তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে স্থূলতার সমস্যা। ভারতেও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এই রোগ (Obesity)। বিশেষত শিশুদের মধ্যে এই সমস্যা আরও বেশি। চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, আগামী কয়েক বছরেই শিশুদের মধ্যে মহামারির আকার নেবে স্থূলতা। তাই বাড়তি সতর্কতা জরুরি। কিন্তু স্থূলতা রুখতে সচেতনতা জরুরি। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, সন্তানের স্থূলতা রুখতে অনেক অভিভাবক ডায়েট করছেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই ডায়েট অবৈজ্ঞানিক। ফলে একাধিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এদিকে শারীরিক জটিলতাও দেখা গিয়েছে।
কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে? (Obesity)
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, স্থূলতা অধিকাংশ শিশুদের এখন অন্যতম সমস্যা। কিন্তু এই সমস্যা মোকাবিলা করতে অনেকেই আবার অপরিকল্পিত ডায়েট করছেন। বিশেষত অভিভাবকদের একাংশ শিশুদের জোর করে ডায়েট করাচ্ছেন। আর তাতেই বাড়ছে বিপত্তি।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দেহের চাহিদা ও প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডায়েট না করলেই সমস্যা হবে। পুষ্টিবিদদের একাংশ বলছেন, বহু অভিভাবক স্যালাড, চিয়া সিড, ডিমের সাদা অংশ শিশুদের খাওয়াচ্ছেন। অনেকেই স্থূলতা রুখতে শিশুদের ভাত কিংবা রুটির পরিমাণ একেবারেই কমিয়ে দিচ্ছেন। এর ফলে কিন্তু শিশুদের মারাত্মক এনার্জির ঘাটতি হচ্ছে। আবার শুধুমাত্র সিদ্ধ বা স্যালাড জাতীয় খাবারে অভ্যস্ত হওয়ার জেরে অন্য ধরনের খাবার একেবারেই হজম করার শক্তি পাচ্ছে না। এগুলো বাড়তি সমস্যা তৈরি করছে। অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চাদের দ্রুত ওজন কমে যাচ্ছে। এর ফলে তারা দুর্বল হয়ে পড়ছে। রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমছে। আবার অনেক সময়েই একেবারে ভিন্ন স্বাদের খাবার খাওয়ার জেরে তাদের খাওয়ার ইচ্ছে ও চাহিদা চলে যাচ্ছে। এর জেরে নানা রকমের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা হচ্ছে। শরীরের প্রয়োজন বুঝে ডায়েট না করলে একাধিক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। এর জেরে মানসিক অস্থিরতাও তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, এর ফলে শিশুদের মধ্যে অমনোযোগী মনোভাব বাড়বে। তাছাড়া, শিশুদের একাংশ ধৈর্য হারাবে। এগুলো স্থূলতা (Obesity) রুখলেও শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই সমস্যা তৈরি করবে।
কীভাবে স্থূলতা রুখতে হবে? (Obesity)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শিশু স্থূলতার সমস্যায় ভুগলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ জরুরি। কোনও অপরিকল্পিত ডায়েট নয়। বরং পুষ্টিবিদদের পরামর্শ মতোই খাবার দিতে হবে। তাঁরা জানাচ্ছেন, যে ধরনের খাবারে শিশু অভ্যস্ত, তাকে সেই খাবারের মধ্যেই ডায়েট করতে হবে। অর্থাৎ, যেসব শিশুরা ভাত, রুটি, মাছ, মাংসের পদ খেতে অভ্যস্থ, হঠাৎ তাকে শুধুই স্যালাড আর চিয়া সিড টক দই দিলে, তার শরীরে উপকার হবে না। বরং একাধিক শারীরিক ও মানসিক জটিলতা তৈরি হতে পারে। বরং সে কতখানি খাবে সে ব্যাপারে তাকে বোঝানো দরকার। পাশপাশি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, কোনোভাবেই জোর করে ডায়েট করানো চলবে না। বরং নানান থেরাপির মাধ্যমে শিশুকে বোঝাতে হবে কেন স্থূলতা রুখতে হবে। কেন তাকে ডায়েট করতে হচ্ছে। তবেই বেশি কার্যকর হবে। তবে প্রথম থেকেই অতিরিক্ত তেলেভাজা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা দরকার। তাতে স্থূলতার সমস্যা অনেকটাই কমানো যায়। আর বিশেষজ্ঞদের একাংশের পরামর্শ, শুধু ডায়েট নয়। শিশুদের স্থূলতার (Obesity) সমস্যা রুখতে শরীরচর্চা অত্যন্ত জরুরি। তাই নিয়মিত যাতে সন্তান শরীর চর্চা করে সে দিকেও অভিভাবকদের নজর দিতে হবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours