মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হালাল সার্টিফায়েড (Halal-Certified Products) পণ্যের বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। শনিবার সন্ধ্যায় যোগী সরকারের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানেই সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় যে হালাল সার্টিফিকেটযুক্ত যে কোনও রকমের পণ্যের উৎপাদন, সংরক্ষণ, বিতরণ এবং বিক্রি নিষিদ্ধ করা হল। প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশে এই অভিযোগ বারবার উঠেছে যে জাল নথি দেখিয়ে হালাল সার্টিফিকেটযুক্ত পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
জঙ্গি সংগঠনগুলিকে ফান্ডিং করা হত?
এই অভিযোগের ভিত্তিতে যোগী রাজ্যের পুলিশ একাধিক সংস্থা এবং ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করে। আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে যে হালাল সার্টিফায়েড (Halal-Certified Products) পণ্য বিক্রির মাধ্যমে টাকা সন্ত্রাসবাদীদের ফান্ডিং-এর কাজে ব্যবহার করা হত। দেশবিরোধী কার্যকলাপগুলির সঙ্গে এভাবেই জড়িয়ে পড়ছিলেন হালাল সার্টিফিকেটযুক্ত পণ্য বিক্রেতারা। জঙ্গিদের ফান্ডিং ও বেআইনি ব্যবসা বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ যোগী সরকার নিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। উত্তরপ্রদেশের থানাগুলিতে একাধিক ব্যবসায়ীর নামে এফআইআর দায়ের করা হয় এই মর্মে।
সাহসী সিদ্ধান্ত যোগী সরকারের
নিত্যপ্রয়োজনীয় যে কোনও ধরনের জিনিস তা সে দুগ্ধজাত সামগ্রী হোক অথবা মাংস কিংবা গায়ে মাখার সাবান, এই সবকিছুই হালাল সার্টিফিকেট (Halal-Certified Products) দিয়ে বিক্রি করা হতো। যোগী রাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে, টুথপেস্ট, প্রসাধনিক সামগ্রী, তেল এগুলো এই তালিকার বাইরে ছিল না এবং এর সবটাই করা হচ্ছিল জাল নথি দেখিয়ে। হালাল বিষয়টি ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই স্পর্শকাতর এই বিষয়টির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে যোগী আদিত্যনাথ সরকার যথেষ্ট সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বিজেপি যুব সংগঠন ভারতীয় যুব মোর্চার এক নেতা এ বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগ অনুযায়ী, কিছু কোম্পানি হালাল সার্টিফিকেটযুক্ত পণ্য বিক্রি করছে একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মধ্যে বিক্রি বাড়ানোর জন্য।
হালাল আসলে কি?
হালাল একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ জানতে হলে আমাদের বুঝতে হবে হারাম কী? ইসলামে বহুল প্রচলিত শব্দ হল হারাম। যে কোনও নিষিদ্ধ বস্তুকে বোঝাতে হারাম শব্দ ব্যবহার করা হয় ইসলামে। এটিও একটি আরবি শব্দ। হারাম শব্দের বিপরীত শব্দ হল হালাল। অর্থাৎ যা কিনা গ্রহণ করা যায় ইসলাম সম্মতভাবে। মূলত যে পশুর মাংস খাওয়া হয় ইসলামের রীতি অনুযায়ী সেটিকেই হালাল বলা যায়। আড়াই পোচে জবাই করা পশুর মাংস হল হালাল। অন্যদিকে যে পশুকে এক কোপে জবাই করা হয় তা হারাম হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, হালাল বিধি অনুযায়ী কোনও ধারালো ছুরি দিয়ে পশুর গলার শিরা বা শ্বাসনালীকে কেটে দেওয়া হয়। তবে কোনওভাবেই যেন মেরুদণ্ডের হার না কাটে। জবাই করার সময় পশুর মুখ থাকতে হবে মক্কার দিকে। এই বিধি না মেনে যদি কোনও পশুকে জবাই করা হয়, তাহলে সেটি হারাম হয়ে যাবে। ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী সেই মাংস মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ। পরবর্তীকালে হালাল শব্দটি ইসলামের ব্যবহারযোগ্য যে কোনও বস্তুর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হতে থাকে। হালাল সার্টিফায়েডযুক্ত (Halal-Certified Products) মানে তা ইসলামের নিয়ম রীতি মেনে তৈরি করা হয়েছে। খুব সরল কথায় বলতে গেলে ইসলামের আইন মেনে তৈরি করা হয়েছে যে কোনও জিনিসই হল হালাল। নিরামিষ খাবার, প্রসাধনিক ইত্যাদিও এখন হালাল সার্টিফিকেটযুক্ত হয়। ইসলামিক রীতি অনুযায়ী তা তৈরি হয়েছে কিনা, সেটা দেখার দায়িত্ব রয়েছে জমিয়ত-উলেমা-ই-মহারাষ্ট্র, জমিয়ত-উলেমায়ে-হিন্দ-হালাল ট্রাস্ট এই সমস্ত সংস্থাগুলির ওপর।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours