মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তিনি তৃণমূলের (TMC) বীরভূম জেলা সভাপতি। এক সময় বীরভূমে তৃণমূলের যাবতীয় প্রচার-ফ্লেক্সে জ্বলজ্বল করত তাঁর হাসি মুখের ছবি। অথচ গরুপাচারকাণ্ডে (Cattle Smuggling Case) সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার হতেই ফ্লেক্স-ফেস্টুন থেকে হাওয়া হয়ে গিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে তারাপীঠ (Tarapith) ছয়লাপ তৃণমূলের ফ্লেক্সে। সেখানে জ্বলজ্বল করছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata) হাতজোড় করা ছবি। তাহলে কি কেষ্ট-‘কলঙ্ক’ ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব? উঠছে প্রশ্ন।
ফি বার কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে মেলা ভিড় হয় তারাপীঠে (Tarapith)। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কৌশলে প্রতিবার প্রচারের কাজটি সেরে ফেলে তৃণমূল। এবারও তাই করেছে। তবে ভক্তদের যেটা নজর কেড়েছে, সেটা হল অন্যান্যবার ফ্লেক্স-ফেস্টুনে উজ্জ্বল উপস্থিতি থাকে অনুব্রতর। এবার তিনি নেই। তাঁর বদলে তারা মায়ের ছবির পাশে রয়েছেন দলনেত্রী স্বয়ং!
তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, ফ্লেক্স-পরিকল্পনা যাঁর মস্তিষ্ক প্রসূত, তিনি তারাপীঠ-রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ৯ অক্টোবর রামপুরহাট কিষাণ মান্ডিতে আয়াস অঞ্চলের বুথ ভিত্তিক আলোচনার সময় মেজাজ হারিয়ে আশিসকে ‘অপদার্থ’ বলেছিলেন অনুব্রত। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ফ্লেক্স থেকে অনুব্রতকে মুছে দিয়ে এবার সেই ‘অপমানে’র বদলা নিলেন আশিস। তাঁদের মতে, অনুব্রতকাণ্ডে ফের যাতে দলের মুখ না পোড়ে, তাই তাঁকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে দলে।
আরও পড়ুন : সিবিআই হেফাজত শেষ, জেলেই গেলেন অনুব্রত
রাজনৈতিক মহলের অনুমান যে নিছক কষ্ট-কল্পনা নয়, তার প্রমাণ মিলেছে বৃহস্পতিবারই। এদিন ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বকে বৈঠকে ডেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অনুব্রত মণ্ডল নন, এবার থেকে বোলপুর লোকসভার অন্তর্গত পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের দেখভাল করবেন জেলা নেতৃত্বই। এদিনের বৈঠকে অভিষেকের সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিও।
আরও একটি কারণে তৃণমূলে অনুব্রতকে ছেঁটে ফেলা হতে পারে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। সেটি হল, সিবিআই হেফাজত থেকে অনুব্রত গিয়েছেন জেল হেফাজতে। তদন্ত শুরু করতে চলেছে ইডিও। যার অর্থ, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের কিছু প্রমাণ মিলেছে।
তাহলে কি তৃণমূলে অবসান হতে চলেছে অনুব্রত-যুগের?
+ There are no comments
Add yours