মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রথম দর্শনে মনে হবে কোনও ইগলু! বোঝার বিন্দুমাত্র উপায় নেই যে এটি কোনও শৌচাগার। আর এই অভিনব নকশার টয়লেটের নির্মাণেও রয়েছে অভিনবত্বের ছোঁয়া। কারণ, এটি সুলভ-এর মতো আর পাঁচটা সাধারণ শৌচাগার নয়। এটি দেশের প্রথম কার্বন-নেগেটিভ টয়লেট। এই টয়লেট তৈরি করেছেন এক অষ্টাদশী। যার দৌলতে গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন ওই তরুণী। পাঞ্জাবের ১৮ বছরের তরুণী রুহানি ভার্মা ছোটবেলা থেকেই একজন পরিবেশপ্রেমী। প্লাস্টিক বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের (Environment Recycling) প্রতি ছোট থেকেই আগ্রহ তাঁর। এরপর রুহানি হাইস্কুলে ওঠামাত্রই পরিবেশ বান্ধব কিছু প্রজেক্ট করার বিষয়ে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন। তিনি তখন মনে করতেন, যেকোনও নির্মাণই পরিবেশের (Environment Recycling) উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে। জলের অপচয়, বায়ু দূষণ ইত্যাদি। তাঁর নিজের কথায়, “আমি ইউটিউবে ভিডিও দেখে এবং ইন্টারনেটে নিবন্ধ পড়ে পরিবেশ বান্ধব ইট নিয়ে গবেষণা শুরু করি। আমি তখন জানতে পারি ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক লোক বিভিন্ন প্রকল্পে এই ইটগুলি ব্যবহার করছে। কিন্তু এখানকার বেশিরভাগ লোকই এবিষয়ে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ। পরিবেশ বান্ধব প্রকল্প শুরু করতে, তিনি প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করার চিন্তা ভাবনা শুরু করেন। একাজে সাহায্য পান তাঁর পিতামাতা, এবং বিভিন্ন পেশাদারের।
কীভাবে বাস্তবায়িত হল এমন পরিবেশ বান্ধব প্রকল্প (Environment Recycling)
রুহানির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল শ্রী ধর রাও এর। শ্রী ধর রাও একজন ইঞ্জিনিয়ার। এই কাজে ব্যবহার করা হয় ফাউন্ড্রি ধুলো এবং প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তৈরি, সিলিকা প্লাস্টিক ব্লক বা SPB, একটি টেকসই এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য ইঁট। এরপর পরিবেশ বান্ধব এই প্রকল্পটির বাস্তবায়নের জন্য তৈরি করা হয় একটি টিম, ওই টিমের সদস্যরা হলেন শিখা ডুগার, রানা সরকার, জুনিয়র আর্কিটেক্ট হিসাবে মানবী দীক্ষিত এবং গ্রাফিক্স বিভাগে ছিলেন অভিষেক সিং। শুরু হয় কার্বন নেগেটিভ পরিবেশ বান্ধব টয়লেট ডিজাইনের কাজ। এরপর রুহানি বিভিন্ন জায়গা থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেন। এরপর ওই প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয় হয় ইঁট। আরও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম যেমন, এমএস অ্যাঙ্গেল, পিভিসি পাইপ, এইচডিএইচএমআর বোর্ড, ধাতু, ঢেউতোলা শীট, ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। যা সবই ছিল পুনর্ব্যবহারযোগ্য (Environment Recycling)। রুহানি জানান, এটি ছিল পুনর্ব্যবহারযোগ্য পাবলিক টয়লেট, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে চালু হয়। মোট ৪ লক্ষ প্লাস্টিক ব্যাগ দিয়ে এটা তৈরি করা হয়েছে।
রুহানি বলেন, পাবলিক টয়লেট সাধারণত নোংরা দেখায়। তাই আমরা ভেবেছিলাম এই টয়লেটগুলো যেন বাকি জায়গার মতো নোংরা হয়না। এবং গঠনমূলকভাবে এটাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে চেয়েছিলাম।
প্রকল্পের রুপায়নকারী সংস্থা বলে, এটি আমাদের প্রথম প্রকল্প ছিল, এটি তৈরি করতে আমাদের প্রায় দুই মাস সময় লেগেছিল, কিন্তু ভবিষ্যতের প্রকল্পগুলি আমরা দুই সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ করত পারব বলে মনে হয়। অমৃতসর বিমানবন্দরের এই কাঠামোটি কমপক্ষে পাঁচ বছর স্থায়ী হবে। রুহানি বলেন, এই প্রকল্পটি আমরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেছি। বর্তমানে এটি স্বচ্ছভারত মিশনের অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। আমরা এটিকে প্রতিনিয়ত দেখভাল করছি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
+ There are no comments
Add yours