রশ্ন, কেন এমন সিদ্ধান্ত?
কেন পিছিয়ে দেওয়া হল (Duare Shilpo)?
মূলত রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উদ্যম’ (Duare Shilpo) পোর্টালে নথিভুক্ত করার জন্য এই শিবিরের আয়োজন করা হয়ে থাকে। সাধারণ এই পোর্টালে নথিভুক্ত না হলে ঋণ বা সরকারি ভর্তুকির সুবিধাগুলি পাওয়া যায় না। এমনকী রাজ্য এবং কেন্দ্রের অন্যান্য সুবিধা-সাহায্যগুলিও পাওয়া যাবে না। কিন্তু রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক আর্থিক দুর্নীতি, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ডাক্তারদের থ্রেট কালচার, চিকিৎসক তরুণীকে ধর্ষণ করে নির্মম ভাবে হত্যার ঘটনায় আপামর বাঙালি সমাজ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। পুলিশ প্রশাসনের দ্বারা জোর করে দাহকার্য করা, সংস্কারের নামে ক্রাইম সিন বদলে দেওয়া, আত্মহত্যাতত্ত্ব এবং মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata government) ধর্ষণের দাম হিসেবে ১০ লাখ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মতো নানা অপ্রীতিকর ঘটনা সাধারণ মানুষের মনে ব্যপক সাড়া ফেলেছে। প্রায় প্রত্যকে দিন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ধর্না, মানববন্ধন, মিছিলের ঘটনা ঘটে চলেছে কলকাতার রাজপথে। তাই রাজ্য সরকার বেগতিক বুঝতে পেরেছে এবং শিবিরে তেমন সাড়া মিলবে না বলেই ‘দুয়ারে উদ্যম’ পিছিয়ে দিয়েছে।
পরিস্থিতি অনুকুল নয়
রাজ্যের (Mamata government) ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “এখন পরিস্থিতি অনুকুল নয়। অবস্থা বদলে যাচ্ছে। নাম নথিভুক্তির জন্য এক-দেড় মাস লাগবে। ফলে নভেম্বরের শুরু থেকে ডিসেম্বরের ২৫ তারিখের মধ্যে ব্লক-স্তরে শিবির অনুষ্ঠিত হবে।” আবার রাজ্যের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ পাণ্ডে, নভেম্বর-ডিসেম্বরে শিবির হবে, এই কথাকে অস্বীকার করে বলেন, “কবে হবে এখনও ঠিক হয়নি। উন্নয়নের জন্য ব্লকেই শিবির (Duare Shilpo) করে পরিষেবা দেওয়া হবে।” একই ভাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও এক দফতরের আধিকারিক বলেন, “উদ্যম পোর্টালে দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ আট নম্বরে নথিভুক্ত হয়েছে। এই অবস্থান বদলাতে শিবির প্রয়োজন। রাজ্য যেহেতু ছোট শিল্পই বেশি করে জোর দিয়ে থাকে, তাই প্রোগ্রাম নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শিবির শুরুর সিদ্ধান্ত সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকুল নয়।”
আরও পড়ুনঃ টলিউডেও কি 'থ্রেট কালচার'? কাজ না পেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা কেশসজ্জা শিল্পীর
গত বছরে তেমন সাড়া মেলেনি
কেন্দ্রীয় তথ্য সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩ পর্যন্ত রাজ্যের ১২.৪ লক্ষ ছোট সংস্থা উদ্যমে নাম নথিভুক্ত করেছে। তবে নাবার্ডের তথ্যে সংখ্যাটা প্রায় ৯০ হাজারের বেশি। গত বছর এই উদ্যম বসেছিল জেলায় জেলায়, কিন্তু তেমন ভাবে কাঙ্ক্ষিত ফল মেলেনি। তাই এই বছর আরও একবার ‘দুয়ারে উদ্যম’ (Duare Shilpo)-এর ভাবনা নেওয়া হয়েছে। তবে অভয়ার ন্যায় বিচারের আবহে পুজোর পর কতটা বাস্তবে সম্ভব, সেটাও দেখার বিষয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours