মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গোষ্ঠী কোন্দলের পরিণতি যে কোন জায়গায় পৌঁছাতে পারে, তার বড় প্রমাণ হয়ে দাঁড়াল সিউড়ি পুরসভা। রাজ্যে যেখানে পঞ্চায়েতের সামান্য তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা হাওয়ায় উড়েছে, সেখানে এই পুরসভার যাবতীয় 'মায়া' ত্যাগ করলেন তৃণমূলের (TMC) চেয়ারম্যান। শুধু চেয়ারম্যান পদই নয়, একই সঙ্গে কাউন্সিলার পদও ছেড়ে দিলেন এই পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতিনিধি প্রণব কর ওরফে অঞ্জন কর। গত পুরসভা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি জয়লাভ করেছিলেন। তারপরেই অনুব্রত মণ্ডলের কাছের লোক হওয়ার সুবিধা নিয়ে তিনি চেয়ারম্যান পদে বিবেচিত হন। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। অনুব্রত মণ্ডলের হাত মাথার ওপরে থাকার জন্য কেউ তাঁর টিকি স্পর্শ করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমানে অনুব্রত মণ্ডল না থাকার কারণে তাঁকে পদত্যাগপত্র দিতে একপ্রকার বাধ্য করলেন অন্যান্য কাউন্সিলররা, এমনই ধারণা রাজনৈতিক মহলে।
কেন স্বেচ্ছায় অবসর? গুঞ্জন এলাকায়
দুর্নীতি নিয়ে বারবার বীরভূমের সিউড়ি পুরসভার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। পুরসভার টিকিট পাওয়ার জন্য রাজ্য নেতৃত্বের (TMC) কাছেও অনেকে দরবার করেছেন। কিন্তু এবারের ঘটনা ঠিক তার উল্টো। সোমবার এসডিওর কাছে তাঁর চেয়ারম্যান পদ এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলার দুটি পদ থেকেই ইস্তফাপত্র তুলে দেন প্রণব কর। অনেকেই বলছেন, পঞ্চায়েতের মধুভাণ্ড নিয়ে যখন রাজ্য জুড়ে কাড়াকাড়ি চলছে, দলের লোকই সহকর্মীকে খুন করছে, সেখানে এমন উলট-পুরাণ কেন? এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে লিখিতভাবে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন ১৩ জন কাউন্সিলার। ফলে বোঝাই যায়, স্বেচ্ছায় নয়, দলেরই একাংশের চাপে তাঁর এই 'স্বেচ্ছাবসর'।
কী বললেন বিদায়ী চেয়ারম্যান (TMC)?
এই বিষয়ে অঞ্জন কর (TMC) জানিয়েছেন পারিবারিক এবং শারীরিক সমস্যার কথা। এছাড়া তিনি বলেছেন পুরসভার আর্থিক সমস্যার কথাও। তাঁর পদত্যাগপত্র এসডিও গ্রহণ করেছেন বলেও সুত্র মারফত জানা যাচ্ছে। সিউড়ি পুরসভার ইতিহাসে একসঙ্গে দুটি পদ যথা চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলয়ার থেকে পদত্যাগ করার ঘটনা এই প্রথম।
তাঁর শেষ কথাটিও ইঙ্গিতপূর্ণ। অনুব্রত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনুব্রত মণ্ডল অনুব্রত মণ্ডলই। ওর বিকল্প কেউ হয় না।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours