তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
ডেঙ্গি সংক্রমণ চিন্তা বাড়াচ্ছে। গত কয়েক দিনে রাজ্যে সাত জন ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। আর তার পরেই বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য সচিব। কিন্তু বৈঠকে গতানুগতিক কিছু সিদ্ধান্ত ছাড়া, পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন কোনও দিশা নেই বলেই মনে করছে প্রশাসনের একাংশ।
কী সিদ্ধান্ত (Dengue) হল স্বাস্থ্য সচিবের বৈঠকে?
নদিয়া, কলকাত সহ একাধিক জেলায় ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্তের মৃত্যুর পরেই নড়েচড়ে বসছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম বৈঠকে বসেছিলেন। এই বৈঠকে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের সমস্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ এবং সরকারি হাসপাতালের সুপার। এছাড়াও একাধিক স্বাস্থ্য কর্তা এই বৈঠকে ছিলেন। এই বৈঠকে স্বাস্থ্য সচিব জানান, জ্বর নিয়ে হাসপাতালে কেউ এলেই, তার ডেঙ্গি পরীক্ষা করতে হবে। প্রত্যেক বছরের মতোই হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক চালু হবে। আক্রান্তের চিকিৎসার ক্ষেত্রে শয্যার যাতে সঙ্কট না হয়, তার আগাম ব্যবস্থা করতে হবে। অকারণ রেফার চলবে না। ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য বিসি রায় শিশু হাসপাতালকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশপাশি, রক্তের সঙ্কট আটকাতে প্লেটলেট সংক্রান্ত যে নির্দেশ স্বাস্থ্য দফতর দিয়েছিল, অর্থাৎ, দশ হাজারের কম হলে তবেই প্লেটলেট দেওয়া হবে, সেই নির্দেশ মেনে কাজ করতে হবে বলে এদিন ফের জানান স্বাস্থ্য সচিব।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে উত্তর চব্বিশ পরগনা, নদিয়া এবং হুগলি জেলার উপরে বাড়তি নজরদারির কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব জানিয়েছেন, নদিয়া ও উত্তর চব্বিশ পরগনা, এই দুই জেলার বর্ডার এলাকায় বাড়তি নজর দিতে হবে। সংক্রমণ রুখতে প্রয়োজনীয় মোকাবিলা করতে হবে।
কতখানি কার্যকরী এই সিদ্ধান্ত (Dengue)?
ডেঙ্গি মোকাবিলায় এই গতানুগতিক ফিভার ক্লিনিক পর্যাপ্ত নয় বলেই মনে করছে প্রশাসনের একাংশ। তারা জানাচ্ছে, প্রত্যেক বছর ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়। কিন্তু তারপরেও রোগী ভোগান্তি অব্যাহত থাকে। ডেঙ্গি (Dengue) রুখতে প্রত্যেক এলাকায় প্রশাসনের সক্রিয়তা জরুরি। যা হয় না। বর্ষার মরশুমে অধিকাংশ জায়গায় জল জমছে। রাস্তা, পার্ক, বসতি এলাকা অপরিচ্ছন্ন। আর তার জেরেই বাড়ছে মশার উৎপাত। মশা দমন করতে না পারলে ডেঙ্গি কমানো মুশকিল। আর এই কাজের জন্য স্বাস্থ্য ও পুর, পঞ্চায়েত দফতরের একসঙ্গে সক্রিয়তা জরুরি। যে সব জেলা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, অর্থাৎ, হুগলি, নদিয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, এই সব জেলার বাসিন্দারা নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানালেও কাজ হয় না। তাই এই সব এলাকায় মশার উপদ্রব বেশি। চিন্তা বাড়ায় ডেঙ্গি সংক্রমণ। তাছাড়া, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত আসে না। ফলে, একদিকে আক্রান্তের চিকিৎসা দেরিতে শুরু হয়, আরেকদিকে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই প্রশাসনের একাংশ মনে করছে, গতানুগতিক কিছু সিদ্ধান্ত নয়। ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রশাসনের হাতে কলমে কাজ করতে হবে। যার অভাব রয়েছে। তার জেরেই ভোগান্তি বাড়বে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours