মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজভবন-নবান্নর দ্বৈরথ ফের অন্য মাত্রা পেল। এবার দুর্গাপুজো নিয়েও মমতা-রাজ্যপালের লড়াই! সেটাই দেখতে চলেছে রাজ্যবাসী। দুর্গাপুজোর সময় হয়েছে। দুর্গাপুজোর জন্য বাংলার বিভিন্ন দুর্গাপুজোর আয়োজকদের বিশেষ সম্মান দিয়ে থাকে রাজ্য সরকার। মণ্ডপ সজ্জা থেকে প্রতিমা, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দুর্গাপুজোর আয়োজকদের ‘বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান' দেয় রাজ্য সরকার। এবার বাংলার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও (CV Ananda Bose) দেবেন 'দুর্গাভারত' সম্মান। তবে, উপলক্ষ বাংলার দুর্গাপুজো হলেও, এই সম্মান শুধু বঙ্গবাসীদের জন্য সীমিত নয়। গোটা দেশের যে কোনও রাজ্যের কৃতীরা এই সম্মান পেতে পারেন। শিক্ষা, সাহিত্য, বিজ্ঞান থেকে শুরু করে গবেষণা, তথ্য-প্রযুক্তি, সমাজসেবা, বাণিজ্য, চিকিৎসা, যে-কোনও ধরনের শিল্প এবং আর বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতীরা এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হতে পারেন। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
রাজভবন থেকে কী কী পুরস্কার দেওয়া হবে?
রাজভবন থেকে ইতিমধ্যেই মনোনয়নের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কোনও ব্যক্তি বিশেষ বা নাগরিক সমাজ বা কোনও প্রতিষ্ঠান রাজভবনের এই সম্মাননার জন্য মনোনয়ন করতে পারেন। মনোনয়ন পাঠানো শেষ দিন ৩০ সেপ্টেম্বর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাজের বিকাশে বিশেষ উদ্যোগকে সম্মানিত করবেন রাজ্যপাল (CV Ananda Bose)। 'দুর্গা ভারত সম্মানে' বিভিন্ন ধরনের সম্মাননার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। 'দুর্গা ভারত পরম' সম্মান, 'দুর্গা ভারত' সম্মান ও 'দুর্গা ভারত' পুরস্কার এই তিন ধরনের সম্মাননার ব্যবস্থা করেছে রাজভবন। পুরস্কার মূল্য হিসেবে দেওয়া হবে, এক লক্ষ,পঞ্চাশ হাজার ও ২৫ হাজার টাকা করে।
রাজভবনের এই পুরস্কার নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নবান্ন-রাজভবনের দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখানেই শেষ নয়, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও রাজভবন-নবান্নের বিরোধ চরমে ওঠে। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে বেলাগাম অশান্তি ও পঞ্চাশ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় বয়ে যায়। তখন সরকারকে ধারাবাহিক ভাবে তীব্র আক্রমণ করেন। পালটা জবাব দেয় তৃণমূল। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল (CV Ananda Bose) হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর নবান্নর সঙ্গে রাজভবনের মসৃণ সম্পর্ক দেখা গেলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিক সেল চালু করেছে রাজ্যপাল রাজভবনে। কখনও ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ জানানোর জন্য ‘আমনে সামনে’ পদক্ষেপ, আবার কখনও গ্রিভান্স সেলও চালু করেছেন রাজ্যপাল। সম্প্রতি, আমেরিকা সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও ডেঙ্গি পরিস্থিতি এবং রাজ্যের আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে সেই সফর বাতিল করেছিলেন রাজ্যপাল। আর এবার দুর্গাপুজোকে মাথায় রেখে এই বিশেষ সম্মান রাজনৈতিকভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব উদযাপনে শামিল হতে চায় রাজভবনও। ফলে, বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব নিয়েও স্নায়ু যুদ্ধ শুরু হল বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। কারণ, রাজভবনের তরফে এমন উদ্যোগ আগে কখনওই নেওয়া হয়নি। চলতি বছরের রাজভবনের এই উদ্যোগ নবান্ন টক্কর দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে ওয়াকিবহল মহল মনে করছে। রাজভবনের এই পুরস্কার নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours