তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
শীতের শুরুতেই ফুসফুসের নানা সমস্যা দেখা দেয়। বয়স্ক থেকে শিশু, অনেকেই ফুসফুসের নানা রোগে (Pneumonia) আক্রান্ত হয়। কিন্তু চলতি বছরে শীতের শেষেও বিপদ কাটছে না। ফুসফুসের রোগে নাজেহাল অনেকেই। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আগাম সতর্কতা জরুরি। না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠবে। তাই প্রয়োজন বাড়তি সুরক্ষা।
কোন বিপদের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক মহল?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রার পারদ চড়তে শুরু করেছে। হঠাৎ করেই উধাও শীত। হালকা গরমের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বসন্তের এই সময়ে বাড়ছে নিউমোনিয়ার দাপট। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, সাধারণ শীতের শুরুতে কিংবা শীত বাড়লে ফুসফুসের এই সমস্যা (Pneumonia) দেখা দেয়। কিন্তু চলতি বছরে বসন্তেও দাপট দেখাচ্ছে নিউমোনিয়া। বিশেষত শিশুদের মধ্যে এই বিপদ আরও বেশি বলেই জানাচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। কলকাতার একাধিক সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট সহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে বিভিন্ন বয়সের শিশুরা। যাদের অধিকাংশের বয়স পাঁচের কম। ফুসফুসের জটিল সংক্রমণ থেকেই ফুসফুসের ভিতরে এক ধরনের জল জমছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যার নাম নিউমোনিয়া।
কেন শিশুদের জন্য বিপদ?
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, দেখা যাচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তি থাকা শিশুদের অধিকাংশের নিউমোনিক্কাল ভ্যাকসিন নেওয়া নেই। নিউমোনিয়া রুখতে সদ্যোজাতের নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন জরুরি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সচেতনতার অভাবে অভিভাবকেরা এই টিকাকরণে গুরুত্ব দেননি। যার জেরে ফুসফুসের সংক্রমণ বড় আকার নেয়। পাশপাশি বাতাসে দূষণের মাত্রা মারাত্মকভাবে বাড়ছে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ফুসফুসের যে কোনও রোগের অন্যতম কারণ বায়ুদূষণ। কলকাতা ও আশপাশের এলাকা একেবারেই পরিচ্ছন্ন নয়। বাতাস দূষিত। তাই ফুসফুসের সমস্যা বাড়ছে। যার খেসারত দিচ্ছে শিশুরা। তাছাড়া, হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে শরীরে একাধিক ভাইরাস ঘটিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যার প্রভাব ফুসফুসের উপরে পড়ছে (Pneumonia)। তাই বিপদ বাড়ছে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
কীভাবে সন্তানকে সুস্থ রাখবেন?
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো দ্রুত নিউমোক্কাল ভ্যাকসিন দেওয়া জরুরি। এই টিকা দেওয়া থাকলে নিউমোনিয়ার মতো জটিল রোগের বিরুদ্ধে লড়াই কিছুটা সহজ হয়। বড় বিপদ এড়ানো যায়। পাশপাশি আবহাওয়ার এই বদলে শিশুদের বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। কোনও ভাবেই ফ্যান কিংবা এসি চালানো যাবে না। হঠাৎ গরম মনে হলেও এসির হাওয়া বিপদ বাড়াবে। কারণ, এর জেরে ভাইরাসঘটিত একাধিক সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। খাবারের ক্ষেত্রেও সতর্কতা জরুরি। তরল খাবার অতিরিক্ত খাওয়ানো জরুরি। বেশি পরিমাণে জল খাওয়াতে হবে। কারণ, আবহাওয়ায় শুকনো ভাব দেখা দিচ্ছে। এর জেরে শরীরে জলের পরিমাণ যাতে না কমে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পাশপাশি তরমুজ, ড্রাগন ফ্রুটের মতো রসালো ফল এবং নানা প্রকার লেবু আরও বেশি পরিমাণে খাওয়ানো দরকার। যাতে, শরীরে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে ওঠে। তাতে ফুসফুসের সংক্রমণের (Pneumonia) ঝুঁকি কমবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours