মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হার্ট অ্যাটাকের (Heart Attack) পর বছর পঁয়তাল্লিশের রোগীকে যখন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়, তখন তাঁকে বাঁচাতে স্টেন্টিং করা হয়েছিল। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ওই রোগী অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ মাত্র এক সপ্তাহ আগেও তাঁর শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ছিল ২০০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের থেকেও কম। কিন্তু আসল সত্যটা হল কোলেস্টেরলের মাত্রা সব সময় হার্টের বাস্তব অবস্থাকে তুলে ধরে না। কারণ রক্তে প্রবাহিত কোলেস্টেরল যে কোনও সময়ই জমাট বেঁধে যেতে পারে ধমনীতে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোলেস্টেরলের মাত্রার হার কোনও ক্ষেত্রেই নিরাপদ, তা বলা যাবে না। সাধারণ মানুষ মূলত যে ভুলটি করে, তা হল কোলেস্টেরলের (cholesterol) মাত্রা দিয়ে হার্টের ভালো বা মন্দ বিচার করে। কিন্তু হার্টের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানতে রোগীকে অন্যান্য লক্ষণগুলির ওপরও নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL), ভাল কোলেস্টেরল (HDL) এর অনুপাতের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ভারতীয়দের শরীরে এইচডিএল যেহেতু কম, সেহেতু ৫০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার ক্ষতিকর কোলেস্টেরলও (LDL) এদেশের মানুষের জন্য নিরাপদ নয়। ভারতীয়দের ক্ষেত্রে এই মাত্রা কখনওই ৪৫ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার অতিক্রম করা উচিত নয়। এজন্য আমাদের শুধুমাত্র ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রার ওপর লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ওজন কমাতে চাইলে আজ থেকে সঙ্গী করুন চকোলেট ও রেড ওয়াইন!
আন্তর্জাতিক (International) মাপকাঠি অনুযায়ী, মানুষের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ৭০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার থাকা উচিত। কিন্তু ভারতীয়দের ক্ষেত্রে এই মাত্রা ৫০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটারের নীচে থাকা প্রয়োজন। এমন অনেক রোগীর আছেন যাঁদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক, অথচ তাঁদেরও হৃদরোগে (Heart Disease) আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ ভারতীয়দের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বেশি। এছাড়াও দৈনন্দিন জীবনে কাজের চাপ, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস এবং জিনগত কারণও হার্টের সমস্যার জন্য দায়ী। যদি রোগী মনে করেন যে তাঁর শরীরে কোলেস্টেরল মাত্রা স্বাভাবিক থাকায় তাঁর হৃদরোগের ঝুঁকি নেই, তাহলে ভুল ভাববেন। যাঁরা শারীরিকভাবে সুস্থ কিন্তু অত্যধিক ধূমপান (Smoking) ও মদ্যপান করেন, তাঁদের প্রতি ছ মাস পর পর হৃদযন্ত্র পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। যাঁরা স্থুলকায়, তাঁদের দৈনিক ৩০ মিনিট হাঁটা উচিত। কারণ তাঁদেরও হৃদরোগের আশঙ্কা প্রবল।
+ There are no comments
Add yours