তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার অনেক আগেই হাতে এখন স্মার্টফোন! বন্ধুমহলে দেশ-বিদেশের ট্রেন্ডি ফ্যাশন থেকে জীবন যাপনের ধরন, সবটাই এখন হাতের মুঠোয়। বছর বছর বদলে যাচ্ছে 'স্মার্ট' দেখানোর সংজ্ঞা। কিন্তু এই সবকিছুর মধ্যেও থেকে যাচ্ছে ধূমপানের মতো অভ্যাস! বিশেষ করে কম বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে বাড়ছে এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস। আর তার জেরেই বিপদ বাড়ছে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দেশ জুড়ে মুখ ও গলার ক্যান্সারে (Cancer) আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষত কম বয়সিদের মধ্যেও এই সমস্যা বিশেষভাবে বাড়ছে। তাই উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল।
কতখানি বিপদ বাড়াচ্ছে মুখ ও গলার ক্যান্সার? (Cancer)
সাম্প্রতিক প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশ জুড়ে ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষত মুখ ও গলার ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। এ রাজ্যে মোট ক্যান্সার আক্রান্তের এক তৃতীয়াংশ মুখ ও গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত। প্রতি বছর দেশে প্রতি দশজনের মধ্যে ২ জন মুখ ও গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। আর সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, খুব কম বয়সিদের মধ্যেও এই সমস্যা বাড়ছে। বয়স কুড়ির কোঠায় যাওয়ার পরেই অনেকেই এই ধরনের সমস্যায় (Cancer) আক্রান্ত হচ্ছেন। এর ফলে তাঁর স্বাভাবিক জীবন যাপন সম্পূর্ণ ব্যাহত হচ্ছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগের বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
কেন কম বয়সিদের মধ্যে এই ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ছে?
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, কম বয়সিদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা বেড়েছে। আর তামাকজাত পণ্যের অভ্যাস বাড়াচ্ছে ক্যান্সারের দাপট। তাঁরা জানাচ্ছেন, সিগারেট কিংবা মদ্যপান করাকে বারো-তেরো বছরের অধিকাংশ ছেলেমেয়ে বন্ধুমহলে নিজেদের 'স্মার্টনেস' (Smartness) প্রকাশের মাধ্যম ভাবছে, আর তাতেই বাড়ছে বিপদ! স্মার্টনেস প্রকাশের মাধ্যম যে শরীরে ভয়ানক প্রভাব ফেলছে, তা অনেক সময়েই তারা টের পাচ্ছে না। অজান্তেই নেশার কবলে পড়ছে। পরবর্তীতে অনেক সময়েই অভ্যাস ছাড়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আর তার জেরেই বাড়ছে ক্যান্সারের মতো রোগের দাপট। তামাকের জেরে মুখ ও গলার ক্যান্সারের (Cancer) ঝুঁকি যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ফুসফুসের ক্যান্সারের দাপট। ধূমপানের পাশপাশি একাধিক পান মশলাতেও তামাক ব্যবহার করা হয়। কম বয়সিদের মধ্যে এই জাতীয় পণ্যের ব্যবহারও বাড়ছে। তাই বাড়ছে মুখ ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি।
কী পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল? (Cancer)
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, সচেতনতা জরুরি। ক্যান্সার রোগ নির্ণয়ে যেমন সচেতনতা জরুরি, তেমনি ক্যান্সারের প্রকোপ রুখতেও প্রয়োজন সচেতনতা। তাঁরা জানাচ্ছেন, স্কুল স্তর থেকে এই নিয়ে কর্মশালা প্রয়োজন। বিশেষত বয়ঃসন্ধিকালে থাকা ছেলেমেয়েদের আরও বেশি করে কাউন্সেলিং দরকার। ধূমপান যে স্মার্টনেস প্রকাশের মাধ্যম নয়, সে সম্পর্কে তাদের বোঝানো জরুরি। পাশপাশি প্রয়োজন নজরদারি। কম বয়সি পড়ুয়ারা কী ধরনের জিনিস কিনছে, সে নিয়ে পরিবারের সতর্কতা প্রয়োজন। পাশপাশি স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয়তা দরকার বলেও মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, স্কুল চত্বরের আশপাশে যাতে সিগারেট এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের দোকান না থাকে, বিজ্ঞাপন না থাকে, সে নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয়তা দরকার। তবেই এই রোগের দাপট আটকানো সহজ হবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours