Sukanya Mondal: ‘‘কে জানে?’’ উত্তর জানতে কেষ্ট-সুকন্যা-মণীশকে মুখোমুখি জেরা করবে ইডি?

সুকন্যা মণ্ডল তদন্তের সব প্রশ্নই এড়িয়ে গেছেন একটা উত্তরে, 'বাবা সব জানে'...
sukanya-anubrata
sukanya-anubrata

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গরুপাচার মামলার তদন্তে আগেই গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর হিসেবরক্ষক মণীশ কোঠারি। গতকাল সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়েছে কেষ্ট-কন্যা সুকন্যাকেও (Sukanya Mondal)। সূত্রের খবর, বাবা-মেয়ে এবং তাঁদের হিসাবরক্ষককে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইডি। কারণ এর আগে সুকন্যা মণ্ডল তদন্তের সব প্রশ্নই এড়িয়ে গেছেন একটা উত্তরে, 'বাবা সব জানে'। তাই এবার কে জানে তা জানতে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা-পর্ব শুরু করতে চায় তদন্তকারী সংস্থা।

আজ আদালতে পেশ সুকন্যাকে (Sukanya Mondal)

বুধবার দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে তলব করা হয়েছিল সুকন্যাকে (Sukanya Mondal)। বেশ কিছু বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা তাঁর থেকে কোনও সদুত্তর পাননি। শেষ পর্যন্ত সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। রাত্রে তাঁকে খেতে দেওয়া হয়েছে রুটি, সবজি ও স্যুপ। এক বান্ধবী তাঁর জামাকাপড় পৌঁছে দেন প্রবর্তন ভবনে। জানা যাচ্ছে, আজ রাউজ এভিনিউ কোর্টে তাঁকে পেশ করা হবে। অন্দরের খবর, তাঁকে পাঁচদিনের হেফাজতে চাইতে পারে ইডি।

কেষ্ট-কন্যাকে (Sukanya Mondal) জেরায় তিন মহিলা অফিসার

তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেষ্ট কন্যাকে (Sukanya Mondal) এদিন জেরা করেন তিনজন মহিলা অফিসার। মণীশ কোঠারিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি জানিয়েছিলেন, অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর কন্যা যে সমস্ত তথ্য পাঠাতেন তাঁর কাছে, সেই সমস্ত তথ্য অনুযায়ী সমস্ত অ্যাকাউন্ট দেখে দিতেন তিনি। এক্ষেত্রে বুধবার যখন অনুব্রত মণ্ডলের কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে নানা হিসেবের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, সেই প্রসঙ্গে সুকন্যা বলেন, ''এই বিষয়ে আমি কিছু জানি না। যা বলার আমার বাবা এবং মণীশ কোঠারি বলতে পারবেন।''

কেন গ্রেফতার সুকন্যাকে (Sukanya Mondal)?

জানা যাচ্ছে, সুকন্যাকে গ্রেফতার করার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, গরু পাচার মামলার তদন্তে অসহযোগিতা করা, তদন্তের কাজে বিভ্রান্তি তৈরি করা এবং তদন্তকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করেছেন সুকন্যা (Sukanya Mondal)। সূত্র মারফত এমনই জানা যাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এর আগেও একাধিকবার কেষ্টকন্যাকে দিল্লিতে ইডির অফিসে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, সেই সময় গরহাজিরার যে কারণ তদন্তকারীদের কাছে উল্লেখ করা হয়েছে, সেই কারণও সঠিক বা গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

কেষ্ট-কন্যার (Sukanya Mondal) নামে বিপুল জমির হদিশ

ইডি সূত্রে খবর, দুটি কোম্পানির ডিরেক্টর পদে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal)। একটি সংস্থা, নীর ডেভলপার এবং অন্য একটি সংস্থা এএনএম অ্যাগ্রোকেম। এই এএনএম অ্যাগ্রোকেমের অধীনে রয়েছে ভোলে ব্যোম রাইস মিল। এর পাশাপাশি বোলপুরের মকরমপুরে দুটি প্লট রয়েছে সুকন্যার নামে। বল্লভপুরেও রয়েছে চারটি প্লট। কালিকাপুর ও গয়েশপুর মিলিয়ে সুকন্যার নামে ২৮টি জমির নথির সন্ধান পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। নিউটাউনেও দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে সুকন্যার নামে।

প্রাথমিক স্কুল-শিক্ষিকার (Sukanya Mondal) ব্যাঙ্কে এত টাকা?

গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে যে ৩৫ পৃষ্ঠার চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই, তাতে দেখা গিয়েছিল সুকন্যার সম্পত্তিও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। প্রাথমিক শিক্ষিকা সুকন্যার (Sukanya Mondal) ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে বার্ষিক আয় ছিল ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। পরের বছর তা বেড়ে হয়েছিল সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা। তার পরের বছর ১০ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। কিন্তু ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে সুকন্যার আয় বাড়ে রকেট গতিতে। বেড়ে হয় ৪৯ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। তার পরের বছর আয় আরও ২ লক্ষ টাকা বাড়ে। ২০১৮-১৯ সালের আয় বৃদ্ধি তাঁর আগের রেকর্ড সব ভেঙে দেয়। ওই বছর আয়কর রিটার্নে সুকন্যা (Sukanya Mondal) তাঁর আয় দেখিয়েছিলেন ১ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। ১৯-২০ সালে তাঁর আয় ছিল প্রায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। আর ২০-২১-এ তাঁর আয় হয়েছে ৯২ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা। তবে এই হিসেবের সবই ছিল তাঁর ব্যক্তিগত আয়। তাঁর নামে থাকা চালকল বা সংস্থাগুলির আয়ের হিসাব আলাদা। এছাড়া তাঁর নামে ৩ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটও রয়েছে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles