মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ ঢালাও বিদ্যুৎ পুড়ছে কিন্তু তার বিল মেটাচ্ছে না রাজ্য সরকারের (West Bengal Government) অধীনে থাকা সংস্থাগুলি। পঞ্চায়েত দফতরেই বকেয়া ৪০৮ কোটি টাকা। এই টাকা উদ্ধার না হলে কেন্দ্রীয় সরকার (Modi Government) আর কোনও অনুদান বা ঋণ দেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ দফতর পঞ্চায়েত দফতরের কাছে বকেয়া টাকা এখনই মিটিয়ে দিতে বলেছে। না মেটালে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা (WBSEDCL) চালানো যে মুশকিলের হয়ে দাঁড়াবে সে কথাও অকপট জানিয়ে দিয়েছেন বণ্টন সংস্থার শীর্ষ কর্তা। বিদ্যুৎ দফতরের চিঠি মাথায় হাত পঞ্চায়েত দফতরের। একে তো ১০০ দিনের টাকা, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার টাকা বন্ধ। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো রাজ্য সরকারেরই অপর দফতর ৪০৮ কোটি টাকা চেয়ে তাগাদা দেওয়ায় মহা ফাঁপড়ে পড়েছে সরকার। টাকা না মেটালে যদি পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দেখা যায়, তা হলে বিপদ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পঞ্চায়েত কর্তারা।
আরও পড়ুন: পুজোর মাসে বেতন দিতে ৪৫০০ কোটি ধার করছে রাজ্য, খরা কোষাগারে
পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডিরেক্টর শান্তনু বসু গত ১২ সেপ্টেম্বর পঞ্চায়েত সচিব পি উলগনাথনকে লিখেছেন, পঞ্চায়েত দফতরের কাছে বণ্টন সংস্থার ৪০৮ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এই টাকা অবিলম্বে মেটাতে হবে। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অনুদান এবং ঋণ দেওয়ার জন্য অধীনস্ত সংস্থার বকেয়া আদায়ের শর্ত দিয়েছে। তাছাড়া বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার আর্থিক ভার কমাতে ও গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে বকেয়া টাকা পাওয়া জরুরি। বিদ্যুৎ দফতরের চিঠি পেয়ে পঞ্চায়েত দফতর করণীয় ঠিক করতে পারছে না। কারণ, বকেয়া মেটানোর ৪০৮ কোটি টাকা তাদের হাতে নেই, না মেটালে পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামে লোডশেডিং শুরু হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
বিদ্যুৎ দফতরের হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বকেয়া রয়েছে বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমান সদর, হুগলি, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ জেলায়। এই সব জেলায় গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি বা জেলা পরিষদগুলি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটায়নি। এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাই খেসারতও বেশি দিতে হবে।
বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, আর্থিক সংকটে ভুগছে সংস্থা। এর মধ্যেই হাইকোর্টের রায় মেনে ডিএ মেটাতে হয়েছে কর্মীদের। আর্থিক সংস্থাগুলিও ঋণ দিতে চাইছে না। এমন অবস্থায় একমাত্র ভরসা কেন্দ্রের অনুদান। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন সংস্থার থেকে বকেয়া আদায় করে আর্থিক ভিততি মজবুত করলে তবেই কেন্দ্রীয় সাহায্য মিলবে। এমন অবস্থায় রাজ্যের দুই দফতর নিজেরাই আকচাআকচিতে জড়িয়েছে। এমনকী গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে হলে টাকা মেটাতে হবে এমন হুমকিও দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর (West Bengal State Electricity Department)।
+ There are no comments
Add yours