মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কোনও মহিলা সঙ্গ দিতে রাজি হওয়া মানেই যে সে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হতে রাজি, তা কখনওই নয়। একটি যৌন হেনস্থা সংক্রান্ত মামলায় এমনই রায় দিল দিল্লির উচ্চ আদালত (Delhi High Court)।
মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের মামলায় বার বার নির্যাতিতার আচরণ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। অভিযুক্ত সঞ্জয় মালিক ওরফে সন্তন সেবক দাসের আইনজীবী আদালতে (Delhi High Court) এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে, যা ঘটেছে তা দু’জনের সম্মতিতে। ওই মহিলা দীর্ঘদিন ধরে তাঁর মক্কেলের সঙ্গে সম্পর্কে ছিল। এক্ষেত্রে ধর্ষণের অভিযোগ খাটে না। কিন্তু বিচারপতি অনুপ জয়রাম ভামবানি অভিযুক্তের আইনজীবীর বক্তব্যে সন্তুষ্ট হননি। তিনি সঞ্জয় মালিকের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বলেন, ‘একজন মহিলা কোনও পুরুষের সঙ্গে থাকতেই পারেন। সেই সম্পর্ক চলতে পারে বহুদিন। তার মানে এটা ভেবে নেওয়া ঠিক নয় যে, ওই মহিলা পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে সম্মত।’
আরও পড়ুন: সমলিঙ্গে বিবাহের আইনি বৈধতা সংক্রান্ত মামলা এবার সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে
অসহায় বিদেশিনীকে যৌন হেনস্থা
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালে। স্বামীর প্রয়াণের পর চেক প্রজাতন্ত্রের ওই মহিলা ভারতে এসেছিলেন হিন্দু রীতি মেনে তাঁর স্বামীর অস্থি গঙ্গায় বিসর্জন দিতে। তখনই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় সঞ্জয় মালিকের। বন্ধুত্ব ক্রমশ গাঢ় হতে থাকে। আর সেই সুযোগেই ওই মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, প্রথমে দিল্লির এক হোস্টেলে তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন সঞ্জয় মালিক। তারপর আরও দু’বার তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ। একবার উত্তর প্রদেশের প্রয়াগ রাজে, আর একবার বিহারের গয়ায় একটি হোটলে। শেষ পর্যন্ত ওই মহিলা সঞ্জয় মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। সেটাও অনেক দেরিতে, ২০২২ সালে। সেই মামলারই শুনানি চলছে দিল্লির উচ্চ আদালতে। অভিযুক্তের আইনজীবী মক্কেলের জামিনের আবেদন জানাতে গিয়ে নানা যুক্তি খড়া করছিলেন বিচারপতির সামনে। তবে তা গ্রাহ্য হয়নি। অভিযুক্তের বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি থাকলেও, একজন অসহায় বিদেশি নাগরিকের সঙ্গে যৌন হেনস্থা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে মত বিচারপতির। সেই কারণে তিনি জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours