মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জলের দরে সোনার ঠাকুরের মূর্তি বিক্রির টোপ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক চক্রের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Paraganas) সুন্দরবন অঞ্চল কুলতলি, গোসাবা সহ একাধিক জায়গায় প্রতারণা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। লোক দেখানো করে পুলিশ একজনকে ধরেছে। বাকিদের ধরার বিষয়ে পুলিশের কোনও হেলদোল নেই। ফলে, এই চক্রের ফাঁদে পড়ে আরও হাজার হাজার মানুষের সর্বশান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কীভাবে প্রতারণা করা হত?
দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Paraganas) সুন্দরবন অঞ্চলের বাসিন্দারা অধিকাংশই মৎসজীবী। মাছ ধরার কারণে তাদের মাঝে মধ্যেই বাঘের হামলার মুখে পড়তে হয়। সেই হামলা থেকে বাঁচতে তাঁরা গঙ্গাদেবীকে প্রতিনিয়ত স্মরণ করেন। তাঁদের কাছে প্রতারকরা সোনার গঙ্গাদেবীর মূর্তি বিক্রির টোপ দিত। তবে, শুধু গঙ্গাদেবী নয় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, মহাদেব সকলের মূর্তি প্রতারকরা বিক্রি করত। তাঁদের সেই বিশ্বাসকে পুঁজি করেই সামাজিক মাধ্যমে সম্পর্ক তৈরি করে তাঁদের গঙ্গাদেবীর সোনার মূর্তি বিক্রি করার প্রলোভন দেখানো হত। প্রতারকরা বক্তব্য ছিল, সোনার মূর্তিটি বিদেশ থেকে আনা। বাজারে কয়েক লক্ষ টাকা দাম। কাউকে ৩০ হাজার, কাউকে আবার ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করত। বিক্রির আগে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করার জন্য ঠাকুরের হাতের একটি অংশ তাদেরকে দেওয়া হত, যা ছিল সোনার। সেই হাত তাঁরা কোনও সোনার দোকানে গিয়ে দেখিয়ে পরীক্ষা করালে তাঁদের আরও বিশ্বাস জন্মাতো। অল্প টাকায় সোনার মূর্তি পাচ্ছি দেখে অনেকেই প্রতারকদের খপ্পরে পড়তেন। তারপর নির্দিষ্ট জায়গায় যখন তাঁরা মূর্তি নেওয়ার জন্য হাজির হতেন, তখন তাদের সোনার বদলে পিতলের মূর্তি দিয়ে টাকা নিয়ে পালিয়ে যেত দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের আগে এই ধরণের প্রতারণা চক্রের বাড়বাড়ন্ত দেখা দিয়েছিল এই এলাকায়। তখন পুলিশ অভিযান চালিয়ে এই চক্রে জড়িত থাকায় মোট ২৮ জনকে গ্রেফতার করে। তারপর এই প্রতারণা চক্র কিছুদিন বন্ধ থাকলেও পুলিশের অপদার্থতায় সম্প্রতি ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন। এই বিষয়ে কুলতুলি থানায় একাধিক অভিযোগও দায়ের হয়েছে। এরপরই পুলিশ ক্রেতা সেজে জালাবেড়িয়া মোড়ে তালিমুল নামে এক প্রতারককে পুলিশ গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে একটি ওয়ান সাটার, লাইভ কার্তুজ, একটি বাইক ও দুটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
কী বললেন বারুইপুরের এসডিপিও?
সোনার মূর্তি বিক্রির বড়সড় চক্র রয়েছে তা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর পুলিশ জেলার এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, এই ঘটনায় একটি বড় চক্র কাজ করছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কারা রয়েছে তা জানতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours