মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্য জুড়ে এখন জ্বরের দাপট। কেউ সাধারণ সর্দি-কাশিতে ভুগছেন, কেউ ভাইরাসঘটিত জ্বরে। আবার কোথাও ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েডের মতো রোগ দাপট দেখাচ্ছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা হোক কিংবা ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার মতো জটিল ভাইরাসঘটিত জ্বর, নাজেহাল আট থেকে আশি। কিন্তু এর মধ্যেই বিপদ বাড়াচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotics)। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, আগাম সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হবে। তাই প্রয়োজন সচেতনতার।
কেন অ্যান্টিবায়োটিক বিপদ বাড়াচ্ছে?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সামান্য সর্দি-কাশি হোক কিংবা কোনও সাধারণ ভাইরাসঘটিত জ্বর বা ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগ, অনেকেই বিশেষজ্ঞর পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন। যার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। অনেক রোগীই ইচ্ছেমতো ওষুধের দোকান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotics) কিনে খাচ্ছেন। সম্পূর্ণ কোর্স করছেন না। অর্থাৎ, যে অ্যান্টিবায়োটিক চারটি খাওয়া দরকার, নিজের অনভিজ্ঞতার জেরে দুটো খাওয়ার পরেই বন্ধ করে দিচ্ছেন। ফলে, শারীরিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
কোন ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, অ্যান্টিবায়োটিক সব রোগের নিরাময় নয়। একথা অধিকাংশ মানুষ বোঝেন না। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও জানানো হয়েছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া উচিত নয়। এতে রোগ কমে না। বরং ভোগান্তি বাড়ে। অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক যেমন রোগ কমাতে পারে না, তেমনি শরীরকে দুর্বল করে দেয়। যার জেরে হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়। রক্তচাপ ওঠানামা করে। সর্বোপরি স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হয়। অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ জ্বর আর সর্দি-কাশিতে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে পরবর্তীতে শ্বাসকষ্ট জাতীয় সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। ডেঙ্গির মতো মশাবাহিত রোগে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotics) ব্যবহার করলে একাধিক জটিলতা তৈরির ঝুঁকি হয় বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। লিভার, কিডনির মতো অঙ্গ বিকল হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
বিশেষত শিশুদের যথেষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলেই মনে করছেন অধিকাংশ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। তাঁরা জানাচ্ছেন, ঋতু পরিবর্তনের সময় শিশুদের একাধিকবার সর্দি-কাশি হয়। বারবার অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক দিলে, শিশুর রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যাবে। দীর্ঘ জীবনে নানা জটিল রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি কমবে। যা পরবর্তীতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স তৈরির ঝুঁকি থাকে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স হল, শরীরে আর কোনও অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। এমন পরিস্থিতিতে বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে কিংবা এমন কোনও জটিল রোগে আক্রান্ত হলে, যখন অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করা জরুরি, তখন শরীর সাড়া দেয় না। ফলে রোগীর প্রাণ সংশয় তৈরি হয়।
কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা?
চিকিৎসকদের পরামর্শ, সর্দি-কাশি হোক কিংবা ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো অসুখ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনই অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotics) খাওয়া চলবে না। ওষুধের দোকান থেকে ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বিপদ বাড়ায়। কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক কখন খেতে হবে, কতগুলো খেলে শরীরের জন্য ঠিক, তা একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলতে পারবেন। তাই বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিলে তবেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যেতে পারে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ
+ There are no comments
Add yours