মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে (Kakdwip Hospital) বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের (Birupaksha Biswas) বিরোধিতায় বিক্ষোভ দেখান জুনিয়র চিকিৎসকরা। প্রসঙ্গত, আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে বদলি করা হয় কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। বিক্ষোভকারীদের একটাই দাবি, কোনওভাবেই ‘ভাইরাস’ বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে (Kakdwip Hospital) কাজে যোগদান করতে দেওয়া হবে না। ঠিক এই দাবিতেই জুনিয়র ডাক্তাররা বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) সিএমওএইচ দফতরের বাইরে। এর পাশাপাশি কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বাইরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে (Birupaksha Biswas) কোনওভাবেই ঢুকতে দেওয়া হবে না হাসপাতালে- এই দাবিতে আজ বুধবার বিকেলে গণ-আন্দোলন ও ঘেরাও কর্মসূচিরও ডাক দিয়েছেন চিকিৎসক পড়ুয়ারা।
জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে কলুষিত করবেন বিরুপাক্ষ!
বিক্ষোভকারীদের দাবি, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে বদলি হওয়া বিরূপাক্ষ (Birupaksha Biswas) এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে কলুষিত করবেন। তাই তাঁকে কোনওভাবে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হবে না। প্রসঙ্গত বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে বদলি করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ১৩ অগাস্ট অর্থাৎ আজ থেকে ঠিক ১৩ মাস আগে। কিন্তু প্রভাবশালী ও বাহুবলী ডাক্তার নেতা, সন্দীপ ঘনিষ্ঠ বিরূপাক্ষ নিজের সেই বদলি নির্দেশকেও আটকে রেখেছিলেন। সিবিআইয়ের হাতে সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির পর মঙ্গলবার আরজি করে প্রাক্তন অধ্যক্ষকে সাসপেন্ড করে স্বাস্থ্য দফতর। তারপরেই আসে বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বদলির নির্দেশ। গণ-আন্দোলনের চাপে পড়েই কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত, এমনটা বলছেন কেউ কেউ। বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের (Birupaksha Biswas) বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এক ডাক্তারি ছাত্রকে রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়ার হুমকির অডিও কল সম্প্রতি ভাইরাল হয় (মাধ্যম সত্যতা যাচাই করেনি), সেখানকার কণ্ঠস্বরকে বিরূপাক্ষ বলে দাবি করতে শোনা যায়। এছাড়া আরজি কর কাণ্ডের পরের দিন সেমিনার রুমে দেখা যায় বহিরাগত বিরুপাক্ষকে। এখানেও ওঠে একাধিক প্রশ্ন।
থ্রেট কালচারে'র দুই কালপ্রিট
বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের (Birupaksha Biswas) বিরুদ্ধে ডায়মন্ড হারবারের সিএমওএইচ এবং ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে 'থ্রেট কালচারে'র দুই কালপ্রিট হলেন এসএসকেএমের পিজিটি চিকিৎসক অভীক দে এবং সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। সেই 'থ্রেট কালচার' ডায়মন্ড হারবারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ঢুকতে দেবেন না-বলে জানিয়েছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, জুনিয়র ডাক্তাররা অভিযোগ করেছেন, ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজের গাইনোকলোজি বিভাগের প্রাক্তন এইচওডি অধ্যাপক চিকিৎসক সমাদৃতা চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়ার পিছনেও বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের (Birupaksha Biswas) হাত ছিল। তাঁকেও হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয় বলে অভিযোগ।
ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ডাক্তার পড়ুয়ারা (Diamond Harbour)
জুনিয়র চিকিৎসক সাগ্নিক মিদ্দা বলেন, ‘‘বিরূপাক্ষর (Birupaksha Biswas) অর্ডার এসেছিল ২০২৩ সালে। এতদিন নিজের প্রভাব খাটিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে থেকে গিয়েছিলেন। এখন সেখানকার আন্দোলন ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। এতদিনে উনি ট্রান্সফার নিতে বাধ্য হয়েছে। ওখানকার ছাত্ররা জনিয়ে দিয়েছে, কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিক বা না নিক, পড়ুয়ারাই যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে। আমাদের গায়নো বিভাগের প্রাক্তন এইচওডি সমাদৃতা ম্যাডামকে থ্রেট দিয়েছিলেন বিরূপাক্ষ (Birupaksha Biswas)। তাই ওনার সঙ্গে সম্পর্ক পুরনো দিনের। আর উনি যদি এখানে আসেন সম্পর্ক কীভাবে ঝালিয়ে নিতে হয় আমরা জানি। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত এই অর্ডার ফিরিয়ে নেওয়া না হচ্ছে আমাদের অবস্থান চলবে।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours