মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আন্টার্কটিকা কখনও নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল ছিল! তার পশ্চিমভাগ দিয়ে বয়ে যেত বিশালাকর নদী। সম্প্রতি এমনই এক নদীর খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আনুমানিক ৪ কোটি বছরের পুরনো ওই নদী। ভূ-বিজ্ঞানী তথা সেডিমেন্টোলজিস্ট জোহান ক্লেজের নেতৃত্বে একটি দল বরফের নীচে চাপা পড়া নদীটি আবিষ্কার করেন। বরফের নীচেই সন্ধান মেলে নদীর গতিপথের। পলির উৎপত্তির সন্ধান করে, নদীর গতিপথের মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ট্রান্সান্টার্কটিক পর্বতমালা থেকে আমুন্ডসেন সাগর পর্যন্ত আনুমানিক প্রায় ১,৫০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত ছিল এই নদী।
আন্টার্কটিকার জলবায়ুতে পরিবর্তন
প্রায় ৩-৪ কোটি বছর আগে ইওসিন যুগের মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে আন্টার্কটিকার জলবায়ুতে এক নাটকীয় পরিবর্তন আসে। হঠাতই পৃথিবী ভিন্ন এক বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার সম্মুখীন হয়। কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা প্রবলভাবে বেড়ে যায়। এই গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে আন্টার্কটিকের নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলটি হিমায়িত মরুভূমিতে পরিণত হয়। সম্প্রতি আবিষ্কৃত নদীটি সেই জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে বরফের নীচে চাপা পড়ে যায়। ২০১৭ সালে, ক্লেজেস এবং তাঁর সহকর্মীরা পশ্চিম আন্টার্কটিক বরফের নীচে সমুদ্রতলের গভীরে ড্রিল করে পললের অন্তঃসার পুনরুদ্ধার করে ওই অঞ্চলের প্রাচীনত্বের হদিশ পান। ক্রমশ নজরে আসে সেই নদীটি।
আরও পড়ুন: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়ে কড়া বার্তা ভারতের, সীমান্ত সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী চিন
জীবাশ্ম পরীক্ষা করে মেলে প্রমাণ
গবেষকরা জানান এই নদীর নীচে পলির স্তরে থাকা জীবাশ্ম, ধূলিকণা এবং স্পোরগুলি পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন বছর আগে মধ্য-ক্রিটেসিয়াস যুগে এখনকার আন্টার্কটিকে নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ ছিল। আর উপরের স্তরগুলি, ইওসিন যুগের নিদর্শন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। গবেষকরা এখানকার পলির মধ্যে একটি স্বতন্ত্র, সূক্ষ্ম স্তরযুক্ত প্যাটার্ন খুঁজে পেয়েছেন। এই ধরনের স্ট্র্যাটিগ্রাফি একটি প্রাচীন নদী ব-দ্বীপের ইঙ্গিত দেয়, বলে দাবি গবেষকদের। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই নদীর জল ছিল মিষ্টি-পানের যোগ্য। নমুনায় সায়ানো-ব্যাকটেরিয়া অণুরও উপস্থিতি মিলেছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours