মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) গত ১২ ফেব্রুয়ারি আরামবাগ সফরে গিয়ে ঘোষণা করলেন, ১২৫০ কোটি টাকা দেবেন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে। তাঁর এই ঘোষণার পরই অভিমানী দেব গলে জল হয়ে গেলেন, যিনি মাত্র ৪ দিন আগেও বেঁকে বসেছিলেন। জানা গেল, ফের ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন দীপক অধিকারী ওরফে অভিনেতা দেব! কিন্তু মমতার এই ঘোষণার পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ১০ বছরের সাংসদ দেব কি জানতেন না, ২০২৪-২৫-এর রাজ্য বাজেটে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মাত্র ১০ কোটি! তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১২৫০ কোটি পাবেন কোথা থেকে? নাকি ছেলে ভোলানোর মতো ১২৫০ কোটির টোপ দিয়ে দেবের মান ভাঙালেন!
ভোট বৈতরণী পারের বরাবরের হাতিয়ার (Mamata Banerjee)
২০১১ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে জিততে এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানকেই হাতিয়ার করেছিলেন। তিনি এই প্রকল্প নিয়ে দু'হাতে প্রতিশ্রুতি বিলিয়েছিলেন। অথচ বাস্তব সত্য হল, গত ১২ বছরে যে বাজেট হয়েছে, তার মধ্যে ৮ বার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের জন্য কোনও বরাদ্দই ছিল না। রাজ্য বাজেটে ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫, ২০১৫-১৬, ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ সালে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে বরাদ্দ (Mamata Banerjee) ছিল শূন্য। ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে ঘাটাল কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হলেন অভিনেতা দেব। এরপর শুরু হল আবার প্রতিশ্রুতি বিলানো। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মানস ভুঁইয়া, দেব কেউ বাদ যান না। একের পর সভায় ঘোষণা করলেন, সংসদে তৃণমূলের প্রার্থী জিতলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান হবেই। ঘাটালের মানুষকে আর ফি বছর বন্যায় ভাসতে হবে না। দেব জিতলেন, অথচ ২০১৪-১৫ বাজেট বরাদ্দেও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান শূন্য!
বাজেট ঘোষণার অর্ধেকও বরাদ্দ হয় না
২০১৯-এ ফের লোকসভা নির্বাচন। ঘাটালের ভোটাররা যে ব্যাপক ক্ষুব্ধ, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি মমতার। ২০১৮-১৯ সালে প্রথমবার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কপালে শিকে ছিঁড়ল বাজেটে। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২৪ ২৫ সালের মধ্যে বাজেটে এই প্ল্যানের জন্য মোট অর্থ বরাদ্দ ঘোষিত হল ৪৭০ কোটি টাকা। কিন্তু বাস্তবে দেওয়া হল অর্ধেকও নয়, মাত্র ২০৭ কোটি ৫৭ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা। এর মধ্যে কত টাকা কোথায় খরচ হয়েছে, তার কোনও হিসেবও নাকি জমা পড়েনি অর্থ দফতরে (Mamata Banerjee)।
সরকারি মিথ্যাচার? (Mamata Banerjee)
২০২১ এবং ২০২২ পরপর দু'বছর ব্যাপক বন্যা হয়েছিল ঘাটাল এলাকায়। ক্ষতির পরিমাণও কম ছিল না। ফলে সেচ দফতর বাজেট বরাদ্দ হিসেবে আগের থেকে কিছুটা বেশি টাকাই পেয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিনেতা দেবের বাড়ির কাছে পায়ের পাতা ভেজানো জলে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন ওই বরাদ্দ এবং জানিয়েছিলেন, তিনি ঘাটালের পাশে আছেন। ঠিক তার পরের বছর থেকে শুরু হয়ে যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারি তামাশা! বাজেট বরাদ্দই নেমে আসে এক লাফে ১০ কোটিতে।
ফলে সরকারি মিথ্যাচারের প্রকৃষ্ট উদাহরণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান! এমনটাই মনে করছেন রাজ্যবাসী।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours