Indian Air Force: মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানে ইজরায়েলি ‘র‌্যাম্পেজ’ ক্ষেপণাস্ত্র বসাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা, কতটা শক্তি বাড়বে?

MiG-29 UPG: সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানকে আরও ঘাতক করতে ‘রকস্’-কে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনা বায়ুসেনার...
WhatsApp_Image_2024-08-20_at_501.15_PM
WhatsApp_Image_2024-08-20_at_501.15_PM

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরও শক্তিশালী হওয়ার পথে ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) ‘মিগ-২৯ ইউপিজি’ (MiG-29 UPG) যুদ্ধবিমান। রুশ-নির্মিত এই ফাইটার জেটগুলির আয়ু বাড়াতে বড় আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এর আওতায় একদিকে যেমন এভিয়োনিক্স ও কন্ট্রোল সিস্টেম সহ বিমানের একাধিক সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার উন্নীত করা হবে, তেমনই এই যুদ্ধবিমানের অস্ত্রসম্ভারে ক্ষমতায় আনা হতে পারে বিরাট পরিবর্তন। সূত্রের খবর, মিগ-২৯ ইউপিজি’র (MiG-29 UPG) মারণ ক্ষমতা বাড়াতে ইজরায়েলের ঘাতক আকাশ থেকে ভূমি ‘র‌্যাম্পেজ’ ক্ষেপণাস্ত্রকে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনাচিন্তা চলছে।

আরও ভয়ানক মিগ-২৯ ইউপিজি...

যা জানা যাচ্ছে, প্রাথমিকভাবে ২৪টি মিগ-২৯ ইউপিজি (ভারতীয় নৌসেনা ব্যবহার করে মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানের ‘কে’ ভেরিয়েন্ট। বায়ুসেনা ব্যবহার করে এরই ‘ইউপিজি’ ভেরিয়েন্ট) যুদ্ধবিমানের আধুনিকীকরণ করা হবে। ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) অন্য যুদ্ধবিমানে ইজরায়েলের এই র‌্যাম্পেজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়, যার পোশাকি নাম হাই-স্পিড লো ড্র্যাগ (এইচএসএলডি) মার্ক-২। এই মিসাইলের পাল্লা ১৮০ কিলোমিটারেরও বেশি। এবার, মিগ-২৯ ইউপিজি-তে (MiG-29 UPG) এই অস্ত্র অন্তর্ভুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। বায়ুসেনা সূত্রে খবর, এর জন্য এই মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানে অতিরিক্ত হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ইনস্টল করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে— বিমানের দুপাশের ডানার বাইরের দিকের অংশের তলায় ক্ষেপণাস্ত্র ধরে রাখার নতুন র‌্যাক, অতিরিক্ত কেবল এবং রিগ। সেইসঙ্গে ঢোকাতে হবে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার। 

কেন ভারতের (Indian Air Force) পছন্দ র‌্যাম্পেজ?

র‌্যাম্পেজকে তৈরি করেছে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা ইজরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ। প্রথমদিকে শুধুমাত্র ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবেই তৈরি করা হয়েছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি মাল্টি-লঞ্চ রকেট সিস্টেম থেকে নিক্ষেপ করা হত। পরবর্তীকালে, এর আকাশ থেকে (বিমান থেকে) নিক্ষেপযোগ্য ভেরিয়েন্ট তৈরি করা হয়। ফলত, অন্যান্য ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় এই মিসাইলের উৎপাদন খরচ অনেকটাই কম। অর্থাৎ, কম অর্থ ব্যয় করেই ইজরায়েল থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি কিনতে পারে ভারত। নিজের টার্গেট বা লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করতে আইএনএস/জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি। পাশাপাশি, এর পাল্লা বড় হওয়ায় শত্রুপক্ষের অ্যান্টি-এয়ারক্র্যাফট বা বিমান-বিধ্বংসী সিস্টেমের রেঞ্জের মধ্যে বিমান আসবে না। সেটাও একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই মিসাইলের আরও একটি বড় ক্ষমতা হল— এটি শত্রুপক্ষের এয়ার-ডিফেন্স নেটওয়ার্ককে ভেদ করে উচ্চ-সুরক্ষিত লক্ষ্যবস্তু বা গুপ্ত বাঙ্কারকে ধ্বংস করতে ওস্তাদ।

একই অঙ্গে এত গুণ!

একবার লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত হয়ে গেলে, শেষ ধাপে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি নিজের গতি বাড়িয়ে নেয়। শুধু উচ্চ গতিই নয়, এই ক্ষেপণাস্ত্রের ম্যানুভরাবিলিটিও দুরন্ত। অর্থাৎ, শত্রুর ভূমি থেকে আকাশ বা আকাশ থেকে আকাশ অ্যান্টি-মিসাইল ক্ষেপণাস্ত্রকে হাওয়ায় কাটাতে এই ক্ষেপণাস্ত্র সিদ্ধহস্ত। সর্বোপরি, এর ট্র্যাজেক্টরি (নিক্ষেপ হওয়া থেকে নিশানায় আঘাত করার আগে পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্রের সমগ্র গতিপথ) ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মিশেল। এই সব কারণে, র‌্যাম্পেজকে চিহ্নিত করা বা ধ্বংস করা অত্যন্ত কঠিন। ভারতীয় নৌসেনা মিগ-২৯কে (MiG-29 UPG) যুদ্ধবিমানে এই র‌্যাম্পেজ মিসাইলকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। পাশাপাশি, ভারতীয় বায়ুসেনার (Indian Air Force) জাগুয়ার বম্বার এবং সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমানেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এই ইজরায়েলি-জাত মিসাইল।

সুখোই-৩০ অন-দ্য ‘রকস্’

এদিকে, সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানের জন্য ইজরায়েলের আরও একটি মিসাইল ‘রকস্’-কে অন্তর্ভুক্ত করার ভাবনাচিন্তা চালাচ্ছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এটি তৈরি করেছে ইজরায়েলের অন্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা রাফায়েল। এই ক্ষেপণাস্ত্রটিও বায়ুসেনার অন্য যুদ্ধবিমানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনায় (Indian Air Force) এই ক্ষেপণাস্ত্রের নাম ‘ক্রিস্টাল মেজ ২’। এটি ২৫০ কিমি পাল্লার আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। র‌্যাম্পেজের মতো ‘রকস্’ ক্ষেপণাস্ত্রও প্রথমদিকে ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। পরে, এর আকাশ থেকে নিক্ষেপযোগ্য ভেরিয়েন্ট তৈরি করা হয়, যাতে করে যুদ্ধবিমান থেকেও এটি নিক্ষেপ করা যায়। 

ভারতে তৈরি হবে ‘রকস্’!

সূত্রের খবর, এই ‘রকস্’ বা ক্রিস্টাল মেজ মিসাইলকে বিপুল পরিমাণে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে ভারতীয় বায়ুসেনা (Indian Air Force)। প্রথমে ইজরায়েল থেকে আমদানি করা হলেও, পরে প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে এই ক্ষেপণাস্ত্রকে এদেশেই উৎপাদন করতে তৎপর ভারত। এই ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা প্রশ্নাতীত। সম্প্রতি, ইরানের এস-৩০০ এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেমের অংশ হিসেবে মোতায়েন করা ৩০এন৬ই রেডারকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে এই ক্ষেপণাস্ত্রকেই ব্যবহার করেছিল ইজরায়েল। বলা বাহুল্য, রুশ-নির্মিত এস-৩০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমটি ইজরায়েলের র‌্যাম্পেজ ও ‘রকস্’-কে আটকাতেই বসিয়েছিল ইরান।

     

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles