মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কলাগাছের ছাল ছাড়িয়ে সুতো! আর সেই সুতোয় তৈরি হয় চট, গামছাসহ আস্ত জ্যাকেট। শুনতে খানিকটা অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। কলাগাছের ছাল ছাড়িয়ে সুতো তৈরির কারিগরের নাম খিরোদা রায়। একসময় সুনাম অর্জন করেছেন জেলা শিল্প দফতর থেকে শুরু করে শিলিগুড়ি, কলকাতা এমনকী দিল্লিতেও। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থানাধিকারী হয়েছেন একাধিকবার। কিন্তু, সেসব সার্টিফিকেট বর্তমানে ফাইলবন্দি। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট (Balurghat) লোকসভার কুশমুন্ডি ব্লকের কচরা গ্রামে এই বিরলতম শিল্পের শিল্পী খিরোদা রায়কে মনে রাখেনি কেউ। মেলা করলেও এখন জোটে না টাকা। তাই, সরকারের আর্থিক সাহায্যের আশায় বুক বেঁধেছেন তিনি।
কলা গাছের ছালের সুতোয় তৈরি হয় চট, গামছাসহ আস্ত জ্যাকেট (Balurghat)
কচরা (Balurghat) গ্রামে বাবার বাড়িতে সরু সুতো তৈরির কাজ শিখেছিলেন আগেই। হাটে ধোকরা বিক্রির অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। কিন্তু, কম খরচে নতুন কিছু করার ইচ্ছে ছিল ছোটবেলা থেকেই। বিয়ের পর ফতেপুর গ্রামে রাস্তার ধারে এক চিলতে ঘরে স্বামী সহ দুই ছেলেমেয়েকে বড় করতে করতে নাম লেখান জেলা শিল্প দফতরে। এরপর ১৯৯০ সালের শেষের দিকে কলাগাছের ছাল ছাড়িয়ে তৈরি করেন চিকন সুতো। সেই সুতোয় তৈরি করেন চট, গামছাসহ ছোট ছোট ব্যাগ এমনকী জ্যাকেট পর্যন্ত। এখনও মেলা করেন। তবে, মেলার সরকারি টাকা পেতে ঘাম ঝরে যায়। এখন স্বামী সন্তান নিয়ে ফতেপুর ছেড়ে ডেরা বেঁধেছেন বালাপুকুর গ্রামে। রুগ্ন শরীর নিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে রান্না করে যৎসামান্য টাকায় দিনযাপন করেন। এখনও তিনি বিভিন্ন সরকারি মেলায় নিজের তৈরি সামগ্রী বিক্রি করেন।
আরও পড়ুন: কয়লাকাণ্ডে ১০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেলেন অনুপ মাঝি
সরকারি সাহায্যের আর্জি
শিল্পী খিরোদা রায় বলেন, আমার আফসোস কলাগাছের ছাল ছাড়িয়ে সুতো তৈরির মর্যাদা দিতে পারল না কেউ। সরকারি দফতর সবই জানে। কিন্তু, নতুন প্রজন্মকে এই শিল্প শেখানোর কোনও ধারাবাহিক কর্মশালার আয়োজন করেনি। চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে এই শিল্প। সরকারি সাহায্য পেলে এই শিল্প বাঁচানো সম্ভব।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours