তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
ফের ফিরছে করোনার স্মৃতি! ইতিমধ্যেই কেরলের একাধিক জায়গায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর প্রশাসন। এবার অবশ্য নেপথ্যে নিপা ভাইরাস (Nipah Virus)! কিন্তু কেরলের পরে সংক্রমণের ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তাই উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ মহল।
কী এই নিপা ভাইরাস (Nipah Virus)?
বিশেষজ্ঞ মহল জানাচ্ছে, নিপা ভাইরাস এক ধরনের জুটোনিক ভাইরাস। প্রাণীর দেহ থেকেই মানুষের দেহে এই রোগ ছড়ায়। সাধারণত বাদুড় জাতীয় প্রাণীর থেকেই মানুষের দেহে এই ভাইরাস (Nipah Virus) হানা দেয়। তারপরে সংক্রমণ ছড়ায়।
কেরলের কী পরিস্থিতি?
সম্প্রতি, কেরলে নিপা ভাইরাস (Nipah Virus) দাপট বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যেই দু'জন নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কোঝিকোড় সহ একাধিক জায়গায় লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। সংক্রমণ ঠেকাতে ভিড় এড়ানো, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
কেন পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে আশঙ্কা থাকছে?
কেরলে নিপা ভাইরাসের দাপট বাড়তেই পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির রিপোর্ট জানাচ্ছে, কেরলের পরে যে কয়েকটি রাজ্যের নিপা নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি, তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এছাড়াও অসম, মেঘালয়, বিহার, তামিলনাড়ু নিয়েও বিশেষ সতর্কতা জরুরি বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির ওই রিপোর্ট।
সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নিপা হয় বাদুড় থেকে। বিশেষত তাল আর খেজুর গাছে এই বাদুড় থাকে। পশ্চিমবঙ্গ, কেরল সহ একাধিক রাজ্যে খেজুরের রস খাওয়ার রীতি রয়েছে। এমনকি খেজুর রস পচিয়ে নেশার পানীয় তৈরির রীতিও চালু আছে। আর সেখান থেকেই নিপা ভাইরাসের (Nipah Virus) প্রকোপ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকছে।
কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সর্দি-কাশি, জ্বরের মতোই উপসর্গ দেখা দেয় বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাই সর্দি-কাশি আর জ্বরকে এই মরশুমে সাধারণ সমস্যা বলে আর অবহেলা করা চলবে না। সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ হলেই নিজেকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। অর্থাৎ, আলাদা ঘরে আলাদা ভাবে থাকতে হবে। যাতে রোগ (Nipah Virus) সংক্রমণ না হয়। তাছাড়া, বাইরে গেলে মাস্ক পরা আবশ্যক বলেও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। বাইরে থেকে ফিরে পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজরদারি জরুরি। ঠিক মতো হাত পরিষ্কার করতে হবে। সাবান দিয়ে ঠিকমতো হাত ধোয়া দরকার। তাহলে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। তাছাড়া, ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে বিশেষজ্ঞ মহল। বিশেষত শিশুদের দিকে বাড়তি নজরদারি জরুরি বলে জানাচ্ছেন শিশুরোগ চিকিৎসকদের একাংশ। কারণ, অধিকাংশ শিশুর রোগ প্রতিরোধ শক্তি কম থাকে। তাই এই ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours